নিখুঁত চিত্রনাট্যে জামিন অনুব্রতর
পুলিস-প্রশাসনের তৈরি করে দেওয়া নিখুঁত চিত্রনাট্য। সিউড়ি আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে গেলেন অনুব্রত মণ্ডল। বিরোধিতার ধার মাড়ালেন না সরকারি আইনজীবী। পাঁচ মিনিটেই দাঁও মারলেন বীরভূমের
কেষ্ট।
পুলিসকে বোমা মারার হুমকি। তারপরও লঘু ধারায় মামলা। আসলে অনুব্রতর জামিনের রাস্তা সহজ করে দেয় পুলিসই। কাঁটা ছিল একটাই। সেটা ভারতীয় দণ্ডবিধির পাঁচশো পাঁচের ওয়ান বি ধারা। জনমনে ভীতি
সঞ্চারের অভিযোগে যে ধারা জামিন-অযোগ্য। এই ধারা থাকায় জামিন পেতে অনুব্রতকে আদালতে হাজিরা দিতে হতোই। সিউড়ি আদালতের সিজেএম ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায় ৭ জুলাই অনুব্রতকে হাজির হওয়ার নির্দেশ
দেন। কিন্তু তার ন-দিন আগেই আদালতে হাজির হয়ে গেলেন কেষ্ট। আগাম হাজিরা। তাই, বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে অনুব্রতর আইনজীবী বলেন,
তিনটি ধারার মধ্যে দুটিই জামিনযোগ্য। পুলিস ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত রিপোর্ট দিয়েছে। তাই, তাঁর মক্কেলকে জামিন দেওয়া হোক। উত্তরে নীরব থেকে অনুব্রতর জামিনে কার্যত সম্মতি দেন সরকারি আইনজীবী। এরপর, পাঁচ
মিনিটের মধ্যেই অনুব্রতর জামিন মঞ্জুর করেন সিউড়ি আদালতের CJM ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায়। যে ভাবে বীরভূমের তৃণমূল সভাপতি জামিন পেলেন তাতে কয়েকটা প্রশ্ন উঠছেই।
আগামী ৭ জুলাই হাজিরার নির্দেশ থাকলেও কেন ৯ দিন আগে আদালতে উপস্থিত হলেন অনুব্রত?
বিচারব্যবস্থায় যাঁর পূর্ণ আস্থা, আদালতে পৌছতে তাঁর এত লুকোচুরি কেন? কেন পিছনের দরজা দিয়ে এজলাসে প্রবেশ?
এত গোপন হাজিরা। তবুও সরকারি আইনজীবী ও তদন্তকারী অফিসার তা জানলেন কী করে?
অনুব্রতর কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট এখনও কেন আদালতে জমা দিল না পুলিস?
পুলিস ধরেনি। দু-বছর দিব্যি ছিলেন অনুব্রত। আদালতের নির্দেশে গ্রেফতারের আশঙ্কা আর রইল না। বিধানসভা ভোটের আগে নিশ্চিন্তে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। রাখে পুলিস তো কেষ্টকে মারে কে!