জঙ্গলে নয়, জাপানে পেঁচার ঠিকানা কাফে

হেব্বি জনপ্রিয় পোষ্য-কাফে। কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে পেঁচার সঙ্গে খেলা, খুনসুটি। পেঁচার সঙ্গে ভাব জমাতে তাই ভিড় উপচে পড়ে এই কাফেগুলিতে। কিন্তু প্রদীপের নিচেই অন্ধকার। পেঁচার পায়ে বেড়ি। পোষ্য-কাফে বন্ধ করতে তাই সোচ্চার সমাজকর্মীরা।

Updated By: Mar 17, 2017, 11:17 PM IST
জঙ্গলে নয়, জাপানে পেঁচার ঠিকানা কাফে

ওয়েব ডেস্ক: হেব্বি জনপ্রিয় পোষ্য-কাফে। কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে পেঁচার সঙ্গে খেলা, খুনসুটি। পেঁচার সঙ্গে ভাব জমাতে তাই ভিড় উপচে পড়ে এই কাফেগুলিতে। কিন্তু প্রদীপের নিচেই অন্ধকার। পেঁচার পায়ে বেড়ি। পোষ্য-কাফে বন্ধ করতে তাই সোচ্চার সমাজকর্মীরা।

পেঁচা, পেঁচানি, এমনকী খুদে পেঁচাও হাজির। পেঁচা কয় পেঁচানি, খাসা তার চেঁচানি। এত পেঁচা এল কোত্থেকে। না না, কোনও জঙ্গল নয়। একদম খাস শহরের ছবি। কারও বাড়ি নয়। কাফেতে হাজির পেচককুল। জাপানের কাফেতে এভাবেই বেড়ে উঠছে পোষ্য। নয়া স্টাইল। কখনও ক্রেতাদের হাতে কুটুস করে কামড়, কখনও বা ডানা ঝাপটে একরাশ বিরক্তি প্রকাশ। কিন্তু, পালানোর পথটি নেই। পায়ে যে দড়ি বাঁধা। কফি খেতে গিয়ে পেঁচাদের সঙ্গে খেলা এখানে মুফ্‍ত। পেচককুলের সঙ্গে দিব্যি খেলায় মেতে ওঠে খুদেরা। আর বড়রা পেঁচাদের সঙ্গে ছবি তোলেন। বিভিন্ন আকারের পেঁচা। রঙবাহারি। খুদেদের তো কাফেতে ঢুকে দিল খুশ। আর এই পেঁচাদের টানেই বেশিরভাগ সময় পুরো ভর্তি থাকে কাফে। কিন্তু এই আনন্দ, এই ব্যবসার মাঝেও ফুটে উঠছে একটা অন্ধকার দিক। যে ছবিটা ভীষণই করুণ, বেদনার।

পেঁচার পায়ে বেড়ি, অযত্নে বেড়ে ওঠা। আশঙ্কা, এভাবেই জাপানে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাবে না তো পেচককুল? নড়েচড়ে বসেছেন সমাজকর্মীরা। কাফেতে যাতে কোনওভাবেই পেঁচাদের অযত্ন না হয়, তা দেখছেন তাঁরা।

 

সমাজকর্মীদের দাবি, কিছু কাফেতে যথেষ্ট কর্মী নেই। যাঁরা এখানে কফি খেতে আসেন, তাঁরা ইচ্ছেমতো পেঁচাদের সঙ্গে দোস্তি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এটা নিশ্চিত করতে হবে, কাফের কর্মীদের ছাড়া কাস্টমাররা পেঁচাদের রুমে ঢুকতে পারবেন না। কীভাবে পেঁচাদের গায়ে হাত দিতে হবে বা যখন তারা ক্লান্ত হয়ে পড়বে, তখন যাতে তারা বিশ্রাম পায়, তা দেখতে হবে।

পোষ্য-কাফেতে কোনও সমস্যা নেই। ক্রেতা টানতে আলাদা মাত্রা যোগ করতে কাফেতে পেঁচাদের রাখা যেতেই পারে। কিন্তু তাদের রক্ষণাবেক্ষণের দিকে আরও কড়া নজর দিতে হবে। কোনওভাবেই পেঁচাদের পায়ে বেড়ি পরানো যাবে না। কফি খেতে এসে কেউ পেঁচাদের সঙ্গে খেলতেই পারেন বা তাদের আদর করতে পারেন। কিন্তু সবটাই হতে হবে প্রশিক্ষিত কর্মীদের চোখের সামনে। সমাজকর্মীদের দাবি, সাম্প্রতিককালে সমস্যাটা আরও বেড়েছে। কারণ, এই সব কাফেতে বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে। ভিড় উপচে পড়ছে কাফেতে। সবাই কফি খেতে খেতে পেঁচাদের সঙ্গে সময় কাটাতে চান। কিন্তু সেদিকে লক্ষ্য রাখার জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী নেই।

জাপানে পোষ্য-কাফের বিপুল জনপ্রিয়তা। শুধু পেঁচা নয়। বেড়াল, বাজপাখি, ছাগল, শুয়োরও রাখা হয় কাফেতে। কিন্তু এই সব পোষ্যকে ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় না বলে মাঝে মাঝেই সমালোচনা হয়। এই কারণে পোষ্য-কাফে বন্ধ করে দেওয়ারও যুক্তি ওঠে।

কিন্তু জাপানিদের কাছে পেঁচা সৌভাগ্যের প্রতীক। তাই পেঁচা-কাফে বন্ধ করার কথা ভাবতেই পারেন না কাফে মালিকরা। কিন্তু পেঁচাদের পায়ে বেড়ি পরানো চলবে না। সমাজকর্মীদের রক্ষচক্ষু উপেক্ষা করা যাবে না মোটেই। (আরও পড়ুন- কড়া নিরাপত্তায় হোলি পালিত হল পাকিস্তানে)

.