বিগ ব্যাংয়েই লুকিয়ে মহাবিশ্বের জন্মরহস্য, দক্ষিণ মেরুতে টেলিস্কোপে ধরা পড়ল আদি আলোর সংকেত, দাবি মার্কিন বিজ্ঞানীদের
মহাবিশ্বের সৃষ্টিতত্ত্বে নতুন আবিষ্কার। বিগ ব্যাংয়েই সৃষ্টি হয়েছিল এই মহাবিশ্বের। সেই মহুর্তের বিপুল বিস্ফোরণে সৃষ্টি হওয়া আলোর সংকেত ছড়িয়ে রয়েছে মহাকাশে। এই সম্ভাবনার কথা অনেকদিন ধরেই বলছিলেন বিজ্ঞানীরা। দক্ষিণ মেরুতে তাঁদের টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে সেই আদি আলোর সংকেত। দাবি করেছেন একদল মার্কিন বিজ্ঞানী। আর এখবরে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে গোটা দুনিয়ার বিজ্ঞানী মহলে।
মহাবিশ্বের সৃষ্টিতত্ত্বে নতুন আবিষ্কার। বিগ ব্যাংয়েই সৃষ্টি হয়েছিল এই মহাবিশ্বের। সেই মহুর্তের বিপুল বিস্ফোরণে সৃষ্টি হওয়া আলোর সংকেত ছড়িয়ে রয়েছে মহাকাশে। এই সম্ভাবনার কথা অনেকদিন ধরেই বলছিলেন বিজ্ঞানীরা। দক্ষিণ মেরুতে তাঁদের টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে সেই আদি আলোর সংকেত। দাবি করেছেন একদল মার্কিন বিজ্ঞানী। আর এখবরে রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে গোটা দুনিয়ার বিজ্ঞানী মহলে।
মহাবিশ্বের সৃষ্টি কীভাবে? এনিয়ে দীর্ঘকাল বিতর্ক চলেছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। একটা সময়ে পদার্থবিদ্যার জগত্ থেকে গবেষণা প্রসারিত হয় মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে। কারণ গ্রহ-তারকা-নীহারিকাপুঞ্জ- ছায়াপথসহ এই মহাবিশ্ব, মাধ্যাকর্ষণের আকর্ষণে আদৌ স্থিতিশীল নয়, বরং তা ক্রমপ্রসারমান। গবেষণায় একথা প্রমাণ করে দেন বিজ্ঞানী এডুইন হাবল। এরপরেই প্রশ্ন ওঠে, যদি মহাবিশ্ব ক্রমপ্রসারমান হয়, যদি মহাবিশ্বের বস্তুপুঞ্জ একে অপরের থেকে ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে, তাহলে অতীতে নিশ্চয়ই মহাবিশ্ব কোনও এক বিন্দুতে সংকুচিত ছিল। এভাবেই উপস্থাপিত হয় সংকোচন থেকে প্রসারণের ধারণা । এই যুক্তির ওপর ভিত্তি করে গবেষণা কেন্দ্রীভূত হয় মহাবিশ্বের এপর্যন্ত ফেলে আসা অতীতে। তারই পরিণতিতে উঠে আসে বিগ ব্যাং তত্ত্ব। বিজ্ঞানীদের তত্ত্ব, এখন থেকে আনুমানিক চোদ্দশ কোটি বছর আগে, এক সেকন্ডের কোটি কোটি ভগ্নাংশ সময়ে, ক্ষুদ্রতম এক বিন্দুতে ঘটেছিল বিপুল বিস্ফোরণ। সেই বিস্ফোরণ থেকে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মহাবিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে বিপুল বস্তুপুঞ্জ, যা ছিল প্রধানত গ্যাস ও আলোর সমষ্টি।
প্রসারণশীল সেই বস্তুপুঞ্জই, উত্তাপ কমে আসায়, ক্রমশ পরিণত হয় গ্রহ, তারা, নক্ষত্রসহ অগণিত ছায়াপথে। সূর্যকে কেন্দ্র করে পৃথিবীসহ নটি গ্রহের যে অস্তিত্ব, তারও সৃষ্টি সেই বিগ ব্যাং থেকেই। এরপর নানা বিতর্কের মধ্যে দিয়ে মহাবিশ্বের উত্পত্তি সম্পর্কে বিগ ব্যাং তত্ত্ব মেনে নিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই তত্ত্বের জোরালো প্রবক্তাদের মধ্যে অন্যতম স্টিফেন হকিং। মহাকাশ বিজ্ঞানীদের বক্তব্য ছিল, বিগ ব্যাংয়ের সময় যে আলো ও গ্যাসীয় পদার্থের সূষ্টি হয়েছিল, সেই আদি আলোকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব। বেশ কয়েক বছর ধরে মহাকশে সেই আলোর সন্ধানে নেমেছিলেন একদল মার্কিন মহাকাশ বিজ্ঞানী। দক্ষিণ মেরুতে টেলিস্কোপ বসিয়ে রাতের আকাশের একটা নির্দিষ্ট অংশ থেকে আসা আলোর তরঙ্গমালার ওপর নজর রাখছিলেন তাঁরা।
বাইসেপ টু নামে ওই প্রকল্পের বিজ্ঞানীদের দাবি, মহাকাশে ক্রমপ্রসারমান সেই আদি আলোর সংকেত তাঁরা খুঁজে পেয়েছেন রেডিও টেলিস্কোপের মাধ্যমে। এখবরে সাড়া পড়ে গেছে গোটা বিশ্বের বিজ্ঞানীমহলে। যেসব বিজ্ঞানী এই গবেষণার নথিপত্র দেখেছেন তাঁদের মত হল, আদি আলোর সংকেত খুঁজে পাওয়ার পক্ষে পেশ করা যুক্তিগুলি খুবই জোরালো। তাঁদের মতে, ছায়াপথ, নক্ষত্র, গ্রহ-তারকা, সবই সৃষ্টি হয়েছিল এক সেকেন্ডের কোটি কোটি ভগ্নাংশ সময়ে একটা ক্ষুদ্র বিন্দুতে বিপুল বস্তুপুঞ্জের বিস্ফোরণে, একথা যদি সত্যিই প্রমাণিত হয়, তাহলে সেটা হবে এক বিজ্ঞানের এক অভাবনীয় সাফল্য।