Coromandel Express Accident: রেলের প্রকল্প উদ্বোধনে সবুজ ঝান্ডা নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন, দুর্ঘটনা হলে দায় নেবে কে, কাকে নিশানা অভিষেকের

Coromandel Express Accident: এতবড় দুর্ঘটনার দায় কার? অভিষেক বলেন, এই যে নির্মম দুর্ঘটনা, যে নিরাপরাধ লোকগুলো মারা গেল তার দায় তো কাউকে নিতে হবে? এটাই দুঃখের যে অ্যান্টি কোলিসন ডিভাইস যেটা রেলের তরফে বারবার বলা হয় তার ভূমিকা কী? কিছু দিন আগে রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব দুটি ট্রেন নিয়ে দেখিয়েছেন দুর্ঘটনার আগে দুটি ট্রেন থেমে যাবে

Updated By: Jun 3, 2023, 10:56 PM IST
Coromandel Express Accident: রেলের প্রকল্প উদ্বোধনে সবুজ ঝান্ডা নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন, দুর্ঘটনা হলে দায় নেবে কে, কাকে নিশানা অভিষেকের

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ওড়িশার বালাসোর করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ২৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। সময় যত গড়াচ্ছে মৃতের সংখ্যা ততই বাড়ছে। ঘটনাস্থল ঘুরে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। হাসপাতালে আহতদেরও দেখতে যান প্রধানমন্ত্রী। চারদিকে ধ্বংস্তূপের ছবি, পচা গন্ধ ভরে উঠেছে চারদিক। এনিয়ে রেলমন্ত্রক ও প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করলেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়।

আরও পড়ুন-হিউম্যান এরর! করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ভয়ংকর দুর্ঘটনার তদন্তে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এখনওপর্যন্ত যে খবর পাওয়া গিয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে ২৮০ জনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রায় এক হাজার জন আহত। সংবাদমাধ্যমে দুর্ঘটনার যে ছবি দেথা যাচ্ছে তা শিউরে ওঠার মতো। গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে কেটে দেহ বের করা হচ্ছে। ওড়িশা, বাংলা ও কেন্দ্র সরকারের এখন লক্ষ্য হওয়া উচিত আহতদের চিকিত্সার ব্যবস্থা করা ও নিহতদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো। আপনারা দেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন, রাজ্য সরকারের তরফে কন্ট্রোল রুম খুলে রেসকিউয়ের কাজ ইতিমধ্যেই চলছে। ওড়িশা সরকারেও উদ্ধোরের চেষ্টা করছে। 

এতবড় দুর্ঘটনার দায় কার? অভিষেক বলেন, এই যে নির্মম দুর্ঘটনা, যে নিরাপরাধ লোকগুলো মারা গেল তার দায় তো কাউকে নিতে হবে? এটাই দুঃখের যে অ্যান্টি কোলিসন ডিভাইস যেটা রেলের তরফে বারবার বলা হয় তার ভূমিকা কী? কিছু দিন আগে রেল মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব দুটি ট্রেন নিয়ে দেখিয়েছেন দুর্ঘটনার আগে দুটি ট্রেন থেমে যাবে। পরবর্তীকালে প্রধানমন্ত্রী এনিয়ে বলেছিলেন। নাম দিয়েছিলেন কবচ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন তখন আর্থিক বরাদ্দ করেছিলেন এই অ্যান্টি কোলিসন ডিভাইস বাসনোর জন্য। আজও আমরা ভাবি রেলযাত্রা নিরাপদ। কিন্তু এই যে অ্যান্টি কোলিসন ডিভাইস নিয়ে এত কথা প্রচার করা হয় তা যদি এইসব ট্রেনে থাকতো তাহলে ট্রগুলি একে অপরের উপরে উঠে যেত না। চারদিকে তাকালে বগি আর বগি। একেবারে ধ্বংসস্তূপ। এই ঘটনাটি যদি ঘন্টা দুয়েক পরে ঘটত তাহলে কমপক্ষে ১ হাজার মানুষ মারা যেত। সন্ধে সাড়ে ছটার সময়ে সবাই লোয়ার টায়ারে থাকে। একটু দেরিতে ২ ঘণ্টা পরে হলে মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারত। ঘটনার পরে রেলের তরফে কোনও নির্দেশিকা যাত্রীদের দেওয়া হয়নি। যারা পেছনের দিকের বগিতে ছিলেন তাদের কথা শুনলে বুঝতে পারবেন রেলের তরফে আধিকারিকদেরা গিয়ে তাদের উদ্ধারের চেষ্টা করেননি। এটা অত্য়ান্ত দুর্ভাগ্যজনক। এই যে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার কথা বলা হচ্ছে, কোটি কোটি টাকা খরচ করে নতুন সংসদ ভবন তৈরি হচ্ছে, নতুন ভারতের কথা বলা হচ্ছে সেখানে মানুষের জীবনের মূল্য নেই। কিন্তু কয়েক কোটি টাকা খরচ করে অ্য়ান্টি কোলিসন ডিভাইস ব্যবহারের মানসিকতা নেই। 

