ডুর্য়াসের নরখাদক চিতবাঘকে 'মৃত্যুদণ্ডে'র নির্দেশ!

এর অর্থ একটাই, নরঘাতক ওই চিতাবাঘকে যদি জ্যান্ত ধরা সম্ভব না হয়, তবে তাকে গুলি করা যাবে।

Updated By: Jan 31, 2019, 09:43 AM IST
ডুর্য়াসের নরখাদক চিতবাঘকে 'মৃত্যুদণ্ডে'র নির্দেশ!
ছবিটি প্রতীকী

মৌপিয়া নন্দী : এলাকার মানুষের ঘুম ছুটেছে। আতঙ্কে থরহরিকম্প আলিপুরদুয়ারের গেরগ্যান্ডা, ধুপচি, রামঝোড়া, তুলসিঝোড়া চা বাগানের বাসিন্দারা। কখনও ছাগল, কখনও বাছুর, এমনকি ঘর থেকে ৩ মাসের শিশুকন্যাকেও তুলে নিয়ে গেছে চিতাবাঘ। পরদিন সকালে চা বাগানে মিলেছে শিশুকন্যার খুবলে খাওয়া দেহ। ইতিমধ্যেই নরখাদক এই চিতাবাঘের আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন। বিগত কয়েক মাস কার্যত রাতের ঘুম ছুটেছে এই অঞ্চলের মানুষগুলোর। এই পরিস্থিতিতে নরঘাতক ওই চিতাবাঘের মৃত্যু পরোয়ানায় সই করলেন প্রধান মুখ্য বনপাল বন্যপ্রাণ রবিকান্ত সিনহা।

নরখাদক চিতাবাঘের উদ্দেশে 'এলিমেশন অ্যান্ড এক্সট্র্যাকশন ফ্রম ল্যান্ডস্কেপ' অর্ডার জারি করেছেন রবিকান্ত সিনহা। এর অর্থ একটাই, নরঘাতক ওই চিতাবাঘকে যদি জ্যান্ত ধরা সম্ভব না হয়, তবে তাকে গুলি করা যাবে। এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে সিসিএফ (চিফ কনজারভেটর অফ ফরেস্ট) নর্থ উজ্জ্বল ঘোষ জানিয়েছেন, অর্ডারের চিঠি এখনও তাঁর হাতে এসে পৌঁছয়নি। প্রথমে তাঁরা চিতবাঘটিকে ধরার-ই চেষ্টা করবেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৮-র ২ নভেম্বর মহারাষ্ট্রের যাভতমলে গুলি করে হত্যা করা হয় নরখাদক অবনিকে। তারপরই উসকে ওঠে একাধিক বিতর্ক। একদিকে অবনিকে গুলি করে মারা নিয়ে যখন বিতর্ক জারি,  অন্যদিকে তার মধ্যেই এবার আলিপুরদুয়ারের চা বাগান এলাকার ত্রাস চিতাবাঘের জন্য জারি হল 'এলিমেশন অ্যান্ড এক্সট্র্যাকশন ফ্রম ল্যান্ডস্কেপ' অর্ডার। মৃত্যু পরোয়ানায় সই করলেন প্রধান মুখ্য বনপাল বন্যপ্রাণ রবিকান্ত সিনহা। উল্লেখ্য, রাজ্যে এই প্রথম কোনও চিতাবাঘের জন্য এই অর্ডার জারি হল। এর আগে 'মৃত্যুদূত' এক হাতির জন্য এই অর্ডার জারি হয়েছিল রাজ্যে। কয়েক বছর আগে  জারি হয়েছিল সেই অর্ডার।

আরও পড়ুন, আরও সুপারফাস্ট হচ্ছে রাজধানী! কলকাতা থেকে দিল্লি পৌঁছবেন আরও তাড়াতাড়ি

আলিপুরদুয়ারের চা বাগান এলাকায় নরঘাতক এই চিতাবাঘের আক্রমণে ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন ৩ জন। আহতের সংখ্যা ৪। ডিসেম্বর মাসে চিতাবাঘটির আক্রমণে রামঝোড়া চা বাগানে প্রাণ হারান অঙ্কিল ওরাও। ডিসেম্বরেই ধুমচিপাড়া চা বাগানে ইডেন নায়েক বলে আরও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় চিতাবাঘটির আক্রমণে। সম্প্রতি ৩ বছরের এক শিশুকন্যাকে চিতাবাঘটি ঘর থেকে তুলে নিয়ে যায়। উত্তেজিত গ্রামবাসী সেই ঘটনায় বন দফতরের গাড়িতে ভাঙচুর করে। তারপর থেকেই চিতাবাঘটির সন্ধানে জোরকদমে শুরু হয় খোঁজ।  

চিতাবাঘকে ধরার জন্য চা বাগানে পাতা খাঁচা

বন দফতর সূত্রে খবর, চিতাবাঘটি একটি পূর্ণবয়স্ক পুরুষ চিতাবাঘ। চিতাবাঘটিকে ধরার জন্য বহুবার বহু জায়গায় খাঁচা পাতা হয়। কিন্তু চিতাবাঘটি ধরা পড়েনি। এরপরই চিতাবাঘটির 'এলিমেশন অ্যান্ড এক্সট্র্যাকশন ফ্রম ল্যান্ডস্কেপ'-এর জন্য আবেদন করেন সিসিএফ নর্থ উজ্জ্বল ঘোষ। সেই আবেদনের ভিত্তিতেই অর্ডার দিলেন প্রধান মুখ্য বনপাল বন্যপ্রাণ ওয়ার্ডেন রবিকান্ত সিনহা।

.