গিলানির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন পাক সুপ্রিম কোর্টের
পাক রাজনীতিতে গভীর সঙ্কট। আদালত অবমাননার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত পাক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করল পাক সুপ্রিম কোর্ট।
পাক রাজনীতিতে গভীর সঙ্কট। আদালত অবমাননার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত পাক প্রধানমন্ত্রী
ইউসুফ রাজা গিলানির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করল পাক সুপ্রিম
কোর্ট। সোমবার পাক শীর্ষ আদালতের ৭ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ
জানায়, পাক প্রেসডিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাগুলি
চালু করার জন্য ২ বছর সময় দেওয়া হয়েছিল গিলানিকে। কিন্তু তিনি সেই আদেশ
অবজ্ঞা করেছেন।
আদালত অবমাননার জন্য পাক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এদিন চার্জ গঠন করে সুপ্রিম কোর্ট। সেই চার্জশিটে স্বাক্ষর করেন ডিভিশন বেঞ্চের ৭ সদস্য। গিলানির বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠনের পর বিচারপতি গিলানিকে জিজ্ঞাসা করেন, আদালতের রায়ের বিষয়ে তাঁর কিছু বলার আছে কি না। পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ''তিনি কোনও ভুল করেননি।'' এবং জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা শুরুর জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়ে সুইস ব্যাঙ্ককে চিঠি লিখবেন না বলেও জানিয়ে দেন তিনি।
এই মামলার পরবর্তী শুনানি ২৭ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছে পাক সুপ্রিম কোর্ট। আদালত অবমাননার অভিযোগে প্রধানমন্ত্রীর পদ খোয়ানোর পাশাপাশি কমপক্ষে ৬ মাস হাজতবাসও হতে পারে গিলানির। এর আগে পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাগুলি ফের চালু করে সুইস ব্যাঙ্ককে চিঠি দিয়ে যাবতীয় দুর্নীতির তথ্য আনাতে গিলানিকে নির্দেশ দিয়েছিল পাক সুপ্রিম কোর্ট। গত ১৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে হাজির হয়ে গিলানি জানান, পাক সংবিধানে প্রেসিডেন্টের বিশেষ রক্ষাকবচ রয়েছে। কিন্তু গিলানির এই বক্তব্যে একেবারেই সন্তুষ্ট হয়নি সুপ্রিম কোর্ট।
পাক প্রধানমন্ত্রীকে আদালত অবমাননায় অভিযুক্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে ২ ফেব্রুয়ারি সমন জারি করে পাক শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের সমনের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবেদন জানান পাক প্রধানমন্ত্রী। গত শুক্রবার গিলানির আবেদন খারিজ করে দেয় সে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের ৮ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ। ২০০৯-এর ডিসেম্বর মাস থেকেই জারদারির বিরুদ্ধে নতুন করে দুর্নীতির মামলা শুরুর জন্য পাক সরকারকে চাপ দিচ্ছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু, সেই চাপকে কোন রকম আমল দিতে রাজি ছিল না ক্ষমতাসীন পিপিপি (পাকিস্তান পিপলস্ পার্টি)। দলের যুক্তি ছিল, নতুন করে মামলা শুরু করলে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা খর্ব করার মতো সাংবিধানিক সংশোধনীর পথে হাঁটতে শুরু করার চেষ্টা করবে সুপ্রিম কোর্ট।
কিন্তু, শেষপর্যন্ত সেই দুর্নীতি মামলাই বিপাকে ফেলল গিলানি প্রশাসনকে। শনিবার এক জনসভায় পাক প্রধানমন্ত্রী জানান, দোষী প্রমাণিত হলে পাকিস্তানের স্বার্থে নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন তিনি। গিলানি বলেন, 'আমরা ক্ষমতায় থাকি বা না থাকি, আমাদের লক্ষ্য পাকিস্তানের মানুষের সেবা। দলীয় কর্মীদের আত্মবিসর্জন দেওয়ার দিন শেষ। এখন নেতাদেরআত্মবিসর্জনের দিন এসেছে। আমরা সেই সরকার চাই না, যা মানুষের সমর্থন পায় না।' শেষ পর্যন্ত নিজের অবস্থানেই অনড় রইলেন পাক প্রধানমন্ত্রী।