ক্ষতির মুখে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে পর্ষদ

মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প সফল করতে গিয়ে বিপাকে রাজ্য বিদ্যুত্‍ পর্ষদ। প্রত্যেক বাড়িতে আলো পৌছতে গিয়ে বাড়ছে লোকসানের বহর। ক্ষতির মুখে পড়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে পর্ষদ।

Updated By: Sep 6, 2016, 04:14 PM IST
ক্ষতির মুখে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে পর্ষদ

ওয়েব ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প সফল করতে গিয়ে বিপাকে রাজ্য বিদ্যুত্‍ পর্ষদ। প্রত্যেক বাড়িতে আলো পৌছতে গিয়ে বাড়ছে লোকসানের বহর। ক্ষতির মুখে পড়ে বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে পর্ষদ।

পাহাড় থেকে জঙ্গলমহল। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রীর মূল লক্ষ্য ছিল উন্নয়ন। যার মধ্যে ছিল সবার ঘরে আলো পৌছে দেওয়ার মত কর্মসূচি। কিন্তু সেই প্রকল্প সফল করতে গিয়ে বোঝা বাড়ছে রাজ্য বিদ্যুত পর্যদের।

দেখা যাচ্ছে পর্ষদের অনেক গ্রাহকই প্রতি মাসে বিল দিতে চাইছেন না। বিদ্যুত্‍ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গেলে, ছড়াচ্ছে অশান্তি। বাড়ছে বিদ্যুত্‍ চুরিও। ঘটে যাচ্ছে ফরাক্কা কিম্বা মগরাহাটের মত ঘটনা। ফলে প্রতিমাসে কয়েক কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে রাজ্য বিদ্যুত্‍ পর্ষদের।

প্রায় সব জেলাতেই এই সমস্যার সামনে পড়তে হয়েছে রাজ্য বিদ্যুত্‍‍ পর্ষদকে। মুর্শিদাবাদে পর্যদের মোট গ্রাহক ১১ লক্ষ ৭৭ হাজার। বকেয়া বিল প্রায় ২২ কোটি টাকা। এর মধ্যে কেবল ফরাক্কাতেই বকেয়া ২ কোটি টাকা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ছবিটাও এক। মোট গ্রাহক ১২ লক্ষ ৮০ হাজার। বকেয়া প্রায় ৫৪ কোটি টাকা। মূলত ডায়মন্ডহারবার, কাকদ্বীপ, মগরাহাট অঞ্চলেই বকেয়া সবচেয়ে বেশী।

পশ্চিম মেদিনীপুরের ছবিটা আরও সাংঘাতিক। ঝাড়গ্রামের সাতটি ব্লকে পর্ষদের গ্রাহক সংখ্যা মোট ১ লক্ষ ৭৪ হাজার। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের অগাস্ট পর্যন্ত বকেয়া ছিল প্রায় ৭৫ কোটি টাকা।

তত্‍কালীন বিদ্যুত্‍মন্ত্রী মণীশ গুপ্ত বকেয়া আদায়ের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর উদ্যোগ সফল হয়নি। তখন অন্য পন্থা অবলম্বন করে বিদ্যুত্‍ পর্ষদ। ঠিক হয় ২০১৪ সালের অগাস্ট পর্যন্ত সমস্ত বকেয়া মাফ করে দেওয়া হবে। সেপ্টেম্বর থেকে নতুন বিল দিতে হবে। তাতেও সমস্যা মেটেনি। অভিযোগ,  বিদ্যুতের বিল মিটিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বাড়েনি। ফলে গত এক বছর ধরে ওই সাতটি ব্লকে বকেয়া দাঁড়িয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকা।

ঝাড়গ্রাম মহকুমায় বকেয়া সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন জেলার বিদ্যুত কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি। পরিস্থিতি যে উদ্বেগজনক, স্বীকার করে নিয়েছেন বিদ্যুত্‍মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও। তাঁর বক্তব্য, এভাবে বিদ্যুতের বিল বাকি রাখা বরদাস্ত করবে না পর্ষদ। এধরনের গ্রাহকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। লোকসান মেটাতে তাই বিদ্যুতের দাম বাড়াতে বাধ্য হচ্ছে পর্ষদ। যদিও তাতে সায় নেই অ্যাবেকার সভাপতি সঞ্জিত বিশ্বাসের। লোকসানের বহর কমিয়ে, কিভাবে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প কী ভাবে চালিয়ে যাবে  রাজ্য বিদ্যুত্‍ পর্ষদ, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

.