তৃণমূল ঠেকাতে পাহাড়ে হাত মেলাল মোর্চা-জিএনএলএফ, অনুঘটক বিজেপি?
লোকসভা ভোটে অমর সিং রাইকে ঘাসফুল প্রতীকে প্রার্থী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মৌপিয়া নন্দী
দূরত্ব সরিয়ে পাহাড়ের হাত মেলাল গোর্খা জনমুর্তি মোর্চা ও গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট। প্রেস বিবৃতি জারি করে দুপক্ষ জানিয়ে দিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসাংবিধানিক ও দমনমূলক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য এই সিদ্ধান্ত। আর এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে বিজেপির কৌশল রয়েছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও সুবাস ঘিসিংয়ের জিনএনএলএফের সাপে-নেউলে সম্পর্ক কারও অজানা নয়। সোমবার যখন তারা যৌথ সাংবাদিক বৈঠকের ডাক দেয়, তখনই দানা বেঁধেছিল জল্পনা। সেই জল্পনাই সত্যি করে হাত মেলাল দুই বৈরী। আর এই হাত মেলানোয় বিজেপি অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেছে বলে মনে করা হচ্ছে। এসআই অমিতাভ মালিকের খুন-সহ একাধিক অভিযোগে ফেরার বিমল গুরুং ও রোশন গিরি। লোকসভা ভোটে অমর সিং রাইকে ঘাসফুল প্রতীকে প্রার্থী করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফলে পাহাড় গুরুংয়ের মুঠো থেকে হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। আর সে কারণেই গুরুং মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অতিসম্প্রতি রক্ষাকবচ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের শরণাপন্ন হন বিমল গুরুং।
পাহাড়ে গুরুংয়ের অজ্ঞাতবাস থাকাকালে মোর্চার রাশ এখন বিনয় তামাং ও অনীত থাপার হাতে। আর বলাই বাহুল্য, দুই নেতাই তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ। ওদিকে আবার গতবার জেতা দার্জিলিং আসনটি ধরে রাখতে চাইছে বিজেপি। কিন্তু পাহাড়ে তো গুরুংকে ছাড়া দাঁত ফোটানো সম্ভব নয়। তার আভাস কয়েকদিন আগেই দিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। দাবি করেছিলেন, ঠিক সময়েই আসবেন বিমল গুরুং।
লোকসভা ভোটের আগে সুনির্দিষ্ট চিত্রনাট্য মেনেই যে মোর্চা-জিএনএলএফ একজোট হয়েছে তা স্পষ্ট করে দিয়েছে প্রেস বিবৃতি। সেখানে তৃণমূল প্রার্থীকে সরাসরি মীরজাফর আখ্যা দেওয়া হয়েছে। আর প্রেস বিবৃতির ছত্রে ছত্রে রয়েছে রাজ্য সরকারের বিরোধিতা। লেখা হয়েছে, উত্তরবঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধীদের মিথ্যা মামলা, পুলিস দিয়ে উত্যক্ত করছে রাজ্য সরকার। প্রতিদিন বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। দিনের আলোয় গণতন্ত্রের হত্যা করছে সরকার। গোর্খাদের নানা গোষ্ঠীতে ভাগ করে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বাংলার সরকার।
আরও পড়ুন- খালি তিলক কাটলে হয় না, মোদী-শাহকে সংস্কৃত মন্ত্রপাঠের চ্যালেঞ্জ মমতার
এখনও প্রার্থীতালিকা ঘোষণা করেনি বিজেপি। সূত্রের খবর, গতবারের জয়ী প্রার্থী সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া প্রার্থী হচ্ছেন না। সুবাসপুত্র মন ঘিসিং প্রার্থী হতে পারেন বলে জল্পনা। আরও এক হেভিওয়েট প্রার্থীর নামও শোনা যাচ্ছে। সবমিলিয়ে পাহাড়ে আগামিদিনে নাটকের আরও কয়েকটা পর্ব দেখা যেতে পারে বলে মনে করছেন অনেকেই।