সৃজন কাণ্ডে নীতীশ-সুশীল মোদীর পদত্যাগ চেয়ে বিধানসভা তোলপাড় আরজেডির
ওয়েব ডেস্ক: সৃজন দুর্নীতি কাণ্ডে ১ হাজার কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদীর পদত্যাগ দাবি করে আজ বিহার বিধাসনভা উত্তাল করল বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বাধীন বিরোধী আরজেডি। লালুর দলের বিধায়কদের স্লোগানে মুখরিত বিধানসভা কক্ষে অধ্যক্ষ বিজয় কুমার চৌধুরিকে চাপ দেওয়া হয় সভা মুলতুবি করার জন্য। বিহারের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের পাশাপাশির তাঁর মা তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপত্নী রাবড়ি দেবী আবার 'সৃজন' কাণ্ডকে 'মেগা স্ক্যাম' বলে উল্লেখ করে নীতীশ-সুশীল জুটির দুর্নীতির বিরুদ্ধে গলা তুলেছেন এবং অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি করেছেন।
কিন্তু কী এই সৃজন দুর্নীতি?
ভাগলপুর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা 'দ্য সৃজন মহিলা বিকাশ সহযোগ সমিতি'র বিরুদ্ধে পিছিয়ে পড়া মেয়েদের ভোকেশনাল ট্রেনিং দেওয়ার নাম করে ভাগলপুরের সরকারি ট্রেজারি থেকে ১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাত্ করার অভিযোগ। আর এই অপরাধে বিভিন্ন রাজ্য সরকারি আধিকারিকদের পাশাপাশি ব্যাঙ্ককর্মীদেরও যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে প্রায় এক ডজন সন্দেহভাজন ব্যক্তি। এমনই একজন অভিযুক্ত হল মহেশ মন্ডল। ভাগলপুর ডিস্ট্রিক্ট ওয়েলফেয়ার ডিপার্টমেন্ট অ্যাকাউন্টট্যান্ট (নাজির) মহেশ মন্ডলকে সৃজন কাণ্ডে যুক্ত থাকার সন্দেহে গ্রেফতার করা হয় গত ১৩ই অগস্ট এবং তার দু'দিন পরে তার জেল হয়। গত রবিবার রাতে মহেশের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে মায়াগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়। আরজেডি শীর্ষ নেতৃত্ব তথা লালু পরিবারের অভিযোগ, সৃজন কাণ্ড কেবল ভাগলপুরেই সীমাবদ্ধ নয়। দুর্নীতির শাখাপ্রশাখা ছড়িয়েছে অন্যান্য জেলাতেও। আর তাই, নীতিশ কুমার ও সুশীল মোদীর পদত্যাগ দাবি করছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, দুর্নীতি ইস্যুতে বিদ্ধ হয়ে লালু পরিবার এখন কোণঠাসা। দুর্নীতির দোহাই দিয়েই মহাজোট ছিন্ন করে বিজেপির সমর্থন নিয়ে পৃথক সরকার গড়েছেন নীতীশ। স্বাভাবিকভাবেই নীতীশ সরকারকে এখন দুর্নীতির অভিযোগে বিদ্ধ কারার 'সুবর্ণ সুযোগ' হাতছাড়া করতে চান না যাদব কুলপতি লালুও। কিন্তু এখানেই প্রশ্ন উঠছে, যে দুর্নীতির অভিযোগ লালু তুলছেন নীতীশ সরকারের বিরুদ্ধে, তা তো একদিনে হয়নি, কিছুদিন আগেও মহাজোট সরকারে বড় শরিক ছিল লালুর আরজেডি এবং উপমুখ্যমন্ত্রীর পদে ছিলেন স্বয়ং লালুতনয় তেজস্বী। তাহলে লালু কীভাবে দায়িত্ব এড়াতে পারেন? তবে আপাতত এসব বিষয়কে আমল দিতে চাইছে না আরজেডি। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে নীতীশের 'তথাকথিত শুদ্ধ ভাবমূর্তির মুখোশ' খুলে দেওয়াই তাঁদের রাজনৈতিক অগ্রাধিকার, বলছে ওয়াকিবহাল মহল।