১৭০ কিমি পথ গ্রিন করিডর, মধুস্মিতার অঙ্গে নতুন জীবন সঞ্জীত, মিঠুন, অভিষেকদের
গত ষোলোই নভেম্বর দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ব্রেন ডেথ হয় বছর তেরোর মধুস্মিতা বায়নের।
নিজস্ব প্রতিবেদন: অঙ্গপ্রতিস্থাপনে নয়া নজির। দুর্গাপুর থেকে ১৭০ কিলোমিটার পথ গ্রিন করিডর করে কলকাতায় আনা হল মধুস্মিতার অঙ্গ ।
মিশন হাসপাতালের সামনে থেকে তৈরি করা হয়েছিল গ্রিন করিডর । সেখান থেকে ইমনকল্যাণ সরণির পনেরোশো মোড়ের ডানদিকে ঘুরে শাস্ত্রী অ্যাভিনিউ, মুচিপাড়া হয়ে দু নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে পানাগড় বাইপাস। সেখান থেকে বর্ধমান বাইপাস ধরে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে এসএসকেএম হাসপাতাল। অঙ্গদানে দীর্ঘতম গ্রিন করিডর। সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ দুর্গাপুর থেকে রওনা দেয় চিকিত্সক দল। রাত ন'টা চল্লিশ নাগাদ এসএসকেএমে পৌছন তাঁরা। রবিবার রাতেই গ্রহীতাদের শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয় কিডনি, লিভার ও কর্নিয়া । মধুস্মিতার লিভার পেয়েছেন বারাকপুরের বাসিন্দা সঞ্জীত বালার শরীরে।
গত ষোলোই নভেম্বর দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ব্রেন ডেথ হয় বছর তেরোর মধুস্মিতা বায়নের। আদতে অসমের বাসিন্দা মধুস্মিতার বাবা দিলীপ বায়ন বাঁকুড়ার মেজিয়ায় সিআইএসএফে কর্মরত। চার বছর থেকে মেজিয়ার বাসিন্দা বায়ন পরিবার। দেড় বছর বয়স থেকেই অসুস্থ মধুস্মিতা। ভালভাবে হাঁটতে চলতে এমনকি কথাও বলতে পারত না সে। বিভিন্ন জায়গায় চিকিত্সার পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতেও তাকে নিয়ে যায় পরিবার। বারোই নভেম্বর দুর্গাপুর মিশন হাসপাতালে ভর্তি হয় মধুস্মিতা। ষোলোই নভেম্বর ব্রেন ডেথ হয় তার। এরপরেই অঙ্গদানের চিন্তাভাবনা শুরু করে পরিবার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কথা বলেন এসএসকেএমে। তারপরই মধুস্মিতার অঙ্গ গ্রিন করিডরে আনা হয় কলকাতায়। মধুস্মিতার কিডনি পেলেন মিঠুন দালাল ও অভিষেক মিশ্র।
রাত ১০টা নাগাদ অঙ্গদানকারী মধুস্মিতা বায়েনের দেহ পৌঁছয় বাড়িতে। মধুস্মিতা দেহ আবাসনে পৌছতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে তাঁর পরিবার। সিআইএসএফের পক্ষ থেকে মধুস্মিতার মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। মধুস্মিতার মধ্যে দিয়েই রাজ্যে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের নয়া নজির গড়ল।