৮ রাজ্যে হিন্দুদের সংখ্যালঘু স্বীকৃতি দেওয়া হোক, সুপ্রিম কোর্টে আবেদন বিজেপি নেতার
নিজস্ব প্রতিবেদন: ভারতের ৮টি অঙ্গরাজ্যে হিন্দুদের সংখ্যালঘুর স্বীকৃতি দেওয়া হোক, সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানালেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়। 'দৈনিক জাগরণ'-এর প্রতিবেদন অনুসারে, লক্ষদ্বীপ, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, মেঘালয়, জম্মু-কাশ্মীর, অরুণাচলপ্রদেশ, মণিপুর এবং পঞ্জাবে সংখ্যালঘু হওয়া সত্বেও হিন্দুরা প্রাপ্য সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে না। অথচ এইসব রাজ্যের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনজাতি 'সংখ্যালঘু হিন্দুদে'র প্রাপ্য সুযোগ আত্মসাত্ করছে বলে দাবি করেছেন আবেদনকারী।
অশ্বিনী উপাধ্যায় তাঁর আবেদনে শতকরা হিসাবে এই আটটি রাজ্যে হিন্দু জনসংখ্যার পরিসংখ্যান তুলে ধরেছেন।
লাক্ষাদ্বীপ- ২.৫ শতাংশ
মিজোরাম- ২.৭ শতাংশ
নাগাল্যান্ড- ৮.৭৫ শতাংশ
মেঘালয়- ১১.৫৩ শতাংশ
জম্মু ও কাশ্মীর- ২৮.৪৪ শতাংশ
অরুণাচলপ্রদেশ- ২৯ শতাংশ
মণিপুর- ৩১.৩৯ শতাংশ
পঞ্জাব- ৩৮.৪০ শতাংশ
এর পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যে মুসলিম জন সংখ্যার হিসাবও দেখিয়েছেন তিনি-
লক্ষদ্বীপ- ৯৬.২০ শতাংশ
জম্মু ও কাশ্মীর- ৬৮.৩০ শতাংশ
কেরল- ২৬.৬০ শতাংশ
পশ্চিমবঙ্গ- ২৭.৫ শতাংশ
উত্তরপ্রদেশ- ১৯.৩০ শতাংশ
বিহার- ১৮ শতাংশ
এই দুই ধরনের পরিসংখ্যান পেশ করে আবেদনকারীর দাবি, কিছু রাজ্যে হিন্দুরা আক্ষরিক অর্থে সংখ্যালঘু হওয়া সত্ত্বেও সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত সুবিধা ভোগ করতে পারেন না। বরং ওইসব রাজ্যে সংখ্যাগুরুরাই তাঁদের প্রাপ্য ভোগ করে থাকেন। অন্যদিকে, মুসলিমরা নির্দিষ্ট কিছু রাজ্যে সংখ্যালঘুর স্বীকৃতি পেয়ে তা পরিপূর্ণরূপে উপভোগ করেন। এই 'বৈষম্যের' ইতি চেয়েই তিনি আদালতের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠিত হলেও তার পরের বছর অর্থাত্ ১৯৯৩ সাল থেকে তা কার্যকারী হয়। আইন অনুযায়ী, (জম্মু-কাশ্মীর ছাড়া) সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকার সে রাজ্যের নির্দিষ্ট কোনও সম্প্রদায়কে 'সংখ্যালঘু' হিসাবে চিহ্নিত করলে তবেই তা 'সংখ্যালঘু'র স্বীকৃতি পায়। ইতিমধ্যে ইসলাম, খ্রিষ্টান, শিখ, বৌদ্ধ এবং পার্সি সম্প্রদায় 'সংখ্যালঘু' তকমা পেয়েছে। ২০১৪ সালে এই তালিকায় যুক্ত হয় জৈন ধর্মাবলম্বীরাও।
বিজেপির মূল চালিকা শক্তি হিসাবে আরএসএস সুপরিচিত। আর আরএসএসের ঘোষিত নীতি 'হিন্দু রাষ্ট্র নির্মাণ'। সেই প্রেক্ষিতে অশ্বিনী উপাধ্যায়ের মতো বিজেপি নেতার হিন্দুদের জন্য 'সংখ্যালঘু' তকমা দাবি করে দেশের শীর্ষ আদালতে এমন আবেদন সিঃসন্দেহে 'অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ' বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।