'ছোট্ট টিপ, হালকা লিপস্টিক' নয়, মাস্ক ঢাকা মুখে চোখের মেকআপেই নজর কাড়তে চান তুহিনা
'ঘরে বাইরে আজ'-এর সেই বৃন্দা এবার পুজোয় ঠিক কী ধরনের সাজগোজ করছেন, কীভাবে, কোথা থেকে কেনাকাটা করছেন তা জানতে ইচ্ছা করে বৈকি।
রণিতা গোস্বামী : 'ঘরে বাইরে আজ'-এর 'বৃন্দা'কে শুধু নিখিলেশ বা সন্দীপ-এরই নয় দর্শকদেরও বেশ মনে ধরেছিল। বিশেষ করে যাঁদের একটু অন্যরকম সাজগোজ পছন্দ, তাঁদের বৃন্দার সাজ নজর কেড়েছিল। 'ঘরে বাইরে আজ'-এর সেই বৃন্দা এবার পুজোয় ঠিক কী ধরনের সাজগোজ করছেন, কীভাবে, কোথা থেকে কেনাকাটা করছেন তা জানতে ইচ্ছা করে বৈকি। পুজোর কেনাকাটা, পুজোর শপিং, সাজগোজ নিয়েই Zee ২৪ ঘণ্টা ডট কমের সঙ্গে কথা বললেন তুহিনা দাস।
তুহিনা : ২০২০-র পুজোতে যে ঠিক কী হতে চলেছে, সেটাই তো জানি না। এবারের পুজোটা অনেকটাই যেন ফিকে হয়ে যাওয়া একটা আনন্দ। তুমি, আমি যাঁরা বাঙালি তাঁদের সকলের কাছেই পুজোটা একটা অন্য আবেগ। তবে আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয় এবার পুজোয় ভিড়ভাট্টা একটু নিরাপত্তার কারণে এড়িয়ে চলাই ভালো। মহালয়ার দিনও অনেকে আক্রান্ত হয়েছে শুনলাম, তাই এবার পুজোটা না হয় একটু অন্যভাবে কাটালাম।
আরও পড়ুন-অনলাইনে কেনাকাটা করছি, তবে সামনে থেকে দেখে কেনার মজাটা মিস করছি : মনামী
প্রত্যেকবার তো মহালয়া, বিশ্বকর্মা পুজো শুরু হলেই একটা পুজো পুজো গন্ধ পাওয়া যায়, এবার যেন কিছুই নেই। ছোটবেলা থেকে বড় হওয়ার মধ্যে প্রত্যেকবার যেভাবে পুজো কাটিয়েছি, এবারটা আমার অন্তত তেমন কাটবে না। বাড়ির লোকজনকেও আমি বের হতে না করব। আমি ঠিক যেন পুজোর আবহটা অনুভব করতে পারছি না, তাই কোনও পরিকল্পনাও করিনি। পুজোয় যদি কিছু করি, তাহলে হয়ত বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া। আর আমার বাড়ি কাঁথিতে। পুজোয় আমি কিছুদিন কলকাতায়, কিছুদিন বাড়িতে কাটাই। সারাবছর তো বাড়ির সবার সঙ্গে দেখা হয়না। পুজোর সময় পরিবারের সবাই বাড়িতে আসে, আমি ওখানে যাই, কিছুদিন পরিবারের সকলের সঙ্গে কাটাই, একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া, গল্প, এটাই আমার কাছে পুজোর আনন্দ। এবারেও হয়ত তাই হবে।
পুজোর জন্য কিছু কেনাকাটা কি করেছো?
তুহিনা : এবার সেটাও সেভাবে হয়নি। কেনাকাটা বলতে অনলাইনে কিছু করেছি। তবে পুজোর শপিংয়ে একটা অন্যরকম ব্যাপার থাকে, সেটা হয়নি। অন্যবার সারাদিন ঘুরে, মলে গিয়ে, ট্রায়াল দিয়ে কেনাকাটা হয়। এবার সেসব হচ্ছে কোথায়! আর 'দময়ন্তী'র কাজটা নিয়েও একটু ব্যস্ত ছিলাম, ডাবিং শুরু হবে, তাই আর হয়ে ওঠেনি। পুজোটা আরও একটু কাছে এলে পরিস্থিতি বুঝে সব পরিকল্পনা করবো।
পুজোতে 'বৃন্দা'র মতো তুহিনারও কি শাড়ি পছন্দ, নাকি ওয়েস্টার্ন?
