Siliguri Clash: ভোট মিটতেই শিলিগুড়ির একাধিক ওয়ার্ডে রাতভর মারধর-বোমাবাজি, থানায় অভিযোগ দায়ের সিপিএমের

অন্যদিকে শিলিগুড়ির(Siliguri) বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ জানান, এক কথায় এগুলো নোংরামো

Updated By: Feb 13, 2022, 03:54 PM IST
Siliguri Clash: ভোট মিটতেই শিলিগুড়ির একাধিক ওয়ার্ডে রাতভর মারধর-বোমাবাজি, থানায় অভিযোগ দায়ের সিপিএমের

নিজস্ব প্রতিবেদন: পুরভোট মিটতেই হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল শিলিগুড়ি পুরসভার একাধিক ওয়ার্ডে। বস্তি সংলগ্ন ওয়ার্ডগুলিতে বোমাবাজি ও গুলিচালনার মতো অভিযোগও উঠেছে শাসকদলের বিরুদ্ধে। হামলার অভিযোগ তুলেছে সিপিএম ও বিজেপি। অভিযোগ অস্বীকার শাসকদলের।

দলের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলার অভিযোগ করল সিপিএম। এনিয়ে শনিবার এনজেপি থানায় সিপিএম নেতৃত্বের তরফে সমন পাঠক সহ সিসিটিভি ফুটেজ সহ অভিযোগ দায়ের করেন। শিলিগুড়ি কমিশনারেটেও হয়েছে অভিযোগ।

শনিবার শিলিগুড়িতে নির্বাচন নির্বিঘ্নে কাটলেও ভোট পরবর্তী অশান্তির সাক্ষী রইল শহরের একাধিক ওয়ার্ড। বিশেষ করে বস্তি সংলগ্ন এলাকা গুলোতে ব্যাপকহারে বোমাবাজি অভিযোগ উঠে খোদ রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে। ভোটদানের সময় পেরোতেই শিলিগুড়ির ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিনগর থেকে বাদুরবাগান এলাকায় উত্তাল হয়ে ওঠে। বিজেপি প্রার্থী শানু বৈদ্যর গাড়ি ভাঙচুর হয়, বুথের ভেতরেই মারধরের অভিযোগ উঠে বিজেপি প্রার্থীকে। ভাঙচুরের হাত থেকে বাদ যায়নি খোদ পুলিসের গাড়িও। রাত যত গভীর হয় শিলিগুড়ির ৩২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে বোমাবাজি, গুলি। 

রবিবার থেকেই একের পর এক জনপ্রতিনিধিরা বিভিন্ন ওয়ার্ডে যান। প্রথমেই অশোক ভট্টাচার্য(Ashok Bhattarcharya) ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন। সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জানান, 'গৌতম দেব ও জয়দ্বীপ নন্দীর নামে এফআইআর করা হবে। পুলিস প্রশাসনকেও আমরা জানিয়েছি , গতকাল রাতেও জানিয়েছিলাম। তবে ব্যবস্থা হয়নি। তবে বিষয়টা যখন নির্বাচন ঘটিত সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হব আমরা। গতকাল রাতে আমাদের পোলিং এজেন্ট ও কর্মীদের বাড়িতে গিয়ে মারধর করেছে। ভাঙচুর করা হয়েছে। একজনের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নানা রকম হুমকি দেওয়া হয়েছে। ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে অনিল ভট্টাচার্য নামে আমাদের এক পোলিং এজেন্টের বাড়িতে গিয়ে হামলা করা হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেস এসব করেছে। বিজন নন্দী এসব করেছে।' প্রসঙ্গত, ঘটনাকে কেন্দ্র করে এনজেপি(NJP) থানায় বামেদের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ দেখানো হয়। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো বামেদের পক্ষ থেকে। 

অন্যদিকে গৌতম দেব(Gautam Deb) সাফ জানান , অশোক ভট্টাচার্যের 'নন্সেন্স টকিং' এগুলো। উনি ভুলে যাবেন না নির্বাচনের আগে প্রার্থী খুনের নায়ক অশোক ভট্টাচার্য। দুটো ঘটনা শুনেছি। পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েছি যাতে কোথাও কোন প্রকার গন্ডগোল না ঘটে।  

