প্রস্রাবের সঙ্গে বেরত ভাত, মুড়ি, বিরল অস্ত্রোপচারে রোগীকে সুস্থ করলেন বর্ধমান মেডিক্যালের চিকিৎসকরা

গত মাসে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে রফিকুলের দেহে অস্ত্রোপচার হয়। ১০ জন চিকিৎসকের দল প্রায় ২ ঘণ্টার চেষ্টায় বিচ্ছিন্ন করেন চিকিৎসকরা। তার পর নিয়মিত চিকিৎসায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছেন রফিকুল। 

Updated By: Nov 5, 2019, 07:21 PM IST
প্রস্রাবের সঙ্গে বেরত ভাত, মুড়ি, বিরল অস্ত্রোপচারে রোগীকে সুস্থ করলেন বর্ধমান মেডিক্যালের চিকিৎসকরা

নিজস্ব প্রতিবেদন: জটিল নয় তবে বিরল। এমনই এক অস্ত্রোপচার করে তাক লাগিয়ে দিলেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা। যার জেরে আজব সমস্যা থেকে মুক্তি পেলেন বর্ধমান শহর লাগোয়া নেড়োদিঘির বাসিন্দা ২৩ বছরের রফিকুল। প্রস্রাবের সঙ্গে খাবারের অংশ বেরিয়ে আসত তাঁর। 

৮ বছর বয়সে প্রথম দেখা দেয় উপসর্গ। প্রস্রাবের সঙ্গে বেরিয়ে আসত ভাত, মুড়ি। গাঁয়ে যেমনটা হয় আরকি... খরচের ভয়ে গ্যাসের সমস্যা বলে উপেক্ষা করে বাড়ির লোকজন। নিদান দেওয়া হয় বেশি করে জল খেতে। কিন্তু সুরাহা হয়নি। বয়স বাড়তে বাড়তে থাকে উপসর্গ। স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে যান রফিকুল। রফিকুলের সমস্যার কথা শুনে তাঁকে মানসিক রোগী বলে চিহ্নিত করেন সেই চিকিৎসক। শুরু হয় মানসিক রোগের চিকিৎসা। 

 

রফিকুলের মা নুরজাহাঁ বিবি বলেন, 'ভাবতাম ছেলের গ্যাসের সমস্যা আছে। তাই বেশি করে জল খেতে বলতাম। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। উলটে কেটে গেছে ১৫ বছর।'

সম্প্রতি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসক নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের কাছে যান রফিকুল। গুরুত্ব দিয়ে রফিকুলের সমস্যা শোনেন তিনি। শুরু হয় চিকিৎসা। জানা যায় বিরল ইউরেট্রো ডিওডিনাল ফিসচুলা রয়েছে রফিকুলের অন্ত্রে। 

এই সমস্যায় খাদ্যনালির একাংশের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায় মুত্রনালি। যার ফলে খাবার খেলে অন্ত্র থেকে খাবারের অংশ চলে আসে মুত্রনালিতে। ফলে প্রস্রাবের সঙ্গে বেরোতে থাকে খাবারের টুকরো। মুত্রথলিতে সেই খাদ্যবস্তু জমে পচন ধরলে গুরুতর সংক্রমণে আক্রান্ত হতেই পারতেন রফিকুল। 

গত মাসে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে রফিকুলের দেহে অস্ত্রোপচার হয়। ১০ জন চিকিৎসকের দল প্রায় ২ ঘণ্টার চেষ্টায় বিচ্ছিন্ন করেন চিকিৎসকরা। তার পর নিয়মিত চিকিৎসায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছেন রফিকুল। 

বৃদ্ধকে বেঁধে রেখে চকোলেট খেতে খেতে ডাকাতি, সিম ও ২,০০০ টাকা ফেরত দিয়ে গেল ডাকাত

চিকিৎসক নরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানালেন, ইন্টারনেটে খুঁজে দেখা গিয়েছে, গোটা বিশ্বে এর আগে মাত্র ১১ জনের এই উপসর্গ দেখা গিয়েছে। ফলে অস্ত্রোপচার নিয়ে বিশেষ অভিজ্ঞতা কারও নেই। নিজেদেরই সমস্যা সমাধানের রাস্তা খুঁজতে হয়েছে। 

ছেলে সেরে ওঠায় খুশি নুরজাহান বিবিও। চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। 

.