সন্দেহজনক ক্যানে মিলল না বিস্ফোরক, মাওবাদী পোস্টারে মুখ্যমন্ত্রীকে কটাক্ষ

আগামীকাল পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে জঙ্গলমহল সফর শুরু করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও সরকারি ভাবে সফর শুরু হচ্ছে ১৫ অক্টোবর।

Updated By: Oct 13, 2011, 09:21 PM IST

আগামীকাল পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে জঙ্গলমহল সফর শুরু করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও সরকারি ভাবে সফর শুরু হচ্ছে ১৫ অক্টোবর।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর দ্বিতীয় জঙ্গলমহল সফরের আগেই সরডিহা স্টেশনের কাছে আপ লাইনে সন্দেহজনক স্টিলের ক্যান ও মাওবাদী পোস্টার উদ্ধারের ঘটনায় কার্যত ঘুম ছুটল
প্রশাসনের। প্রাথমিক ভাবে পুলিসের আশঙ্কা ছিল স্টিলের ক্যানটি আদতে ল্যান্ডমাইন। কিন্তু পরে দেখা যায় সেটিতে কোনও বিস্ফোরক নেই।
পোস্টারে পুলিসি অভিযানে নিহত জনসাধারণের কমিটির নেতা উমাকান্ত মাহাতোর স্মরণে কয়েকটি কবিতা রয়েছে। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর জঙ্গলমহল সফর নিয়ে বিদ্রুপ করে বলা হয়েছে, ওই সফর ভাঁওতাবাজির । জঙ্গলমহলের মানুষকে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় না যাওয়ার জন্য হুঁশিয়ারিও দিয়েছে মাওবাদীরা। সরাসরি হুমকি দেওয়া হয়েছে শুভেন্দু অধিকারী,মুকুল রায় ও মদন মিত্রকে। মাওবাদীদের অভিযোগ, তৃণমূলের দখলদার 'ভৈরববাহিনী'কে মদত দিচ্ছেন এই তিন নেতা।
সন্দেহজনক ক্যান ও মাওবাদী পোস্টার উদ্ধারের ঘটনায় ওই লাইনে বন্ধ করে দেওয়া হয় ট্রেন চলাচল। খড়গপুরে আটকে দেওয়া হয়, হাওড়া-টাটানগর স্টিল এক্সপ্রেসকে। তাই নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয় যাত্রীদের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত রাত সোয়া এগারটা নাগাদ গন্তব্যস্থলের দিকে রওনা হয় স্টিল এক্সপ্রেস। নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হিসেবে একটি এসকর্ট ট্রেন সামনে রাখা হয়।
ক্যানটিতে কোনও বিস্ফোরক না মেলায় পরিষ্কার, নাশকতা নয় আতঙ্ক ছড়ানোর উদ্দেশ্যেই বৃহস্পতিবার সরডিহা স্টেশনের আপ লাইনে স্টিলের ক্যানটি রাখা হয়েছিল। যদিও পুলিস নিশ্চিত, ঘটনার পিছনে রয়েছে মাওবাদীরা। কারণ, শান্তি আলোচনার আগে জঙ্গলমহলে পুলিসি তত্‍পরতা পুরোপুরি বন্ধ করাতে চায় তারা। তাত্‍পর্যপূর্ণভাবে এদিনই সিপিআই (মাওবাদীর) রাজ্য সম্পাদক আকাশ রাজ্য সরকারের কাছে শান্তিপ্রক্রিয়া নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করার দাবি জানিয়েছিলেন। আকাশের বক্তব্য, পনেরো দিন পার হলেও এব্যাপারে সরকার কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তাঁর অভিযোগ, মধ্যস্ততাকারীদের উপস্থিতিতে শান্তি প্রস্তাব দেওয়া হলেও তার পর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের সশস্ত্র দুস্কৃতীদের আক্রমণ এবং যৌথবাহিনীর অভিযান বেড়েছে। অর্থাত্‍ অস্ত্র সংবরণ হচ্ছে একতরফাই। মুখ্যমন্ত্রীর জঙ্গলমহল সফরের
একদিন আগে মাওবাদী নেতা আকাশের এই বক্তব্য যথেষ্টই তাত্পর্যপূর্ণ। একদিকে শান্তিপ্রক্রিয়ায় সরকারের অবস্থান জানানোর জন্য চাপ দেওয়া অন্যদিকে ভবিষ্যতে এই প্রক্রিয়া ভেস্তে গেলে তার দায় সরকারের ওপর যাতে চাপানো যায় সেই রাস্তা পরিস্কার রাখা।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর জুলাই মাসে প্রথম জঙ্গলমহল সফরে এসে একগুচ্ছ নতুন প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, পরবর্তী পর্যায়ে সরেজমিনে এসে দেখবেন উন্নয়নের অগ্রগতি। কিন্তু জ্ঞানেশ্বরী নাশকতার 'এপিসেন্টারে' নতুন করে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়ে মাওবাদীরা চাপ বাড়াল সরকারের উপর।

.