কী ভাবে সামলানো হবে বিজেপি নেতাদের, বৈঠকের আগের দিন ঠিক করলেন নবান্নের কর্তারা
তবে রাজ্যের প্রশাসনিক সদর দফতর 'নবান্ন'-এর বদলে লালবাজারে কেন বৈঠক, ইতিমধ্যে সেই প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। প্রশাসন সূত্রের খবর, মুকুল রায়, জয়প্রকাশ মজুমদাররা নবান্নে এসে বৈঠক করুন তা চাননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সুতপা সেন
আদালতের নির্দেশে একপ্রকার বাধ্য হয়েই বৃহস্পতিবার বিজেপির সঙ্গে বৈঠকে বসছে রাজ্য প্রশাসন। বৃহস্পতিবার সন্ধে ৫টায় কলকাতার লালবাজারে বিজেপি নেতাদের সঙ্গে রথযাত্রার রুট নিয়ে আলোচনা করবেন রাজ্য প্রশাসনের তিন শীর্ষ কর্তা। তবে তার আগে নিজেদের মধ্যে আলোচনায় রণনীতি ঠিক করে ফেলেছে প্রশাসন। ঠিক হয়েছে, বৈঠক শেষের পর নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রশাসনিক কর্তারা।
অনেক চেষ্টা করেও বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক এড়াতে পারেননি রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা। বৃহস্পতিবার লালবাজারে বিজেপি নেতা মুকুল রায়, জয়প্রকাশ মজুমদার ও প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজ্য প্রশাসনের ৩ শীর্ষকর্তা। প্রশাসনের তরফে থাকবেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দে, স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্য ও রাজ্য পুলিসের ডিজি বীরেন্দ্র।
নবান্ন সূত্রের খবর, বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রথযাত্রার অনুমতি নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাবেন না প্রশাসনিক কর্তারা। বৈঠক শেষে একপ্রস্থ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবেন তাঁরা। এর পর ঘোষণা হবে সিদ্ধান্ত।
হাইকোর্টের গুঁতোয় বিজেপির সঙ্গে রথযাত্রা বৈঠকে বাধ্য হল রাজ্য প্রশাসন
সূত্রের খবর, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হতে পারে এমন কোনও পথে রথ এগোতে দেবে না প্রশাসন। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে এমন কোনও কাজ করবে না তারা। বিজেপি নেতাদের কথা মন দিয়ে শুনে নেওয়া হবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
তবে রাজ্যের প্রশাসনিক সদর দফতর 'নবান্ন'-এর বদলে লালবাজারে কেন বৈঠক, ইতিমধ্যে সেই প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। প্রশাসন সূত্রের খবর, মুকুল রায়, জয়প্রকাশ মজুমদাররা নবান্নে এসে বৈঠক করুন তা চাননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকল্প হিসাবে তাই লালবাজারকে বেছে নেন প্রশাসনিক কর্তারা।
বলে রাখি, গত ৭ ডিসেম্বর কোচবিহার থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল বিজেপির রথযাত্রা। কিন্তু প্রশাসনের অনুমতি না মেলায় শেষ মুহূর্তে বাতিল হয় তা। ওদিকে ৬ ডিসেম্বর রথযাত্রার অনুমতি নিয়ে আদালতে চরম ভর্তসনার মুখে পড়ে রাজ্য প্রশাসন। এর পরও আদালতে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে থাকা ফৌজদারি মামলার কারণ দেখিয়ে বৈঠক থেকে অব্যহতি চায় প্রশাসন। সেই আবেদনেও কান দেয়নি আদালত। বিচারপতিরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বিজেপির কথা শুনতেই হবে।
বিজেপির তরফে আদালতে জানানো হয়, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে মোট ১৮টি চিঠি দিলেও কোনওটিরই জবাব দেয়নি প্রশাসন। বিজেপির কর্মসূচি নিয়ে কোনও আলোচনায় বসার চেষ্টাও করেনি তারা। এই কথা শুনে সরকারি কৌসুলিকে চরম তিরস্কার করে বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারে ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের পর্যবেক্ষণে প্রশ্ন তোলা হয়, কোন অযৌক্তিক ব্যবস্থা তৈরি করতে চাইছেন তাঁরা।
এর পরই নির্দেশ দিয়ে আদালত জানায়, আগামী ১২ ডিসেম্বরের মধ্যে বৈঠক করে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে বিজেপির কর্মসূচি নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে রাজ্য প্রশাসনকে। সেইমতো বৃহস্পতিবার বৈঠক না হলে আদালত অবমাননার দায়ে পড়তে হত রাজ্যের মুখ্যসচিবকে।