২৩ বছর পর বেকসুর খালাস! জেল থেকে বেরিয়ে মা-বাবার কবরে উপর ভেঙে পড়লেন আলি
মঙ্গলবার যে ৫ অভিযুক্তকে মুক্তি দেওয়া হয়, তাঁরা হলেন লতিফ আহমেদ বাজা (৪২), আলি ভট্ট (৪৮), মিরজা নাসির (৩৯), আবদুল গোনি (৫৭) এবং রায়েজ বেগ (৫৬
নিজস্ব প্রতিবেদন: এ যেন বাংলা সিনেমা ‘সবার উপরে’র প্রশান্ত চ্যাটার্জির জীবনের পুনরাবৃত্তি। ওই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ছবি বিশ্বাস। বারো বছর জেলে থাকার পর বেকসুর খালাস পান তিনি। তারপর তাঁর সেই রাশভারী গলায় কালজয়ী ডায়লগ, ‘ফিরিয়ে দাও আমার সেই বারোটা বছর’। সেই সুরই শোনা গেল জম্মু ও কাশ্মীরের আবদুল গোনির গলাতেও। তবে তাঁর ক্ষেত্রে ২৩টা বছর। গল্পের প্রশান্তের সঙ্গে জীবনের অনেক মিল বাস্তবের গোনিদের!
১৯৯৬-র সামলেতি বিস্ফোরণ মামলায় উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে ৫ অভিযুক্তকে মঙ্গলবার বেকসুর খালাস দেয় রাজস্থান হাইকোর্ট। কিন্তু তত দিনে তাঁদের যৌবনের ২৩টা বছর জেলের ভিতরেই কেটে গিয়েছে। আলি ভট্ট যখন ছাড়া পেলেন, তাঁর মা-বাবা গত হয়েছেন। এ দিন ছাড়া পেতেই শ্রীনগরে তাঁর বাড়িতে গিয়ে বাবা-মায়ের কবরে প্রণাম করেন। তিনি বলেন, ‘মাত্র ২৫ বছর বয়স ছিল, যখন আমি গ্রেফতার হই।’
আরও পড়ুন- ধোনিকে নিরাপত্তা দেবে না সেনা, উনি্ই দেশকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম: সেনাপ্রধান
মঙ্গলবার যে ৫ অভিযুক্তকে মুক্তি দেওয়া হয়, তাঁরা হলেন লতিফ আহমেদ বাজা (৪২), আলি ভট্ট (৪৮), মিরজা নাসির (৩৯), আবদুল গোনি (৫৭) এবং রায়েজ বেগ (৫৬)। বেগকে ১৯৯৭ সালের ৮ জুন গ্রেফতার করা হয়েছিল। বাকিদের ১৯৯৬ সালের ১৭ জুন এবং ২৭ জুলাই গ্রেফতার করা হয়। দিল্লি এবং আমেদাবাদের জেলে তাঁদের রাখা হয়। এই ২৩ বছরে একটা দিনের জন্যও প্যারোল বা জামিন পাননি তাঁরা। কিন্তু শেষমেশ হাইকোর্ট জানায়, ওই মামলার মূল অভিযুক্ত আব্দুল হামিদের সঙ্গে ওই পাঁচ জনের সম্পর্ক থাকার কোনও প্রমাণ মেলেনি। তাই তাঁদের বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেয় আদালত। প্রসঙ্গত, আগেই ফাঁসির সাজা রয়েছে আব্দুল হামিদের।
Accused of terrorism and jailed for 23 years, Ali Mohammad, a resident of Srinagar was not found guilty, along with four other. But he lost his youth, parents and almost 2-and-a-half decade of his life. First thing he did when he returned home
pic.twitter.com/nSXwR8PhFu— Aakash Hassan (@Aakashhassan) July 24, 2019
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে ২২ মে দৌসার সামলেতি গ্রামে জয়পুর-আগ্রা হাইওয়ের এক বাস স্ট্যান্ডে বিস্ফোরণ হয়। ওই ঘটনায় মৃত্যু হয় ১৪ জনের। আহত হন ৩৭ জন। মঙ্গলবার ওই পাঁচ জন ছাড়া পেয়ে জানান, তাঁরা কেউ কাউকে চেনেন না। রায়েজ বেগের বাড়ি আগ্রায়। গোনি জম্মু-কাশ্মীরের ডোডা জেলায় থাকেন। বাকিরা শ্রীনগরের বাসিন্দা। আবদুল বলেন, “আমার পরিবারের অনেকেই মারা গেছেন। মা, বাবা, কাকা আর নেই।” আবদুলের আক্ষেপ, ফিরিয়ে দিতে পারবে আমার সেই সময়।