তুহিনা : বৃন্দা লুকটা পুরোটাই রীনাদির (অপর্ণা সেন) তৈরি। সেখানে উনি আমায় ওনার পছন্দ মতো সাজিয়েছিলেন। রীনাদির একটা ইউনিক ব্যাপার রয়েছে। যদিও আমি ব্যক্তিগতভাবে ওইরকম সাজগোজ করি না। তবে এবার পুজোয় 'ট্রাই' করা যেতেও পারে। ওই লুকটা আমার কাছে অদ্ভুত ভালোলাগার জায়গা। আর শাড়িটা পছন্দের। সারা বছর শ্যুটিং ছাড়া শাড়িটা পরা হয় না। তাই পুজোর দিনগুলো শাড়িটাই পছন্দ। গত বছরও আমি বেশিরভাগটা শাড়ি পরেছি। সেটাও আবার বন্ধুদের সঙ্গে পরিকল্পনা করে, তুই এটা পর, আমি ওটা পরছি, এভাবে (হাসি)।
অনলাইনেই অবশ্য আমি শাড়ি কিনিনি। যেগুলো কিনেছি সবই জুয়েলারি, বিভিন্ন প্রসাধনী, এইসব। আর বাকি কেনাকাটা কী করবো, সেসব পুজোটা আরেকটু এগিয়ে এলে পরিস্থতি বুঝে ঠিক করবো। তবে যে শুধু শাড়িই পরবো, এমনটা নয়, ওয়েস্টার্ন পরলেও পরতে পারি, যদি বৃষ্টি হয়, তাহলে তো ওয়েস্টার্নই ভরসা। দেখা যাক... (হাসি)
শাড়ির, ট্রাডিশনাল সাজে 'টিপ' খুবই গুরুত্বপূর্ণ, অনেকে আবার পছন্দ করেন না, তোমার কী পছন্দ?
তুহিনা : হ্যাঁ, শাড়ির সঙ্গে টিপটা ভালো লাগে। তবে কিছু শাড়ির সঙ্গে আবার টিপিক্যাল বাঙালি লুকটা যায় না। যদি আমি সাদা শাড়ি পরি, আর মুক্তর গয়না, তার সঙ্গে যেমন টিপ পরবো না। আবার কিছু শাড়ির সঙ্গে টিপ পরবো। আরেকটা বিষয় আমার আছে, যেটা হল অষ্টমী, নবমীর দিনগুলিতে সেরা পোশাকটা পরা। এটা ছোটবেলায় আমি করতাম। এখনও রয়ে গেছে।
আরও পড়ুন-বিয়ের পর প্রথম পুজো, মিথিলাকে কী উপহার দিলেন সৃজিত?
সিনেমায় আসার আগে বিভিন্ন গয়নার ব্র্য়ান্ড-এর বিজ্ঞাপনে তোমায় দেখা গিয়েছে, তুমি নিজে কীধরনের গয়না পরতে পছন্দ করো?
তুহিনা : আমি যে ভীষণ জুয়েলারি পরতে পছন্দ করি, তেমনটা নয়। ছোটবেলায় তো সব ড্রেসের সঙ্গে ম্যাচিং জুয়েলারি কিনতাম। তবে এখন জুয়েলারি খুব একটা পরি না। পরলেও হালকার উপর কিছু, ভারী গয়না আমার বিশেষ পছন্দ নয়। তবে শাড়ি পরলে তো গয়না পরতেই হয়। শাড়ির সঙ্গে জাঙ্ক জুয়েলারি বেশ ভালো মানায়। তবে গোল্ড জুয়েলারি আমার বিশেষ ভালো লাগে না, তার থেকে সিলভার, মুক্ত পছন্দ। তবে কখনও হীরের গয়না পরা গেলেও পরি (হাসি)।
এবারে পুজোয় লিপস্টিক লাগিয়েও তো কোনও লাভ নেই, সাজবে কীভাবে?
তুহিনা : মাস্কের জন্য লিপস্টিক লাগানোর ইচ্ছা তো পূরণ হবে না। (হাসি) আমি তাই চোখের মেকআপে একটু ফোকাস করতে চাই। চোখটাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে। একটু অন্যরকম আইশ্যাডো, মাশকারা-র উপর নজর দেবো। ব্লাশ অন-এর প্রতি আমার একটু ভালোলাগা আছে। শ্যুটিং না থাকলে আমি খুব একটা মেকআপ করি না। তবে ব্লাশ অনটা পছন্দ। মাস্কটা যেভাবে এবার সাজগোজ মাটি করে দিচ্ছে, তাই এগুলো করতেই হবে। (হাসি) বাকিটা না হয় সিক্রেট থাক, পুজো এলে দেখতে পাবে...