শহিদ জওয়ান ছেলের কফিনবন্দি দেহের অপেক্ষায় মুর্শিদাবাদের অশীতিপর বৃদ্ধা
বছর পঞ্চাশের মতিউর বীজাপুরের মুর্দানা ক্যাম্পে এএসআই পদে ছিলেন। শনিবার বিকালে সেনা টহলদারির সময় ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ হয়।
নিজস্ব প্রতিবেদন: পুজোর সময়ে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু কাজের জন্যই ফিরতে পারেননি। পুজো শেষে ফিরবেন বটে কিন্তু কফিনবন্দি হয়ে। ছত্তিশগড়ের মাওবাদী হামলা কেড়ে নিল তাঁর প্রাণ। ছত্তিশগড়ে মাওবাদী হামলায় শহিদ ৪ জওয়ানের এক জন হলেন মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বোখরা গ্রামের মতিউর রহমান।
১৯৮৮ সালে সিআরপিএফের চাকরিতে যোগ দেন মতিউর রহমান। ছোটো থেকে দেশের স্বার্থে কাজ করবেন বলেই মনস্থির করেছিলেন মতিউর। টালির চালের বাড়ির ছেলে স্বপ্ন দেখেছিলেন দেশের স্বার্থেই মৃত্যু যেন হয় বীরের মত! সেটাই হল।
আরও পড়ুন: সামনেই নির্বাচন, ছত্তিসগঢ়ে মাও-হামলায় নিহত ৪ জওয়ান
বছর পঞ্চাশের মতিউর বীজাপুরের মুর্দানা ক্যাম্পে এএসআই পদে ছিলেন। শনিবার বিকালে সেনা টহলদারির সময় ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ হয়। বিকেল ৪টে নাগাদ ৬ জওয়ানের একটি মোবাইল বুলেটপ্রুফ বাঙ্কারে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন আইইডি বিস্ফোরণ ঘটায় মাওবাদীরা। অ্যান্টি নক্সাল অপারেশনের স্পেশ্যাল ডিজি ডি এম অবস্তি জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছে ৪ জওয়ানের। গুরুতর জখম অবস্থায় ২ জওয়ানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মতিউর রহমানই ছিলে পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। তাঁর শূন্যতা গ্রাস করেছে গোটা পরিবারকে। রবিবার সকালে মতিউরের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান জঙ্গিপুরের সাংসদ অভিজিত্ মুখোপাধ্যায়। ছোট্ট এক কামরা ঘরটিতে যেন উপচে পড়া ভিড়। সকলেই শহিদ জওয়ানের বৃদ্ধ মাকে সহমর্মিতা জানাতে এসেছেন। আশি পেরিয়ে যাওয়ার বৃদ্ধার চোখ আজ ঝাপসা। শূন্য দৃষ্টি এখন শুধুই খুঁজছে তাঁর সম্বল, তাঁর একমাত্র ছেলেকে... তাঁর ঘরে ফিরে আশায় অপেক্ষায় এখনও দুয়ারে ঠাঁই বসে তিনি।