শিয়া-সুন্নি বিভেদ ভুলে ব্যক্তিগত উদ্যোগে পাকিস্তানে তৈরি হচ্ছে নতুন মসজিদ

পাকিস্তানে শিয়া ও সুন্নিদের সম্প্রদায়ের তিক্ততা নতুন নয়। নামাজ পড়ার ক্ষেত্রেও তাঁদের মসজিদ ভিন্ন। তবে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে গড়ে ওঠা অদৃশ্য বিভাজনরেখা ভাঙতে এবার উদ্যোগী হয়েছেন এক ব্যক্তি। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় তিনি তৈরি করছেন এমন এক মসজিদ যেখানে এক ছাতের নিচে প্রার্থনা করতে পারবেন শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মানুষ। অবাক হলেও, সব দিক খতিয়ে দেখে নির্মাণকাজে মত দিয়েছে প্রশাসনও।

Updated By: Nov 19, 2013, 11:07 AM IST

পাকিস্তানে শিয়া ও সুন্নিদের সম্প্রদায়ের তিক্ততা নতুন নয়। নামাজ পড়ার ক্ষেত্রেও তাঁদের মসজিদ ভিন্ন। তবে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে গড়ে ওঠা অদৃশ্য বিভাজনরেখা ভাঙতে এবার উদ্যোগী হয়েছেন এক ব্যক্তি। দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় তিনি তৈরি করছেন এমন এক মসজিদ যেখানে এক ছাতের নিচে প্রার্থনা করতে পারবেন শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের মানুষ। অবাক হলেও, সব দিক খতিয়ে দেখে নির্মাণকাজে মত দিয়েছে প্রশাসনও।
অধিকাংশ ইসলামিক রাষ্ট্রেই শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের প্রার্থনার জন্য থাকে পৃথক মসজিদ। পাকিস্তানও তার ব্যতিক্রম নয়। প্রায় সব শহরেই শিয়া ও সুন্নিদের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা মসজিদ। এর ফলে তাঁদের মধ্যে যেন গড়ে ওঠে এক অদৃশ্য বিভাজন। শিয়া ও সুন্নি সম্প্রদায়ের এই ভেদাভেদের প্রাচীর ভেঙে, তাঁদের মধ্যে ধর্মীয় ঐক্য গড়ে তুলতে এবার রাজধানী ইসলামাবাদের উত্তরপশ্চিমে গড়ে উঠছে এমন এক মসজিদ যেখানে একত্রে প্রার্থনা করতে পারবেন দুই ভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষ। নির্মাণকাজ শেষ না হলেও ইতিমধ্যেই সেখানে প্রার্থনা শুরু করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আর যে ব্যক্তি শিয়া ও সুন্নির মধ্যে সেতুবন্ধনের সূত্র হিসেবে এই মসজিদ নির্মাণে উদ্যোগী হয়েছেন, সেই জাহিদ ইকবাল মনে করেন, দেশে এধরনের প্রার্থনাস্থল এই প্রথম। তাঁর আশা, এরফলে হয়ত সাম্প্রদায়িক হানাহানি ও বিদ্বেষ কমবে পাকিস্তানে।
 তবে পাকিস্তানের মত রাষ্ট্রে যেখানে শিয়া ও সুন্নিদের জন্য মসজিদ নির্দিষ্ট করা থাকে, সেখানে এধরনের মসজিদ নির্মাণ খুবই কঠিন কাজ বলে মনে করছেন জাহিদ। ইসলামাবাদে কোনও ধর্মস্থান তৈরির আগে রাজধানী উন্নয়ন পর্ষদ বা ক্যাপিটল ডেভেলপমেন্ট অথরিটির অনুমতি নিতে হয়। প্রশাসনকে জানাতে হয় যে মসজিদটি কাদের জন্য....শিয়া না সুন্নিদের। এ ধরনের নির্মাণ কাজে কতোটা নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে, সবদিক খতিয়ে দেখে তবেই ছাড়পত্র দেয় প্রশাসন।  
 
শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে সম্প্রীতি বাড়াতে, মসজিদে থাকবে একটি পাঠাগার। সেখানে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কিত বহু বই রাখা থাকবে। এছাড়া ভিন্ন ধর্মের মানুষরা যাতে ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারেন, তারজন্য থাকবে আলোচনার ব্যবস্থা। পাকিস্তানে এধরণের মসজিদের বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
 
নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই মসজিদ সম্পর্কে মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হয়েছিল। ফলে শুরুতে বিক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছিল জাহিদ ইকবালদের। তবু তাঁরা থেমে থাকেন নি বা পিছিয়ে যাননি। সব প্রতিরোধ ও বাধা অতিক্রম করে, দেশে শান্তি স্থাপনে নিজেদের লক্ষে এগিয়ে চলেছেন জাহিদ ইকবালরা।
 

.