লকডাউনে ওরা করছে 'ফ্যামিলি প্ল্যানিং', ঝাড়গ্রাম গেলেই মিলবে প্রমাণ

করোনা গোটা বিশ্বের কাছে সমস্যা হলেও হর্ষিনী , এমু পাখিদের কাছে আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

Reported By: অধীর রায় | Updated By: May 8, 2020, 12:19 PM IST
লকডাউনে ওরা করছে 'ফ্যামিলি প্ল্যানিং', ঝাড়গ্রাম গেলেই মিলবে প্রমাণ

অধীর রায়: লকডাউনে পরিবার পরিকল্পনায় মেতে উঠেছে ওরা। মানুষের ভালোবাস, অথবা অত্যাচার দুটোর জেরেই নাজেহাল ছিল ওরা। নিজেদের ব্যক্তিগত  মুহূর্তগুলো হারিয়ে গিয়েছিল তাদের জীবন থেকে । করোনা গোটা বিশ্বের কাছে সমস্যা হলেও হর্ষিনী , এমু পাখিদের কাছে আশীর্বাদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ঝাড়গ্রাম জুওলজিক্যাল  পার্কের সদস্য চিতাবাঘ হর্ষিনী, এমুপাখি ,হরিণ এবং নীল গাই । করোনা মোকাবিলায় যখন গোটা বিশ্বের মাথায় হাত , তখন নিশ্চিন্তে ঝাড়গ্রাম জুওলজিক্যাল পার্কের সদস্যরা ব্যস্ত বংশবৃদ্ধিতে । এই পার্কের প্রায় সমস্ত
পরিবারেই নতুন সদস্যর আগমন হয়েছে। জুওলজিক্যাল পার্কে সারা বছর থাকে চরম ব্যস্ততা । সেই সঙ্গে দূষণ। সব মিলিয়ে দীর্ঘ চেষ্টার পরেও  এখানকার পশুপাখিদের বাচ্চা হয়নি ।


এই লকডাউনে তারাই এক বা একাধিক বাচ্চা প্রসব করেছে। চিতা বাঘ হর্ষিনী এক সন্তানের জন্ম দিয়েছে। তবে সে এতটাই সাবধনী যে ঘন ঘাসের ঝোঁপের আড়ালে লুকিয়ে রাখছে বাচ্চাটিকে । এমুপাখি  গত পাঁচ বছরে ডিম দেয়নি। এবার প্রথম দুটি বাচ্চা হয়েছে । এছাড়া ভিন রাজ্য এবং ভিন দেশের প্রচুর পাখি  Silver pheasant, golden pheasant, kalij pheasant, red jungle fowl প্রত্যেকের পরিবারেই নতুন সদস্য এসেছে। সংখ্যা ২ থেকে ১২। এছাড় হরিন, নীলগাইদের নতুন সদস্যদের জেরে তো  জায়গাই কম পড়ে যাচ্ছে । সব মিলিয়ে গোটা পার্ক জুড়েই এখন খুশির হাওয়া।
যারা কোলেপিঠে করে  ঝাড়গ্রামের জুওলজিক্যাল পার্কের সদস্যদের লালনপালন করেন সেইসব কর্মী থেকে  পার্কের সুপারভাইজারা বেজায় খুশি। ঝাড়গ্রামের DFO অর্থাৎ ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার বাসব রাজ হলৈচ্চ জানান , "   লকডাউনে আমাদের  সমস্যা হলেও লকডাউন পার্কের সমস্ত পশুপাখিদের নতুন জীবন দিয়েছে । এই প্রথম ঝাড়গ্রামের জুওলজিক্যাল পার্কে পশুপাখিদের বিড হল । এটা দারুন ব্যাপার। এখানে সাধারণত বিডের উপযুক্ত পরিবেশ আছে । কিন্তু পর্যটকদের তাড়নায় পশুপাখিরা বিড করার সুযোগ পেত না ।


কিন্তু লকডাউনে দূষণমুক্ত পরিবেশে এই  প্রথম সেই সুযোগ পেয়েছে পার্কের সমস্ত পশুপাখিগুলো ।"  পশু চিকিৎসক চঞ্চল দত্ত কয়েক কদম এগিয়ে জানালেন , " এখন ঝাড়গ্রামের এই পার্কে পশুপাখিদের  বসবাসের উপযুক্ত পরিবেশ । যেটা এদের বহুদিন বাঁচার রসদ জোগাবে । আর আগামীদিনে এই জুওলজিক্যাল পার্কটি পর্যটকদের কাছে নতুন আকর্ষণ হবে। "
 করোনা  গোটা দেশে আতঙ্ক তৈরি করেছে । লকডাউন ডেকে এনেছে সর্বনাশ । সেখানে ঝাড়গ্রামের জুওলজিক্যাল পার্কের সদস্যদের কাছে লকডাউন এনে দিয়েছে  নতুন করে বাঁচার রসদ ।

তথ্য সংগ্রহ- সৌরভ চৌধুরী

Tags:
.