Al Queada Member Arrested: দাদপুরে মামারবাড়িতেই লুকিয়ে ছিল সন্দেহভাজন আল কায়দা জঙ্গি, গ্রেফতার করল এসটিএফ
Al Queada Member Arrested: গত বছর ১৭ অগাস্ট শাসনের খড়িবাড়ির একটি গ্রাম থেকে সন্দহভাজন ২ জঙ্গিকে গ্রেফতার করে এসটিএফ। এদের নাম আব্দুর রাকিব সরকার ও কাজি আহসানউল্লাহ। দুজনেই একিউআইএসের সদস্য। এদিন রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয় খড়িবাড়ি থেকে
পিয়ালি মিত্র ও বিধান সরকার: এসটিএফের বড় সাফল্য। হুগলির দাদপুর থেকে গ্রেফতার হল সন্দেহভাজন আল কায়দা জঙ্গি। মঙ্গলবার সকালে ওই যুবককে দাদপুর থেকে গ্রেফতার করে এসটিএফ। শাসন থানার খড়িবাড়ির একটি মামলার সূত্র ধরে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই যুবককে। এমনটাই এসটিএফ সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন-ফোন পেয়েই বেরিয়ে গিয়েছিল দশম শ্রেণির ছাত্রী, সকালে বাড়ির ফোনে এল লাশের ছবি
ধৃত ওই যুবকের নাম সেখ নাসিমুদ্দিন(৩১)। বাড়ি মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের শেরপুর গ্রামে। নাসিমুদ্দিন আল কায়দা অব ইন্ডিয়ান সাব কন্টিন্যান্টের(AQIS) সদস্য বলে মনে করা হচ্ছে। হুগলির দাদপুরের আমিনা গ্রামে তার মামার বাড়ি। সেখানেই সেখানেই ছিল সে। আজ সকালে সেখানে হানা দিয়ে তাকে গ্রেফতার করে এসটিএফ। গতবছর অগাস্ট মাসে উত্তর ২৪ পরগনার শাসনে ২ সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করে এসটিএফ। সেই মামলাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে নাসিমুদ্দিনকে। অভিযোগ, আল কায়দায় মতাদর্শ প্রচার করতো সে। গত এক বছর পলাতক ছিল।
অসুস্থ দিদিমাকে দেখতে গত রবিবার বিকাল পাঁচটা নাগাদ দাদপুরে আসেন নাসিম। আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটা নাগাদ সবাই যখন ঘুমিয়ে আমরা গ্রামে ঢোকে পুলিসের গাড়ি। দরজায় কড়া নাড়ে এসটিএফ। নাসিমের মামা গোলাম মোস্তাফা জানান, দরজা খুলতেই তার হাত ধরে এসটিএফ বলে, নাসিম কোথায়। দোতলার ঘরে তখন ঘুমিয়ে ছিলেন নাসিম। মামা তার ঘরে নিয়ে যায়। দরজা খুলতেই গ্রেফতার করে নাসিমকে। এর পর বাড়িতেই কিছুক্ষন জিজ্ঞাসাবাদ। পরে দাদপুর থানায় নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে এরেস্ট মেমোতে সই করিয়ে কলকাতায় নিয়ে যায় তাকে।
গোলাম মোস্তাফা বলেন,ভাগ্না হাফিজ মৌলানা পাশ করে ক্বারী পড়ছিল পাঁশকুড়ায়। মাঝে মধ্যে আসত আমরায়। দিদিমার শরীর খারাপ শুনে এসেছিল। পুলিস আধিকারিক যারা এসেছিলেন তারা বললেন, ভাগ্না জেহাদি কাজে যুক্ত। ওরা মইনুদ্দিন নামে কাউকে চেনে কিনা জিজ্ঞাসা করছিল। ভাগ্না বলেছিল সে এমন কোনও কাজে যুক্ত না। আমরাও অবাক।
আমরা গ্রামের বাসিন্দা গোলাম মোস্তাফার প্রতিবেশীরাও ঘটনায় হতবাক। নাসিমকে পাড়ার অনেকেই ভাগ্না বলে ডাকেন। মনিরুল ইসলাম মন্ডল বলেন, নাসিম পড়াশোনায় খুব ভালো ছিল। আজ পুলিস এসে তাকে ধরে নিয়ে গেল। শুনলাম জঙ্গি কাজে নাকি যুক্ত। ভাবতে পারছি না। গ্রামবাসী প্রশান্ত ঘোষ বলেন, কার মনে কি আছে বোঝা দায়। শুনলাম পুলিস এসে ধরে নিয়ে গেছে। কে বলছে জঙ্গি সংগঠনে যুক্ত ছিল আবার কেউ বলছে অন্য কোনও অপরাধ করেছে। আমরা ঠিক জানি না। তবে সত্যি যদি কোন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকে তার কর্মফল পাবে।
উল্লেখ্য, গত বছর ১৭ অগাস্ট শাসনের খড়িবাড়ির একটি গ্রাম থেকে সন্দহভাজন ২ জঙ্গিকে গ্রেফতার করে এসটিএফ। এদের নাম আব্দুর রাকিব সরকার ও কাজি আহসানউল্লাহ। দুজনেই একিউআইএসের সদস্য। এদিন রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয় খড়িবাড়ি থেকে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতায় জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। আবদুর রকিব সরকারের বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে। অন্যদিকে, কাজি আহসানউল্লাহ ওরফে হাসানের বাড়ি হুগলি জেলার আরামবাগ থানার সামতা কাজিপাড়ায়। দুজনের বাড়ির লোকই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তাদের ছেলে কোনও নাশকতার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে।
সংবাদমাধ্যমে রকিবের খবর ছড়িয়ে পড়তেই তার বাড়িতে ভিড় করেন গ্রামের লোকজন। গ্রামবাসীদের অনেকেরই বক্তব্য, একেবারে সাদামাটা ছেলে রকিব, গ্রামের প্রতিটি কাজ হাত লাগাত। সবার সাহায্যে এগিয়ে আসত। তার কথা থেকেও কিছু বোঝা যায়নি। সে-ই যে এমন কাণ্ড করতে পারে ভাবতেই পারছেন না।
অন্যদিকে, কাজি আহসানউল্লাহ ওরফে হাসানের গ্রামেও একই চিত্র। গ্রামের কেউই বিশ্বাস করতে পারছেন না হাসান এমন কাজ করতে পারে। সামতা কাজিপাড়ায় এহসানের বাড়ি একেবারে গ্রামের শেষপ্রান্তে। বাড়িতে থাকেন একমাত্র বৃদ্ধা মা। তিন ভাই ও এক বোন কেউই থাকেন না মায়ের সঙ্গে। হাসানের বাবা কর্মসূত্রে থাকেন বর্ধমানে। ছেলের কথা জিজ্ঞাসা করতে হাসানের মা ফরিদা বিবি জানান, বিয়ের পর থেকেই হাসান কলকাতাতেই থাকতো। বাড়িতে খুব একটা আসতো না। কিছুদিন টিউশন পড়াতো। এখন পুরনো গাড়ির ব্যবসা করে বলে শুনেছি। যোগাযোগ সেই ভাবে নেই। মাঝে মধ্যে আসতো গ্রামে। এবারেও পরবে বাড়ি এসেছিল। তার পর আর আসেনি। ছেলে যদি এমন কাজ করে থাকে তাহলে আমরা আর কী করতে পারি! আইন অনুয়ায়ী তার শাস্তি হবে।