রাজ্য সরকারের অগ্রাধিকার নিয়ে প্রশ্ন

প্রায় দেড় মাস ধরে গোলায় পড়ে রয়েছে ধান। প্রতিশ্রুতি দিয়েও ধান কিনতে তেমন ভাবে উদ্যোগী হয়নি রাজ্য সরকার। ওদিকে মহাজনের তাগাদায় রাতের ঘুম ছুটেছে কৃষকদের। সুদে-আসলে অনেকেরই দেনা লাখের কোটা ছাড়িয়েছে। হাতে টাকা না-থাকায়, বোরো চাষও অনিশ্চিত। যার ফলস্বরূপ কৃষক আত্মহত্যা ক্রমশ নৈমিত্তিক হয়ে উঠেছে গোটা রাজ্যে।

Updated By: Jan 14, 2012, 09:10 PM IST

প্রায় দেড় মাস ধরে গোলায় পড়ে রয়েছে ধান। প্রতিশ্রুতি দিয়েও ধান কিনতে তেমন ভাবে উদ্যোগী হয়নি রাজ্য সরকার। ওদিকে মহাজনের তাগাদায় রাতের ঘুম ছুটেছে কৃষকদের। সুদে-আসলে অনেকেরই দেনা লাখের কোটা ছাড়িয়েছে। হাতে টাকা না-থাকায়, বোরো চাষও অনিশ্চিত। যার ফলস্বরূপ কৃষক আত্মহত্যা ক্রমশ নৈমিত্তিক হয়ে উঠেছে গোটা রাজ্যে। যা গত তিন দশকে অচেনাই ছিল রাজ্যবাসীর কাছে। তবে তাতেও হেলদোল নেই সরকারের। সৈকত উত্‍সবের উদ্বোধনে ব্যস্ত মুখ্যমন্ত্রীও চুপ বিষয়টি নিয়ে।

কৃষক আত্মহত্যার প্রসঙ্গ উঠলেই সবার আগে উঠে আসে মহারাষ্ট্রের বিদর্ভের নাম। এবার কি সেই তালিকায় উঠতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের নাম? গত ৮ মাসে ১৯ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন এরাজ্যে। কিন্তু এখনও নিরুত্তাপ সরকার। জেলায় জেলায় উত্সব উদ্বোধনে ব্যস্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাভাবিক ভাবেই সরকারের অগ্রাধিকার ক্ষেত্র নিয়ে প্রশ্ন উঠছে রাজ্যজুড়ে। বর্তমান সরকার বিধানসভায় ঘোষণা করেছিল, চলতি আর্থিক বছরে ২০ লক্ষ মেট্রিক টন ধান কিনবে তারা। এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৭০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে। উল্লেখ্য, গত বছর এই সময়ের মধ্যে ১৬ লক্ষ মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছিল। বেনফেড, কনফেড সহ বেশ কিছু স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে ধান কেনে সরকার। এই সমস্ত সংস্থা জানাচ্ছে, ধান কেনার টাকা নেই সরকারি কোষাগারে।
 
রাজ্যজুড়ে কৃষক আত্মহত্যার মিছিল ক্রমশ দীর্ঘতর হলেও, সরকার কিন্তু এখনও নিরুত্তাপ। জেলায় জেলায় বিভিন্ন উত্সব উদ্বোধন করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু দীঘায় সৈকত উত্সবের জন্যই দেড় কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ হয়েছে। দীর্ঘ জেলা সফরে কোথাও রাজ্যে কৃষক আত্মহত্যা নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি মুখ্যমন্ত্রী। জলপাইগুড়িতে চা-বাগানে অপুষ্টিতে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাতেও সরকার নিরুত্তাপ। শুধু মুখ্যমন্ত্রীই নন। সামগ্রিক ভাবেই সরকারের বক্তব্য, কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে না।
শুধু কৃষক আত্মহত্যাই নয়। ৭ মাস ধরে অবসরপ্রাপ্ত ৬ হাজার পরিবহণ কর্মীর পেনশন বন্ধ। প্রায় ২৮ হাজারের বেশি পরিবহণ কর্মীর বেতন অনিয়মিত হয়েছে। আর এর ঠিক উল্টো দিকে এই সময়েই রাজ্যের মন্ত্রীদের বেতন ৭ হাজার টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকারও বেশি হয়েছে। ফলে সরকারের অগ্রাধিকার নিয়ে ধন্দে রাজ্যবাসী।

.