গাছের গুঁড়িতে 'হেলান দিয়ে বসে' নগ্ন শরীরটা! কাছে যেতেই চমকে উঠল এলাকাবাসী
মৃতদেহের পাশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে সবুজ রঙের কাঁচের চুড়ির টুকরো, ১০ টাকার নোট, এমনকি একটি আধ খাওয়া আপেলও।
নিজস্ব প্রতিবেদন : গাছের নীচে হেলান দিয়ে বসে ছোট্ট শরীরটা! কিন্তু কোনও সাড়াশব্দ নেই। গলায় ওড়নায় ফাঁস। তারপর তা গাছের গুঁড়ির সঙ্গে পেঁচিয়ে বাঁধা। সাতসকালে এমন দৃশ্য দেখে শিউরে উঠলেন উত্তর দিনাজপুরের রায়পাড়ার মানুষ। দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রকে নৃশংসভাবে খুনের অভিযোগে এদিন ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল রায়পাড়ায়। পুলিস সুপারের অফিসের ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে শনিবার ভোরে উদ্ধার হয় দেহটি।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র দেবুকে শুক্রবার সন্ধ্যায় শেষ এলাকায় দেখা যায়। তারপর থেকেই তার আর কোনও খোঁজ মিলছিল না। বাড়িতে মায়ের সঙ্গেই থাকত দেবু। বাবা পেশায় শ্রমিক। কাজের জন্য বেশ কিছুদিন ধরেই বাইরে রয়েছেন তিনি। ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে রাতেই এলাকায় খোঁজ শুরু করেন মা বিমলা দেবী। কিন্তু খোঁজ মেলেনি।
আরও পড়ুন, গলায় বরমাল্য, সিঁথি রাঙা সিঁদুরে, 'দেবদূত' বিষ্ণুর চোখে চোখ রেখে বিভোর মাম
প্রসঙ্গত, শুক্রবার রাতেই ছিল মনসা পুজা। এলাকার প্রায় প্রতি ঘরেই পুজো হয়। তাই পুজো দেখতে এলাকারই হয়তো কোনও বাড়িতে রয়ে গেছে ছেলে। স্থানীয়রা এমনই আশ্বাস দেন বিমলা দেবীকে। স্থানীয়দের কাছ থেকে এমন আশ্বাস পাওয়ার পরই বাড়ি ফিরে যান বিমলা। এরপরই এদিন ভোরে ঘাস কাটতে গিয়ে ধানক্ষেত লাগোয়া একটি গাছের নীচে দেবুর দেহ দেখতে পান স্থানীয় এক মহিলা।
জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ছুটে আসে এলাকার সব মানুষ। দেখা যায়, কেউ বা কারা নৃশংসভাবে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে দেবুকে। গাছের গুঁড়ির সঙ্গে ফাঁস দিয়ে খুন করা হয়েছে। গাছের গোড়ায় হেলান দিয়ে পড়ে রয়েছে ছোট্ট দেবুর নগ্ন দেহ। আর মৃতদেহের পাশেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে সবুজ রঙের কাঁচের চুড়ির টুকরো, ১০ টাকার নোট, এমনকি একটি আধ খাওয়া আপেলও।
আরও পড়ুন, "ওরাও ফেলনা নয়", 'লক্ষ্মী'কে বিয়ে করে গর্বিত রাজীব
উল্লেখ্য, স্থানীয় মহিলারা শ্রাবন মাসে হাতে সবুজ কাঁচের চুড়ি পরে থাকেন। এখন মৃতদেহের পাশ থেকে সবুজ রঙেরই কাঁচের চুড়ির চুকরো মেলায় দানা বেঁধেছে সন্দেহ। এই খুনের পিছনে কি তন্ত্রসাধনার কোনও যোগসাজশ আছে? না কি বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গোপন রাখতেই খুন? খুনের কারণ ঘিরে ধন্দে পুলিস। উত্তর খুঁজতে তদন্ত শুরু করেছেন জেলা পুলিস আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন, প্রেম করে বিয়ের ৬ মাসের দাম্পত্যেই চুরমার স্বপ্ন, পরিণতি মর্মান্তিক
ছোট্ট দেবুকে খুনের ঘটনায় সন্দেহের ঊর্ধ্বে নন মা বিমলাদেবীও। তাঁর দু'হাতে ৪টে চুড়িটি থাকাতেই পুলিসের সন্দেহে তির গিয়ে পড়েছে দেবুর মায়ের দিকে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাঁকেও। অন্যদিকে, মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিস।