ক্যাথলিক অনুশাসনে গর্ভপাতে না, আয়ারল্যান্ডের মৃত্যু ভারতীয়র
চিকিত্সকরা গর্ভপাত না করায় আয়ারল্যান্ডে এক ভারতীয় মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ক্যাথলিক ধর্মে নিষিদ্ধ হওয়ায় ৩১ বছরের সবিতা হালাপ্পানাভারের মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও গর্ভপাত করতে রাজি হননি আয়ারল্যান্ডের গ্যালওয়ে হাসপাতালের চিকিত্সকরা। বিভিন্ন মহলে দাবি উঠেছে এ ব্যাপারে বিদেশমন্ত্রক ব্যবস্থা নিক। গোটা ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ডাবলিনের ভারতীয় দুতাবাসে বিষয়টির দিকে নজর রাখছে।
চিকিত্সকরা গর্ভপাত না করায় আয়ারল্যান্ডে এক ভারতীয় মহিলার মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ক্যাথলিক ধর্মে নিষিদ্ধ হওয়ায় ৩১ বছরের সবিতা হালাপ্পানাভারের মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও গর্ভপাত করতে রাজি হননি আয়ারল্যান্ডের গ্যালওয়ে হাসপাতালের চিকিত্সকরা। বিভিন্ন মহলে দাবি উঠেছে এ ব্যাপারে বিদেশমন্ত্রক ব্যবস্থা নিক। গোটা ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, ডাবলিনের ভারতীয় দুতাবাসে বিষয়টির দিকে নজর রাখছে।
গত মাসের ২১ তারিখ মিসক্যারেজের সম্ভাবনা নিয়ে ১৭ সপ্তাহের গর্ভবতী সবিতা আয়ারল্যান্ডের গলওয়ের ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে ভর্তি হন। পেশায় দন্তচিকিৎসক সবিতা আদতে দক্ষিণ পশ্চিম ভারতের বাসিন্দা। হাসপাতালে গর্ভপাতের আবেদন করেন তিনি। কিন্তু হাসপাতাল থেকে পরিষ্কার জানানো হয় আয়ারল্যান্ড একটি ক্যাথলিক দেশ। সেখানে গর্ভপাত নিষিদ্ধ। অতএব সবিতার গর্ভপাত করা হাসপাতালের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলাফল? বন্ধ হয়ে যায় সবিতার জরায়ুমুখ। বমি করতে শুরু করেন। দূষিত হয়ে যায় তাঁর রক্ত। ২৮ অক্টোবর সেপ্টিসেমিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান সবিতা হালাপ্পানাভার।
সবিতার স্বামী প্রবীণ হালাপ্পানাভারের হাজার অনুরোধ সত্ত্বেও চিকিত্সকের কর্তব্য ভুলে নিজেদের ধর্মীয় বিশ্বাসেই অনড় থেকেছেন চিকিত্সকরা। তার পরিণতি, রক্তে বিষক্রিয়ার জেরে মৃত্যু হয়েছে সবিতার। প্রবীণ হালাপ্পানাভারের অভিযোগ ঠিক সময়ে চিকিত্সকরা উদ্যোগী হলে তাঁর স্ত্রীর প্রাণরক্ষা পেত। সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশের পর থেকে তুমুল শোরগোল শুরু হয়েছে।
আয়ারল্যান্ডের স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। দেশের প্রধানমন্ত্রী এন্ডা কেনি কোনও স্বাধীন তদন্ত বোর্ড গড়ার সম্ভবনাও উড়িয়ে দেননি। আইনে গর্ভপাতের উপর নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে প্রতি বছর গর্ভপাত করাতে ব্রিটেন পারি দেন প্রচুর আইরিশ মহিলা। চলতি বছরের শুরুতেই দেশে এই আইন সংষ্কারের জন্য সংসদে বিল আনা হয়। বামপন্থী এমপি ক্লেয়র ডালি এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন প্রস্থাবিত বিলটি পাস হলে সবিতার হয়তো বেঁচে থাকতেন।
বিদেশমন্ত্রক সূত্রে বলা হয়েছে, গোটা ঘটনার দিকে নজর রাখছে আয়ারল্যান্ডের ভারতীয় দুতাবাসে। এব্যাপারে যোগাযোগ রাখা হয়েছে আয়ারল্যান্ডের সরকারের সঙ্গেও।
ধর্মীয় অনুশাসন মেনে গর্ভপাত নিষিদ্ধ হতেই পারে। কিন্তু তা বলে এক রোগিনীর প্রাণরক্ষার জন্যও কি সেই সংস্কার ভেঙে একটু মানবিক হতে পারতেন না চিকিত্সকরা।