গডসে থেকে আফজল গুরু; কেন বক্সার জেলে তৈরি দড়িতেই দেওয়া হয়েছে ফাঁসি, জেনে নিন
অন্যান্য দড়ির থেকে অনেকটাই আলাদা এই দড়ি
নিজস্ব প্রতিবেদন: নির্ভয়াকাণ্ডে দোষী সাব্যস্ত ৪ জনের ফাঁসি হবে ২২ জানুয়ারি। এদিন সকাল ৭টায় ফাঁসি কার্যকর করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তিহাড় জেলকে। এর জন্য ইতিমধ্যেই তৈরি তিহাড় জেল। তৈরি রয়েছে ফাঁসির দড়িও। সেই দড়ি আসছে বিহারের বক্সার সেন্ট্রাল জেল থেকে।
আরও পড়ুন-পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, বনধে আটক সুজন-সপ্তর্ষি সহ ১৫০ বাম নেতা-কর্মী
মহাত্মা গান্ধীর হত্যাকারী নাথুরাম গডসের ফাঁসির দড়ি এসেছিল এই বক্সার জেল থেকেই। সংসদ ভবনে হামলায় সাজাপ্রাপ্ত আফজল গুরু, মুম্বই বিস্ফোরণে দোষী সাব্যস্ত ইয়াকুব মেমন ও মুম্বই হামলায় জড়িত পাক জঙ্গি আজমল কাসবের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছিল বক্সার জেলে তৈরি দড়িতেই।
কিন্তু কেন বক্সার জেলে তৈরি দড়িতেই ফাঁসি দেওয়া হয় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামীদের? ফাঁসির দড়ি তৈরির ক্ষেত্রে বক্সার জেলের আধিপত্ত বজায় রয়েছে সেই ১৮৮৪ সাল থেকেই। ১৮৮০ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পনি বাংলা থেকে উত্তরপ্রদেশ প্রর্যন্ত শাসন ক্ষমতা পাওয়ার ৪ বছর পরই ব্রিটেন থেকে ফাঁসির দড়ি তৈরি করার একটি মেশিন আনে। ব্রিটিশরা প্রধানত ফাঁসির দড়ি আনত ম্যানিলা থেকে। কারণ এর শক্তপোক্ত ফাঁস-সহ অন্যান্য গুণ। ১৮৮৪ সালের পর ব্রিটিশ সরকার কারখানা আইন বদল করে ভারতে ফাঁসির দড়ি তৈরির একতরফা অধিকার দেয় বক্সার জেলকে। এখনও পর্যন্ত এই দড়ি তৈরি করতে পারে না ভারতের আর কোনও জেল।
আরও পড়ুন-'শরীরে কাঠের দণ্ড ঢুকিয়ে' কলেজ ছাত্রের উপর যৌন নির্যাতন! ধৃত ২ যুবক
উল্লেখ্য অন্যান্য দড়ির থেকে অনেকটাই আলাদা এই দড়ি। এটি খুব নরম অথচ শক্ত। ফাঁসির দড়ি তৈরির জন্য ব্যবহার করা হয় বিশেষ এক ধরনের তন্তু বা সুতো। এর নাম জে-৩৪। এই ধরনের তন্তু চাষ হয় একমাত্র পঞ্জাবে। সেখান থেকে কাঁচা মাল আনা হয় বক্সার জেলে। একমাত্র ফাঁসির দড়ি তৈরির জন্যই ব্যবহার হয় ওই সুতো।
বক্সার জেলে ৪-৫ জন রয়েছেন যারা ওই দড়ি তৈরি করেন। এর জন্য জেলের অন্যান্য কয়েদিদের ট্রেনিং দেওয়া হয়। তবে তাদের মধ্যে কোনও মৃত্যু দন্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামী থাকেন না। ফাঁসির ক্ষেত্রে নিয়ম হল আসামীর মৃত্যু হলেও তার গলায় যেন কোনও দাগ না পড়ে। ফাঁসি হয়ে যাওয়ার পর পোস্ট মর্টেম হওয়ার সময় বিষয়টি লক্ষ রাখা হয়। এইসব বিশেষ গুণ রয়েছে বক্সার জেলে তৈরি ফাঁসির দড়িতে।