Titanic Ship Wreck: টাইটানিকের বহু না বলা কথা জানাচ্ছে ধ্বংসাবশেষের প্রথম সম্পূর্ণ ৩ডি স্ক্যান
১৯১২ সালের এপ্রিল মাসে ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন থেকে নিউইয়র্ক যাওয়ার প্রথম সমুদ্রযাত্রায় একটি আইসবার্গের সঙ্গে সংঘর্ষের পরে টাইটানিক ডুবে যায়। এতে ১,৫০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: বুধবার প্রকাশিত হয়েছে টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের প্রথম পূর্ণ ৩ডি স্ক্যান। এক শতাব্দীরও আগে আটলান্টিক পাড়ি দেওয়ার সময় এর দুর্ভাগ্যজনক যাত্রা সম্পর্কে আরও বিশদ খবর প্রকাশ করতে পারে এই স্ক্যান এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
বিবিসি-র প্রকাশিত উচ্চ-রেজোলিউশনের ছবিগুলি, প্রায় ৪,০০০ মিটার (১৩,১০০ ফুট) গভীরতায় অবস্থিত ধ্বংসাবশেষটিকে পুনঃনির্মাণ করে এবং গভীর-সমুদ্র ম্যাপিং ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল।
১৯১২ সালের এপ্রিলে ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন থেকে নিউ ইয়র্ক যাওয়ার সময় এর প্রথম সমুদ্রযাত্রাতেই একটি আইসবার্গের সঙ্গে সংঘর্ষ বিলাসবহুল যাত্রীবাহী জাহাজটি ডুবে যায়। এই ঘটনায় ১,৫০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়।
১৯৮৫ সালে কানাডার উপকূল থেকে প্রায় ৬৫০ কিলোমিটার (৪০০ মাইল) দূরে প্রথম আবিষ্কৃত হওয়ার পর থেকে জাহাজের ধ্বংসাবশেষটি ব্যাপকভাবে অন্বেষণ করা হয়েছে। কিন্তু কোনও ক্যামেরা কখনই জাহাজটিকে সম্পূর্ণরূপে ক্যাপচার করতে সক্ষম হয়নি।
২০২২ সালে গভীর-সমুদ্র ম্যাপিং কোম্পানি ম্যাগেলান লিমিটেড এবং আটলান্টিক প্রোডাকশন এর পুনর্গঠন করেছিল। তারাই এই প্রকল্পটি সম্পর্কে একটি তথ্যচিত্র তৈরি করছে।
আরও পড়ুন: মিরাক্যল! আমাজনের জঙ্গলে ভাঙে বিমান, ২ সপ্তাহ পর জীবিত উদ্ধার ১১ মাসের খুদে সহ ৪ শিশু
একটি বিশেষজ্ঞ জাহাজের মাধ্যমে দূর থেকে নিয়ন্ত্রিত সাবমারসিবলগুলি আটলান্টিকের তলদেশে ধ্বংসাবশেষের সমীক্ষা করতে ২০০ ঘন্টারও বেশি সময় ব্যয় করেছে। স্ক্যানটি তৈরি করতে ৭০০,০০০ এরও বেশি ছবি নিয়েছে।
অভিযানের পরিকল্পনায় নেতৃত্বদানকারী ম্যাগেলানের গেরহার্ড সেফার্ট বিবিসিকে বলেন, ‘যাতে ধ্বংসাবশেষের ক্ষতি না হয়’ তাই তাদেরকে কোনও কিছু স্পর্শ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ‘অন্য চ্যালেঞ্জটি হল যে আপনাকে প্রতি বর্গ সেন্টিমিটার ম্যাপ করতে হবে। এমনকি ভালো না লাগার অংশগুলিও। যেমন ধ্বংসাবশেষের ক্ষেত্রে আপনাকে কাদা ম্যাপ করতে হবে, তবে এই সমস্ত আকর্ষণীয় বস্তুর মধ্যে দুরত্ব পূরণ করার জন্য আপনাকে এটি করতে হবে।
আরও পড়ুন: Old Hebrew Bible: একটি বাইবেল কত ডলারে বিক্রি হল শুনলে চোখ কপালে উঠবে!
চিত্রগুলিতে ধ্বংসাবশেষ এমনভাবে দেখা যাচ্ছে এর স্টার্ণ এবং বো আলাদা হয়ে ধ্বংসাবশেষে ঘেরা অবস্থায় পরে আছে। ছবিতে দেখে মনে হচ্ছে যেন এটিকে জল থেকে তোলা হয়েছে। এমনকি একটি প্রোপেলারের সিরিয়াল নম্বরের মতো ক্ষুদ্রতম বিবরণও এখানে প্রকাশ পেয়েছে।
জাহাজটি ধিরে ধিরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ইতিহাসবিদ এবং বিজ্ঞানীরা সময়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। নতুন স্ক্যানগুলি এই জাহাজের ঠিক কী হয়েছিল সে সম্পর্কে আরও আলোকপাত করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
পার্কস স্টিফেনসন, যিনি বহু বছর ধরে টাইটানিক নিয়ে গবেষণা করেছেন, তিনি জানিয়েছেন, ‘এখন আমরা অবশেষে মানুষের ব্যাখ্যা ছাড়াই টাইটানিক দেখতে পাচ্ছি, সরাসরি প্রমাণ এবং তথ্য থেকে প্রাপ্ত’।
স্টিফেনসন বলেছিলেন যে ধ্বংসাবশেষ থেকে ‘এখনও অনেক কিছু শেখার আছে’, যা ‘বিপর্যয়ের শেষে বেঁচে যাওয়া প্রত্যক্ষদর্শী’।
তিনি যোগ করেছেন, ‘এবং তার বলার মতো অনেক গল্প আছে’।