কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ায় গায়ে প্রস্রাব করে স্ত্রীকে বের করে দিলেন স্বামী
বছর দুয়েক প্রেমপর্বের পরই বিয়ে প্রাণের মানুষটিকে। কিন্তু বিয়ের ২ বছর পর থেকেই বদলাতে থাকে পরিস্থিতি।
নিজস্ব প্রতিবেদন: পর পর দুটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেওয়ার অপরাধে স্ত্রীর উপর অকথ্য অত্যাচার চালানোর অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, মারধরের পর গায়ের উপর প্রস্রাব করে গৃহবধূকে বাড়ি থেকে বের করে দেন স্বামী। ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের।
নবম শ্রেণিতে পড়ার সময়ই মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা সৌমশ্রীর সঙ্গে প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে জয়নগরের দক্ষিণ বারাসতের জীবন মণ্ডল হাটের বাসিন্দা পার্থসারথি বণিকের। বছর দুয়েক প্রেমপর্বের পর দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় পার্থসারথির সঙ্গে বিয়ে হয় সৌম্যশ্রীর। প্রথম প্রথম সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল। দরিদ্র পরিবারের মেধাবী ছাত্রী সৌম্যশ্রীর দু'চোখে তখন সুখী সংসারের স্বপ্ন। অন্যদিকে বিয়ের পর পার্থসারথির ভাগ্যলক্ষ্মীও সহায় হয়। ফুলেফেঁপে ওঠে তাঁর ইমারতি ব্যবসা। কিন্তু দু'বছর পর থেকেই বদলে যেতে থাকে ছবিটা।
বিয়ের দু'বছরের মাথায় এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন সৌম্যশ্রী। অভিযোগ, তারপর থেকেই সৌম্যশ্রীকে নানাভাবে লাঞ্ছনা, গঞ্জনা দিতে শুরু করে পার্থ। পার্থসারথির ব্যবসায় মন্দা দেখা দিলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়। বাপের বাড়ি থেকে সৌম্যশ্রীকে টাকা আনতে বলে পার্থ। কিন্তু সৌম্যশ্রী টাকা আনতে অস্বীকার করলেই শুরু হয় অত্যাচার। এরপরই পার্থ সৌম্যশ্রীকে 'প্রস্তাব' দেয় পুত্রসন্তানের জন্ম দিতে পারলে সব 'অপরাধ মাফ' করে দেওয়া হবে।
এরপর সৌম্যশ্রী দ্বিতীয়বারের জন্য গর্ভবতী হয়। ১২ দিন আগে দ্বিতীয় কন্যাসন্তানের জন্ম দেন সৌম্যশ্রী। অভিযোগ, তারপরই মত্ত অবস্থায় স্ত্রী ও দুই মেয়েকে খুনের চেষ্টা করেন পার্থসারথি। কোনওরকমে দুই মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে জয়নগর থানার দ্বারস্থ হন সৌম্যশ্রী। কিন্তু অভিযোগ, সব কথা শুনেও অভিযুক্ত পার্থর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিস। তারপর থেকেই বাপের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন বছর ২৫-এর সৌম্যশ্রী।
আরও পড়ুন, স্ত্রীর হাতে স্টিয়ারিং, স্বামী কনডাক্টর, রোজ সকালে ছুটছে বাস
তবে, দুই মেয়েকে নিয়ে স্বামীর ঘরে আর কোনওভাবেই ফিরতে চান না সৌম্যশ্রী। তাঁর লক্ষ্য এখন একটাই। একা লড়াই করেই দুই মেয়েকে বড় করে তুলতে চান তিনি।