অন্যদিকে শিলিগুড়ির(Siliguri) বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ জানান, এক কথায় এগুলো নোংরামো। গতকাল বিকেল ৫টার পর চিত্রটা পালটে যায়। সমস্ত ঘটনা পরিকল্পিত। এভাবে চলতে থাকলে শিলিগুড়ি দিনহাটা বা ভবানীপুর হয়ে উঠবে। এরা ক্ষমতায় এলে শহরের মানুষের যন্ত্রণা আরও বাড়বে। লজ্জাজনক পরিস্থিতি গোটা শহরে। নাম না করে গৌতম দেবের উদ্দেশ্যে জানান , শহরের নেতারা পুরোনো ঘটনাকে টেনে এনে বিবৃতি দেয়। একজন সিনিয়র রাজনীতিবিদ হয়ে এই অন্যায় বন্ধ করা উচিত। সারারাত ধরে বাইক বাহিনী দাপিয়েছে গোটা শহর জুড়ে। ভুগতে হয়েছে বিরোধী ইলেকশন এজেন্টদের। শুধু শাসক দল যা বলবে তাই সত্যি বাকি সব মিথ্যে?  এদের মিথ্যে বিবৃতি অন্যায়কে আরও প্রশয় দেবে। ব্যাক্তিগতভাবে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হবে। শাসক দলের প্ররোচনা ছাড়া এই ধরনের ঘটনা ঘটা সম্ভব না। কিছু পুলিস অফিসার আজও বিকিয়ে যায়নি, তাদের মেরুদন্ড শক্ত,আমার তাদের উপর বিশ্বাস আছে।

আরও পড়ুন-অর্জুনগড়ে ধাক্কা, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে অর্জুন সিংয়ের ২ ঘনিষ্ঠ আত্মীয়

শহরের ৩৫ নম্বর এনজেপি সংলগ্ন ইন্ডিয়ান ওয়েল গেটের পাশে যে এলাকাগুলো রয়েছে সেখানেই তান্ডবের পরিমাণ বেশি ছিল। রাতে বোম থেকে গুলি কোনটাই বাদ যায়নি। এলাকাবাসীদের বক্তব্য, রাতে এলাকারই বেশ কিছু ছেলে পাড়ায় বসে আড্ডা মারছিল। হঠাৎই তারা জয়দ্বীপ নন্দীকে ফোন করে ডাকে। জয়দ্বীপ নন্দী বেশ কিছু ছেলেদের নিয়ে এলাকায় উপস্থিত হয়েই অশান্তি শুরু করে। বাদ যায়নি মেয়েরাও। পাড়ার ছেলেদের ব্যাপক মারধোর করা হয়। অন্যদিকে এলাকার তৃণমূল কর্মীদের দাবি জয়দ্বীপ নন্দী বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেয়। পরে ফের তৃণমূলে আসে। বিজেপি থাকাকালীন তার বিরুদ্ধে পুরোনো তৃণমূল কর্মীরা যে স্লোগান তোলে তারই প্রতিশোধ নিল জয়দ্বীপ নন্দী। এক কথায় পুরোনো ও নব্য তৃণমূলের ঝামেলা। যদিওবা গৌতম দেব এ বিষয়ে জানান, দলে আদি, পুরনো বলে কিছু  নেই। সবাই তৃণমূল।  

অন্যদিকে ঘটনার অন্যতম নায়ক জয়দ্বীপ নন্দী জানান ,  ইভিএম মেশিন চলে যাওয়ার পর ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকায় সিপিএম গিয়ে ঝামেলা করে। আমাদের কর্মীরা সেটা প্রতিরোধ করে। তবে বোমা বা গুলির কথা বলতে পারব না। তবে সিপিএমের অত্যাচার রুখতেই আমাদের ছেলেরা সেখানে গিয়ে তাদের প্রতিরোধ। আমাদের কর্মীদের গাড়ি উলটে ভেঙে দেওয়া হয়েছে।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

.