Anubrata Mondal, Cattle Smuggling Case: সাঁড়াশি চাপে কেষ্ট! মেয়ের কোম্পানিকে নোটিস, 'দিদি'র রাইস মিলে হানা সিবিআইয়ের
Anubrata Mondal, Cattle Smuggling Case: সিবিআই তদন্তে উঠে এসেছে ২০১৫-র শেষ দিক থেকে প্রায় প্রত্যেকদিন বীরভূম জেলার কোনও না কোনও ব্যাংকে অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের অ্যাকাউন্টে নগদ জমা হয়েছে। যে নগদ জমার পরিমাণ প্রায় ১৫ কোটি টাকা। তদন্তকারীরা মনে করছেন, একমাত্র হাওয়ালা যোগ থাকলেই এই টাকা আসতে পারে!
প্রসেনজিৎ মালাকার ও বাসুদেব চট্টোপাধ্য়ায়: আরও বিপাকে কেষ্ট! সাঁড়াশির চাপে এবার অনুব্রত মণ্ডল। একদিকে অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ের সংস্থাকে নোটিস ধরালো সিবিআই। অন্যদিকে, অনুব্রত মণ্ডলের 'দিদি'র রাইস মিলে আবারও হানা দিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তকারীরা। অনুব্রত মণ্ডলের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের কোম্পানি এএনএম অ্যাগোরোকেম প্রাইভেট লিমিটেডকে নোটিস পাঠিয়েছে সিবিআই। সূত্রের খবর, আগামী সোমবারের মধ্যে কোম্পানির সমস্ত নথি জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, এই কোম্পানির ডিরেকটর দুজন। কেষ্ট-কন্যা সুকন্যা মণ্ডল ও কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ বিদ্যুৎ বরণ গাইন। দুজনকেই ১৬০ ধারায় নোটিস ধরানো হয়েছে।
এর পাশাপাশি এদিন ফের অনুব্রত মণ্ডল 'ঘনিষ্ঠ' এক 'দিদি'র রাইস মিলেও ফের হানা দিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। সিবিআই সূত্রে খবর, ওই রাইস মিলের সমস্ত নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছে। কবে ওই রাইস মিল চালু হয়েছিল? তা জানতে চাওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে মিলের সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে রাইস মিলের বর্তমান ম্যানেজারকে দেখা করতে আসার জন্য নোটিস দেওয়া হয়েছে। গোরুপাচার কাণ্ডে বেশ কিছু তথ্যের খোঁজ চালাচ্ছেন তদন্তকারীরা। যার জন্যই ফের মিলে হানা বলে সিবিআই সূত্রে খবর। অন্যদিকে, এদিন সিবিআই ক্যাম্পে এলেন নানুরের সাব রেজিস্ট্রি অফিসের এক আধিকারিক। জানা গিয়েছে, তাঁকে নানুর এলাকার বেশ কিছু জমির নথি নিয়ে আসতে বলা হয়েছে।
নোটিস ধরানো হয়েছে অনুব্রত মণ্ডলের ভাগ্নে রাজা ঘোষকেও। এই রাজা ঘোষ প্রাইমারি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ছিলেন। পাশাপাশি, তিনি ও তাঁর স্ত্রী বোলপুরে একটি রাইস মিলেরও মালিক। এছাড়া বোলপুরের বুকে রাজা ঘোষের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে। তদন্তে বার বার এই রাজা ঘোষের নাম উঠে আসছিল। সেই কারণেই তাঁকে জিজ্ঞেসবাদ করতে চেয়ে নোটিস দিল সিবিআই। বোলপুরের কাছারিপট্টি এলাকায় রাজা ঘোষের বাড়িতে গিয়ে তাঁর হাতেই নোটিসটি দেন সিবিআই আধিকারিকরা। পাশাপাশি, সূত্রের খবর, রাইস মিল সংক্রান্ত তথ্য জানার জন্য বীরভূম জেলা রাইস মিল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ভরত ঘোষকেও নোটিস দেওয়া হয়েছে।
সিবিআই সূত্রে খবর, তদন্তে উঠে এসেছে ২০১৫ সালের শেষের দিক থেকে প্রায় প্রত্যেকদিন বীরভূম জেলার কোনও না কোনও ব্যাংকে অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর মেয়ের অ্যাকাউন্টে নগদ জমা হয়েছে। কিন্তু কেষ্টর সেইরকম কোনও বড় ব্যবসা ছিল না, যেখানে থেকে প্রতিদিন বেশ মোটা অঙ্কের টাকা জমা হতে পারে! ২০১৫ সালের পর থেকে নগদ জমা হয়েছে প্রায় ১৫ কোটি টাকার মতো। বিভিন্ন ব্যাংকে জমা হওয়া এই নগদ কোথা থেকে এল? তদন্তকারীরা মনে করছেন, একমাত্র হাওয়ালা যোগ থাকলেই এই টাকা আসতে পারে! সিবিআই সূত্রে খবর, ব্যাংকে এই টাকা জমা হওয়ার পরই অনুব্রত মণ্ডল মেয়ে সুকন্যা ও নিজের নামে ফিক্সড ডিপোজিট করে। বিভিন্ন সম্পত্তি ও জমি ক্রয় করে।
আরও পড়ুন, Kalyani AIIMS Recruitment: বাবা-মেয়ের বয়ানে বিস্তর ফারাক, সিআইডি জেরায় পাল্টি খেলেন নীলাদ্রি!
কিন্তু অনুব্রত মণ্ডলকে সিবিআই যখনই এই বিপুল পরিমাণ নগদের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, 'এত নগদ টাকা আপনি কোথা থেকে পেলেন? গোরু পাচারের টাকা যদি না হয়ে থাকে তাহলে এই টাকা কোথা থেকে এল?' সেই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর এখনও পর্যন্ত সিবিআইকে দেননি অনুব্রত মণ্ডল। সিবিআই সূত্রে আরও জানা যাচ্ছে, একমাত্র ২০১৬ সালে নোটবন্দির সময় এই নগদ জমার বিষয়টি কিছু সময়ের জন্য বন্ধ ছিল। তারপর পুনরায় প্রায় প্রত্যেক দিন-ই নগদ জমা পড়া শুরু হয়। এই বিপুল টাকার-ই উৎস সন্ধানে সিবিআই। পাশাপাশি, টাকার উৎসের খোঁজ চালাচ্ছে ইডিও।