রসগোল্লা বাংলারই, ওড়িশাকে হারিয়ে সত্ত্ব পেল পশ্চিমবঙ্গ
২০১৫ সালের জুন মাসে ওড়িশা প্রথমবার আবেদন করে, রসগোল্লার অধিকার তাদের। এই খবর পৌছতেই, বাংলার তরফেও পাল্টা আবেদন করা হয়। কমসেকম দু বছরের মহাযুদ্ধের পর অবশেষে শেষ হাসি হাসল বাংলা। এবার সিলমোহর পড়ে গেল, রসগোল্লা বাংলারই। মিষ্টিমুখ তো তাই করতেই হচ্ছে!
নিজস্ব প্রতিনিধি: লড়াইয়ে জিতল বাংলাই। এবার রসগোল্লা নির্দ্বিধায় বলতেই পারে 'আমি বাংলার রসগোল্লা।' ওড়িশার সঙ্গে যুদ্ধে জিতে রসগোল্লার সত্ত্ব পেল পশ্চিমবঙ্গ। 'সেরার সেরা' এই মিষ্টির অধিকার নিয়ে বাংলা-ওড়িশা সম্পর্কে কম তিক্ততা তৈরি হয়নি! ২০১৫ সালের জুনে ওড়িশা প্রথমবার রসগোল্লার সত্ব দাবি করে আবেদন করে। এই খবর পৌঁছতেই পশ্চিমবঙ্গের তরফেও পাল্টা আবেদন করা হয়। প্রায় ২ বছরের দড়ি টানাটানির পর শেষ হাসি হাসল বাংলা। জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন(জিএ) শিলমোহর দিয়ে জানাল, রসগোল্লা বাংলারই। এই খবর পেয়েই সুদূর লন্ডন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় টুইটে জানান, মিষ্টি খবর। জিআই রসগোল্লাকে বাংলার স্বীকৃতি দেওয়ায় আমি ভীষণ খুশি।
Sweet news for us all. We are very happy and proud that #Bengal has been granted GI ( Geographical Indication) status for Rosogolla
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) November 14, 2017
আরও পড়ুন- চৈতন্য পরিকরের সাধনস্থলে সাড়ে ৪০০ বছরের প্রাচীন বৈষ্ণব মেলা শুরু
এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্রকুমার পাল বলেন, "রসগোল্লা বাঙালির নিজস্ব শিল্প। কখনওই ভাবা যায়নি এটা নিয়ে কোনও বিতর্ক হতে পারে। আমরা এ নিয়ে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করেছিলাম। দেখা গিয়েছে হাজার বছর ধরে রসগোল্লা জড়িত রয়েছে বাংলার সঙ্গে। সমস্ত বাঙালির মর্যাদার সঙ্গে জড়িত রসগোল্লা।"
ইতিহাসের পাতায় রসগোল্লাকে ১৮৬৮-তে নতুন ভাবে তুলে ধরেছিলেন নবীন চন্দ্র দাস। এরপর থেকে রসগোল্লা আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। কে সি দাস-র কর্ণধার ধীমান দাস বলেন, "এটা বাঙালির বিরাট জয়। আমাদের কাছে সমস্ত নথিপত্র আছে। পারিবারিক সব তথ্য আমরা রাজ্য সরকারের কাছে তুলে দিই। ধন্যবাদ জানাই আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকেও। প্রায় দু বছর লড়াইয়েতে এই জয় সত্যি আনন্দের।''
আরও পড়ুন- পশ্চিমবঙ্গ বিনিয়োগের সেরা গন্তব্য, লন্ডনে শিল্পপতিদের বার্তা মমতার
সাহিত্যিক নবনীতা দেবসেনের কথায়, "একটা সাংস্কৃতিক লড়াই চলছিল। শিল্পের কৃতিত্ব আদায়ের লড়াই চলছিল। পশ্চিমবঙ্গে রসগোল্লা জাতীয় নানা মিষ্টি রয়েছে, যা ওড়িশায় নেই। আবার ওড়িশায় ছানার নানা মিষ্টি রয়েছে, যা আমাদের নেই। ওড়িশার সঙ্গে সেসব নিয়ে আমাদের কোনও লড়াই নেই। তবে রসগোল্লার লড়াই জিতে ভীষণ ভাল লাগছে।"
রসগোল্লার সত্ব ওড়িশা দাবি করেছে শুনে আকাশ থেকে পড়লেন এক ক্রেতা। কেসি দাসের মিষ্টির দোকানে দাঁড়িয়ে তিনি বললেন, রসগোল্লা তো বরাবরই বাঙালির। খামখা ওড়িশা তার মালিকানা দাবি করতে গেল কেন?