Coromandel Express Accident: 'ট্রেনের তলায় ছুটছে আগুন! নামতে গিয়ে দেখি পাদানি নেই, রেললাইন উঠে গিয়েছে উপরে'...
Coromandel Express Accident: চারিদিকে শুধু হাহাকার আর কান্না আর মৃত্যু! ট্রেনের কুড়িটা বগি লাইনচ্যুত। সামনের দিকের বগিগুলি একটি অপরের উপরে উঠে গিয়েছে। কিন্তু সেই ট্রেন থেকেই বেঁচে ফিরলেন উত্তরপাড়ার দম্পতি। আশ্চর্য!
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ট্রেনের কুড়িটা বগি লাইনচ্যুত, সামনের দিকের বগিগুলি একটি অপরের উপরে উঠে গিয়েছে। চারিদিকে শুধু হাহাকার আর কান্না আর মৃত্যু! করমণ্ডল এক্সপ্রেসের পিছনের দিকে কুড়ি নম্বর বগিতে থাকায় বেঁচে ফিরলেন উত্তরপাড়ার দম্পতি। এ-২ কোচের যাত্রী ছিলেন উত্তরপাড়া ধানকল গলির বাসিন্দা দেবাশিস দত্ত ও বনশ্রী দত্ত। ছেলে নিলীমেশ চেন্নাইয়ে কর্মরত। ছেলের কাছেই যাচ্ছিলেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: Coromandel Express Accident: বাড়ি ফেরার ট্রেন ধরেছিলেন, শেষ পর্যন্ত ফেরা হল না সাগরের...
দেবাশিসবাবু স্বয়ং প্রাক্তন রেলকর্মী। তিনি জানান, পিছন দিক থেকে তিন নম্বর বগি সামনের দিক থেকে কুড়ি নম্বর এ-২ এসি বগি। সেই বগিতেই ছিলেন তাঁরা। সন্ধে সাতটা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। এর আগে ট্রেনটি শেষবারের মতো দাঁড়িয়েছিল বালাসোর স্টেশনে। দুর্ঘটনাস্থল বালাসোর থেকে ২৫ কিমি দূরে। দেবাশিস বলছেন, হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ, প্রচণ্ড ঝাঁকুনি। ট্রেনের চাকা রেলট্র্যাক থেকে নেমে কংক্রিট স্লিপারের উপর দিয়ে ছুটতে শুরু করেছে! ট্রেনের কামরার ভিতরে তখন পরিত্রাহি চিৎকার। পাওয়ার অফ হয়ে গিয়েছে। ট্রেন থামতেই স্ত্রীকে নিয়ে নেমে পড়েন দেবাশিসবাবু। অন্ধকারে কিছু দেখা যাচ্ছিল না। দেবাশিস বুঝতে পারেন, খুব বড় মাপের দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। তবে কপালজোরে তাঁরা বেঁচে গিয়েছেন। দুর্ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা হেঁটে একটি রেলগেট দেখতে পান তাঁরা। সেখান থেকে আরও এক কিমি হেঁটে হাইরোডে পৌঁছে একটা বাস পেয়ে যান তাঁরা। সেই বাসে করেই বাবুঘাটে ফেরেন ভোর পাঁচটায়। তারপর সেখান থেকে উত্তরপাড়ায়।
বনশ্রী দত্ত বলেন, একটা দুঃস্বপ্নের রাত! আমি যে বেঁচে আছি, সেটা ভেবেই অবাক লাগছে। ট্রেন দুর্ঘটনার পর দেখলাম আগুন ছুটেছে ট্রেনের তলা দিয়ে! থামার পরে গেট খুলে নামতে যাব, দেখি পাদানি নেই। রেললাইন উপরে উঠে গিয়েছে।
দত্ত দম্পতি জানান, কিছুক্ষণ পরেই স্থানীয়রা আসেন, আসে রেসকিউ টিম অ্যাম্বুল্যান্সও। আমরা কোনও রকমে ঝোপঝাড় মাঠ পেরিয়ে কলকাতার বাসে উঠি। স্থানীয়রা খুব সাহায্য করেছেন, জল দিয়েছেন, লাগেজ নিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন। তবে এখনও সেই দুঃস্বপ্ন কাটছে না।
দুর্ঘটনার পরই একাধিক হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। হাওড়ার হেল্পলাইন নম্বর - ০৩৩ ২৬৩৮২২১৭, খড়গপুরের হেল্পলাইন নম্বর - ৮৯৭২০৭৩৯২৫, ৯৩৩২৩৯২৩৩৯, বালেশ্বরের হেল্পলাইন নম্বর - ৮২৪৯৫৯১৫৫৯, ৭৯৭৮৪১৮৩২২, শালিমারের হেল্পলাইন নম্বর - ৯৯০৩৩৭০৭৪৬, চেন্নাইয়ের হেল্পলাইন নম্বর - ০৪৪ ২৫৩৩০৯৫২/০৪৪-২৫৩৩০৯৫৩/০৪৪-২৫৩৫৪৭৭১, ভদ্রক- ৮৪৫৫৮৮৯৯০০, কেওনঝড় রোড- ৮৪৫৫৮৮৯৯০৬, কটক- ৮৪৫৫৮৮৯৯১৭, ভুবনেশ্বর- ৮৪৫৫৮৮৯৯২২, খুরদা রোড- ৬৩৭০১০৮০৪৬।