ফেলিক্সের সাহস লাফ হার মানাল বাস্তবকেও

শুরুতে ব্যাপারটা ছিল অনেকটা `মিশন ইমপসিবল`-এর মতো। তবে সেই ইম্পসিবলকে -পসিবল করে ইতিহাস গড়লেন অস্ট্রিয়ার স্কাই-ডাইভার ফেলিক্স বাউমগার্টনার। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার থেকে ঝাঁপ দিয়ে ভূপৃষ্ঠের মাটি ছোঁয়া পর্যন্ত বাউমগার্টনারের সফল অবতরণের সাক্ষী রইল তামাম দুনিয়া। ভেঙে গেল স্কাই-ডাইভিংয়ের যাবতীয় রেকর্ড। তাঁর ফ্রি ফল-এর গতি হার মানিয়েছে শব্দের গতিকেও। দু-দুবার রেকর্ড গড়ার পথ থেকে ফিরে আসতে হয়েছিল। খারাপ আবহাওয়ার কারণে। তবে তৃতীয়বারে সাফল্যের দরজা খুলে দিলেন অসমসাহসী ফেলিক্স বাউমগার্টনার। ভূপৃষ্ঠের প্রায় উনচল্লিশ কিলোমিটার উচ্চতা থেকে লাফ দিয়ে দশ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে গেলেন মাটিতে। গড়লেন বিশ্বরেকর্ড।       

Updated By: Oct 15, 2012, 09:54 AM IST

শুরুতে ব্যাপারটা ছিল অনেকটা `মিশন ইমপসিবল`-এর মতো। তবে সেই ইম্পসিবলকে -পসিবল করে ইতিহাস গড়লেন অস্ট্রিয়ার স্কাই-ডাইভার ফেলিক্স বাউমগার্টনার। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার থেকে ঝাঁপ দিয়ে ভূপৃষ্ঠের মাটি ছোঁয়া পর্যন্ত বাউমগার্টনারের সফল অবতরণের সাক্ষী রইল তামাম দুনিয়া। ভেঙে গেল স্কাই-ডাইভিংয়ের যাবতীয় রেকর্ড। তাঁর ফ্রি ফল-এর গতি হার মানিয়েছে শব্দের গতিকেও।
দু-দুবার রেকর্ড গড়ার পথ থেকে ফিরে আসতে হয়েছিল। খারাপ আবহাওয়ার কারণে। তবে তৃতীয়বারে সাফল্যের দরজা খুলে দিলেন অসমসাহসী ফেলিক্স বাউমগার্টনার। ভূপৃষ্ঠের প্রায় উনচল্লিশ কিলোমিটার উচ্চতা থেকে লাফ দিয়ে দশ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে গেলেন মাটিতে। গড়লেন বিশ্বরেকর্ড।       
৪৩ বছরের অস্ট্রিয়ান স্কাই-ডাইভার ফেলিক্স বাউমগার্টনারের অভিযানের শেষমুহুর্তের প্রস্তুতি চলছে..প্রত্যেক মুহুর্ত উত্তেজনায় ঠাসা। নিউ মেক্সিকোর রসওয়েল ইন্টারন্যাশনাল এয়ারসেন্টার থেকে ভারতীয় সময় রাত নটা নাগাদ ক্যাপসুলে চড়ে বসলেন বাউমগার্টনার। হিলিয়াম ভর্তি বিশালাকায় বেলুন এরপর ক্যাপসুল নিয়ে উড়ে চলল মহাকাশের দিকে।   
দু ঘণ্টা বারো মিনিট বাইশ সেকেণ্ড পর ক্যাপসুল পৌঁছল তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে। শেষপর্যন্ত তা যেখানে গিয়ে থামল সেখানকার উচ্চতা ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৯ কিলোমিটার বা প্রায় ২৪ মাইল। বাউমগার্টনারের সুরক্ষার প্রত্যেক খুঁটিনাটি নিখুঁতভাবে খতিয়ে দেখার পর অবশেষে এল সেই মুহূর্ত...
  
ঝাঁপ দেওয়ার পর প্রথম কয়েক মিনিট ছিল সবচেয়ে বিপজ্জ্বনক। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের কার্যত বায়ুচাপ হীন অংশে একদিক থেকে আরেকদিকে বারবার গড়িয়ে যাচ্ছিলেন বাউমগার্টনার। প্রতি ঘণ্টায় ৭০০ মাইলেরও বেশি গতিতে নিচে পড়ছিলেন তিনি। ভয় ছিল, অক্সিজেনশূন্য, হিমাঙ্কের বহুগুণ নিচের তাপমাত্রায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলতে পারেন অভিজ্ঞ এই স্কাই-ডাইভার। অত্যন্ত কম বায়ুচাপের কারণে ফেলিক্সের রক্তের মধ্যে তৈরি হতে পারত বাতাসের বুদবুদ। যার ফলে বন্ধ হয়ে যেতে পারত শরীরে রক্ত চলাচল। ঘটতে পারত অনেককিছুই। তবে যাবতীয় বিপদের আশঙ্কাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে মিনিট তিনেকের মধ্যে নিজেকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসেন বাউমগার্টনার। এই কয়েকটি মিনিট ভয়ে-আশঙ্কায় হৃত্‍স্পন্দন থামার জোগাড় হয়েছিল বাউমগার্টনারের পরিবারের। রেড বুল স্ট্র্যাটোসের টিমের সঙ্গে তাঁরাও বসেছিলেন মিশন কন্ট্রোল রুমে। তবে সেই আশঙ্কার মেঘ কেটে যেতেই স্বস্তির আলো ফুটে ওঠে তাঁদের চোখে-মুখে।  
 
নির্দিষ্ট সময়েই প্যারাশুট খুলে বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করেন বাউমগার্টনার। নিউ মেক্সিকোর মরুভূমিতে নামতে তাঁর সময় লেগেছে দশ মিনিটেরও কম। প্যারাশুট মাটি ছুঁতেই উত্তেজনায় মাটিতে বসে পড়েন দুঃসাহসী এই স্কাই-ডাইভার। মুষ্টিবদ্ধ দুহাত তুলে ধরলেন ওপরে। বাউমগার্টনারের এই গোটা অভিযানের প্রতিটি মুহুর্তে তাঁকে সাহায্য করে গেছেন জোসেফ কিটিঙ্গার। মার্কিন সেনাবাহিনীর এই প্রাক্তন বিমান চালকের দখলে এতদিন ছিল সর্বোচ্চ উচ্চতা থেকে স্কাইডাইভিংয়ের রেকর্ড।  
 

.