Ukraine Independence Day: ক্রিমিয়া দিয়ে শুরু, ক্রিমিয়া দিয়েই শেষ হবে এ যুদ্ধ, স্বাধীনতা দিবসে হুঙ্কার জেলেনস্কির
Ukraine Independence Day: ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, এ দেশে নতুন করে এই রুশ হামলা ইউক্রেনে এক নতুন জাতির জন্ম দিয়েছে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ছমাস আগে ক্রিমিয়ার দখলদারি দিয়েই শুরু হয়েছিল রুশ হামলা, সেই ক্রিমিয়া দিয়েই শেষ হবে এই মারণ যুদ্ধ। ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবস (আজ, ২৪ অগস্ট) উপলক্ষে এর আগের দিন এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এ কথা বললেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি আরও বলেছেন, এ দেশে নতুন করে এই রুশ হামলা ইউক্রেনে এক নতুন জাতির জন্ম দিয়েছে। এর আগে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তিনি বলেছিলেন, তাঁরা শঙ্কিত এ দিনতে বা দিনটির আগে-পরে রাশিয়ার সৈন্যরা তাদের মনোবল ভেঙে দিতে হয়তো কোনও ভয়াবহ কিছু ঘটাবে। ওই সম্মেলনে তিনি এমনও বলেন যে, ছ'মাস আগে রুশ সামরিক অভিযান শুরু হওয়ার সময়েই ইউক্রেনের পুনর্জন্ম ঘটেছিল। স্বাধীনতা দিবসের আবহে এমনই দাবি ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির। প্রসঙ্গত এদিন সোভিয়েত রাশিয়া থেকে ইউক্রেনের স্বাধীনতা লাভের ৩১ বছর পূর্ণ হল, আর কী আশ্চর্যজনকভাবে, ঠিক ৬ মাস আগেই ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরু হয়েছিল।
আরও পড়ুন: Your Doppelganger: ঠিক আপনার মতোই দেখতে আর একটি মানুষও আছেন এ বিশ্বে, কেন এটা ঘটে...
কিয়েভের কেন্দ্রীয় স্বাধীনতা স্মৃতিস্তম্ভের সামনে দাঁড়িয়ে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একটি বক্তৃতা দেন জেলেনস্কি। আবেগমথিত কণ্ঠে তিনি বলেন, ২৪ ফেব্রুয়ারি ভোর ৪টেয় পৃথিবীতে এক নতুন জাতির জন্ম হয়েছিল। এমন এক জাতি যারা কাঁদেনি, আর্তনাদ করেনি, ভয় পায়নি, পালায়নি, হাল ছেড়ে দেয়নি, ভুলে যায়নি। এদিন, জেলেনস্কি তাঁর ভাষণে রুশ বাহিনীকে ইউক্রেন থেকে সম্পূর্ণরূপে তাড়িয়ে দেওয়ার শপথ নেন। আর এই প্রসঙ্গেই তিনি বলেন, পূর্ব ইউক্রেনের রুশ অধিকৃত এলাকাগুলির পাশাপাশি ক্রিমিয়া উপদ্বীপও পুনরুদ্ধার করা হবে। প্রসঙ্গত ২০১৪ সালেই রাশিয়া ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করেছিল। জেলেনস্কি এদিন খুব নাটকীয় ভাবে বলেন, যুদ্ধশেষে আমরা কী চাই? আগে বলতাম শান্তি চাই, এখন বলি জয় চাই!
জেলেনস্কির এগুলি যে স্রেফ কথার কথা নয়, তা বিশ্ব জানে, দেখেছে। ইউক্রেন-বিজয় যতটা সহজ হবে ভেবেছিল রাশিয়া, তা মোটেই হয়নি। গত কয়েক মাসে বরং যুদ্ধে খুবই কমই অগ্রগতি লাভ করেছে রাশিয়া। কিয়েভ থেকে শুরু করে ইউক্রেনের সব বড় শহর থেকেই রুশ বাহিনীকে পিছু হঠতে বাধ্য করেছে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা।
রুশ আগ্রাসনের মধ্যেই এবারে ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবস পড়েছে। দিনটির বিপুল তাৎপর্য ইউক্রেনীয়দের জীবনে। তবে কোনও অনুষ্ঠান হবে না, সরকারি ভাবে তা আগেই ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল। এবারে শুধু কিয়েভের রাজপথে ইউক্রেনীয় বাহিনীর হাতে ধ্বংস হওয়া রুশ সামরিক যানবাহনগুলির প্রদর্শন হয়। একের পর এক ধ্বংস হওয়া রুশ কামান, রুশ সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে চলে শোভাযাত্রা। সাধারণ মানুষ ধ্বংস হওয়া সেই সব রুশ সামরিক যানের সঙ্গে ছবিও তোলেন। স্পষ্টতই রাশিয়ার বিরুদ্ধে তীব্র অবজ্ঞা প্রদর্শনের জন্যই এই শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল।
ইউক্রেনের স্বাধীনতা দিবসে সেই দেশের প্রধান প্রধান শহরগুলিতে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাতে পারে রাশিয়া, এমন একটা সতর্কতা গত কয়েকদিন ধরেই কিয়েভ থেকে জারি করা হয়েছিল। আশঙ্কা অবশ্য সত্য প্রমাণিত হয়ি। কিয়েভে এদিন অস্বাভাবিক কিছু ঘটেনি, বরং আগাগোড়া শান্তই ছিল শহরটি। গোলাগুলি পড়েনি, বোমা ফাটেনি। কোথাও কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি।