আজ সমন্বয় কমিটির বৈঠকে থাকছেন মুখ্যমন্ত্রী

সবাইকে অবাক করে দিয়ে আজ ইউপিএ-র সমন্বয় কমিটির বৈঠক অংশ নিচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইউপিএ-র বৈঠক এড়িয়ে যাওয়া মুখ্যমন্ত্রী হঠাত্ কেন নিজে বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন, তা নিয়ে দিল্লিতে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিকমহলের ধারণা, কোনও গোপন এজেন্ডা নিয়েই ইউপিএ সমন্বয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলনেত্রী।

Updated By: Aug 22, 2012, 10:37 AM IST

সবাইকে অবাক করে দিয়ে আজ ইউপিএ-র সমন্বয় কমিটির বৈঠক অংশ নিচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইউপিএ-র বৈঠক এড়িয়ে যাওয়া মুখ্যমন্ত্রী হঠাত্ কেন নিজে বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন, তা নিয়ে দিল্লিতে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিকমহলের ধারণা, কোনও গোপন এজেন্ডা নিয়েই ইউপিএ সমন্বয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলনেত্রী।
এদিকে গতকাল রাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপির দুই নেতা শাহনাওয়াজ হুসেন ও রাজীব প্রতাপ রুডি। এফডিআই সহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের মধ্যে কথা হয়।
তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শেষ কবে ইউপিএ-র বৈঠকে উপস্থিত থেকেছেন, তা মনে করতে গেলে রাজনীতির হাঁড়ির খবর রাখা লোককেও বোধহয় গালে হাত দিয়ে বসতে হবে। অতীতে যখনই ইউপিএ সমন্বয় কমিটির বৈঠক হয়েছে, তখনই হয় মুকুল রায় নইলে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে ওই বৈঠকে অংশ নিতে দেখা গিয়েছে। প্রতিনিধি পাঠালেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বৈঠকে অংশ নেননি। গরহাজিরার সেই প্রথা ভেঙে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী এবার নিজে বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন। কেন এই ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে প্রথমেই উঠে এসেছে পরিস্থিতির প্রসঙ্গ।  প্রথমত, সংসদে এখন বাদল অধিবেশন চলছে। যতদূর খবর, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আপত্তি রয়েছে এমন কোনও বড় বিল চলতি অধিবেশনে আনা হচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, কোনও নির্বাচন প্রক্রিয়াও সামনে নেই। তৃতীয়ত, সমন্বয় কমিটির বৈঠকে নতুন কোনও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা হবে, এমন সম্ভাবনাও নেই।
 
খুচরো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগ, ফরোয়ার্ড ট্রেডিং সহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল নিয়ে সমন্বয় কমিটির বৈঠকে আলোচনা হতে পারে আজকের বৈঠকে। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মতামত জানাতে পারেন। কিন্তু এই সব ইস্যুতে আগেও ইউপিএ-র বৈঠক হয়েছে। কিন্তু তখন তৃণমূলনেত্রী নিজে হাজির হননি।  তাহলে এবার কেন? রাজনৈতিকমহলের অনুমান, বৈঠকে বেশ কিছু সম্ভাবনা উঠে আসতে পারে-
১. বিভিন্ন ইস্যুতে মমতার সঙ্গে কংগ্রেসের বড় দূরত্ব তৈরি হয়েছে। বৈঠকে যোগ দিয়ে কিছুটা হলেও সেই দূরত্ব ঘোচানোর চেষ্টা করতে পারেন তৃণমূলনেত্রী।
 ২. কংগ্রেসের সঙ্গে শরিকি সংঘাতে গেলেও, তিনি যে ইউপিএ-তেই থাকবেন, সেই বার্তাও দিতে পারেন মমতা
 ৩. রেলের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন খোদ অর্থমন্ত্রী। ইউপিএ-র বৈঠকে বিষয়টি উঠতে পারে। মুকুল রায় যেহেতু রেলমন্ত্রী, তাই তৃণমূলের কোনও বক্তব্য থাকতে পারে
 ৪. বাংলার জন্য সাড়ে তিনশো কোটি টাকা বাড়তি অর্থ বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র। আরও কয়েকটি আর্থিক প্যাকেজ ঝুলে রয়েছে। আর্থিক প্যাকেজ পেলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তিন বছরের সুদ মকুবের দাবিতে অনড়। ইউপিএ-র বৈঠকে ফের এই দাবি তুলতে পারেন তিনি
 ৫. কয়লার ব্লক বণ্টনে দুর্নীতি নিয়ে কংগ্রেস এখন কোণঠাসা। সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির আঙুল ওঠায় অস্বস্তি আরও তীব্র হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন বিলে আপত্তি জানিয়ে কংগ্রেসের ওপর চাপ বাড়াতে পারেন মমতা
সব মিলিয়ে রাজনৈতিকমহল একরকম নিশ্চিত, যে কিছু একটা গোপন এজেন্ডা নিয়েই এবার দিল্লি এসেছেন তৃণমূলনেত্রী। তবে সেটা কী, তা নিয়ে ধোঁয়াশা অব্যাহত। 
 

.