বন্দে ভারতের উদ্বোধন করা হল তাড়াহুড়ো করে। তিন মাস, ছমাসের মধ্যে রেল স্টেশনগুলোর উদ্বোধন করে দেওয়া হচ্ছে। ঝড়ে বন্দে ভারতের বনেট ভেঙে যাচ্ছে। আয়লা, আমপানমের মতো ঝড় নয়, ৬০ কিলোমিটার বেগের মোকাতে বনেট ভেঙে যাচ্ছে। বন্দে ভারত ট্রেন যারা করেছে, যারা বলছে ভারত উন্নত থেকে উন্নততর হচ্ছে তার একটা ছেট্টো উদাহরণ কাল দেখলাম। ২০১৪ সাল থেকে মোদী সরকার ক্ষমতায়। গত ২ দশকের মধ্যে এতবড় দুর্ঘটনা আমরা দেখিনি। তাকানো যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী বলছেন কবচ করে দেওয়া হয়েছে। তা যদি থাকতো তাহলে কি এরকম দুর্ঘটনা ঘটতো? এর দায় কার? কৃষি আইন, অপরিকল্পিত লকডাউন-এত মানুষ মারা গেল এর দায় কার? নোটবন্দির কারণ বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হল। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার দায় থেকে তো প্রধানমন্ত্রী বা কেন্দ্র সরকার এড়িয়ে যেতে পারেন না। আপনাদের আমার অনুরোধ, ভোটের জন্য সবকিছুতে রাজনীতি করবেন না । দু বছরে কাজ ৬ মাসে করে ফেলা হচ্ছে। মানুষের সুরক্ষার কথা ভাবলে আহতদের আগে চিকিত্সা দেওয়া যেত। প্রধানমন্ত্রী এখনও ঘটনাস্থলে এসে পৌংছাননি। উনি যখন রেলের প্রকল্পের উদ্বোধন করেন তখন আগে সবুজ ঝান্ডা নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন। যখন মানুষ মারা যান তখন কেন দায় এড়ি়য়ে যান? বন্দে ভারত আপনি করেছেন, তার কৃতিত্ব আপনি নিয়েছেন। কিন্তু এই যে ২৮০ জন মারা গেল তার পেছনে যে ত্রুটি তার দায়ও আপনার। এই ঘটনা থেকে রেলমন্ত্রক ও কেন্দ্রের শিক্ষা নেওয়া উচিত। দরকার হলে কমিশন গঠন করে তদন্ত করা উচিত। এটা সুনিশ্চিত করতে হবে।

অভিষেক আরও বলেন, একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেব আজ আমার কয়েকটি রাজনৈতিক কর্মসূচি ছিল। আপনারা দেখেছেন আজকের কর্মসূচিতে মাইক বাজানো হয়নি, স্লোগান দেওয়া হয়নি। সাধারণ মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়েছিল তাদের প্রণাম করে আমরা আমাদের কর্মসূচি বাতিল করেছি। শ্যামপুর ও পাঁচলায় কর্মসূচি ছিল সেখানে ১-২ মিনিটের জন্য শোক জ্ঞাপন করে কর্মসূচি শেষ করব। প্রধানমন্ত্রী নিজের সুরক্ষার কথা ভাববেন আর সাধারণ মানুষের কথা ভাববেন না তা হয় না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কখনও ট্রেনে চড়তে দেখেছেন? সাধারণ মানুষের কথা কে ভাববে? আমরা মনে হয় রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত।

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

.