ভিনদেশে প্রথম ইদ পালন করে খুশি রোহিঙ্গারাও
প্রায় ৭ লক্ষ রোহিঙ্গা বৌদ্ধ প্রধান মায়ানমার থেকে পালিয়ে আস্তানা গেড়েছে বাংলাদেশের কক্সবাজার, রাঙামাটির মতো বিস্তৃণ পাহাড়ি এলাকায়। এ বারের টানা বৃষ্টিতে বিপর্যয়ে মুখে তাঁদের বাসস্থান
নিজস্ব প্রতিবেদন: ফি বছরের তুলনায় এবারের ইদ-উল ফিতর ভিন্ন মাত্রা নিয়ে এসেছে রোহিঙ্গাদের জীবনে। নিজেদের বসতবাড়ি ছেড়ে এই প্রথম ভিনদেশে ইদ উদজ্জাপন করছেন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের মানুষ। অভাব, অনটন, নিরাপত্তাহীনতা নিত্যসঙ্গী তাঁদের। এর মধ্যেও রেশনের চাল গম বিক্রি করে সন্তানের জন্য নতুন পোশাক কিনে এনেছেন বাবা। কেউ বা সিমাই রেঁধে নাতি-নাতনির মুখের মিষ্টি হাসি খোঁজার চেষ্টা করেছেন। শনিবার ইদ পালন করতে গিয়ে অধিকাংশ রোহিঙ্গাদের মুখে একটাই কথা শোনা গিয়েছে, “কোনও ভয়-ডর ছাড়াই এবারে খুশির ইদ পালন করতে পেরেছি।”
আরও পড়ুন- খুশির ইদে ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণ আফগানিস্তানে, মৃত কমপক্ষে ২০
প্রায় ৭ লক্ষ রোহিঙ্গা বৌদ্ধ প্রধান মায়ানমার থেকে পালিয়ে আস্তানা গেড়েছে বাংলাদেশের কক্সবাজার, রাঙামাটির মতো বিস্তৃণ পাহাড়ি এলাকায়। এ বারের টানা বৃষ্টিতে বিপর্যয়ে মুখে তাঁদের বাসস্থান। ধসে বাড়ি চাপা পড়ে ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের বেশি মানুষের। কিন্তু এমন বিষাদময় মেঘ সরিয়ে শনিবার সকাল সকাল মসজিদে ভিড় করতে দেখা যায় রোহিঙ্গাদের। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নমাজ পড়েন। পরস্পর আলিঙ্গন করে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। বছর পঁয়ত্রিশের রোহিঙ্গা শরণার্থী রহিম উদ্দিন বলেন, “ঈশ্বরকে ধন্যবাদ! অন্তত এইখানে শান্তিপূর্ণভাবে ইদ পালন করতে পেরে। কোনও বাধা-বিপত্তি ছাড়াই মসজিদে গিয়ে নমাজ পড়েছি।”
আরও পড়ুন- অজগরের পেটে আস্ত মানুষ!
তবে, এ দিন বেশ কিছু ইস্যু নিয়েও প্রতিবাদ করতে দেখা যায় রোহিঙ্গাদের একাংশকে। নাগরিকত্ব, ঘরে ফেরার আর্জি নিয়ে মায়নামার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি, রাষ্ট্রসংঘ থেকে নিরাপত্তা দাবির মতো বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে প্রতিবাদ করেন রোহিঙ্গারা। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসংঘের জেনারেল সেক্রিটারি অ্যান্তেনিও গাটার্স বলেন, প্রায় দেড়লক্ষ শরণার্থী বন্যাপ্রবণ এলাকায় বসবাস করছেন। তাঁদের অন্যত্র সরাতে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা করেছে রাষ্ট্রসংঘ। তবে, শনিবার রোহিঙ্গাদের এমন সঙ্কট ও বিপদসঙ্কুল পরিস্থিতেও খুশির মহল তৈরি করেছে ইদ। অশীতিপর হুল মেহের তাঁর ছেলে এবং নাতি-নাতির জন্য সিমাই তৈরি করে অপেক্ষা করছিলেন। মেহের বলেন, “যতটুকু সামর্থ্য পেরেছি। নাতি-নাতনিদের খুশি করতে পেরে আমিও ভীষণ খুশি।”