ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে লোন উল্ফ নিয়োগ করে রেস্তোরাঁ, সিনেমা হল, থিয়েটার, বাজারে হামলার ছক আল-কায়দার!
ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমেই চলত জঙ্গি সংগঠনে নিয়োগ। সোর্স কোডের মাধ্যমে অডিও ক্লিপ পাঠিয়ে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হত।
নিজস্ব প্রতিবেদন : রাজ্য থেকে ধৃত ৬ জন আল-কায়দা জঙ্গি। এই প্রথম সরাসরি আল-কায়দা যোগে রাজ্য থেকে গ্রেফতার জঙ্গি। সরাসরি এরাজ্যের ভূমিপুত্রদেরই নিয়োগ করেছে আল-কায়দা। ধৃত ৬ জঙ্গির সকলেই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। NIA সূত্রে খবর, দিল্লি সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলার ছক কষেছিল এই ধৃতরা। NIA-র অভিযানে আল-কায়দার নেটওয়ার্ক ফাঁস হওয়ার ঘটনায় রাজ্যজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ওয়াকিবহল মহলের আশঙ্কা, NIA-র তদন্তে 'কেঁচো খুঁড়তে আরও কেউটে' বেরতে পারে।
প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, ধৃত জঙ্গিরা ডার্ক ওয়েব ব্যবহার করত। ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমেই একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করত। পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি কথা হত ধৃত জঙ্গিদের। ধৃতদের কাছ থেকে ৪টে পাকিস্তানের সিম উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা। জানা গিয়েছে, নাশকতার পরিকল্পনা, টাকা লেনদেন, লজিস্টিক লেনদেন সবই চলত এই ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে। ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমেই চলত জঙ্গি সংগঠনে নিয়োগ। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যাবহার করে জঙ্গি মতাদর্শ ছড়িয়ে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হত। প্রভাবিত হয়ে গেলেই তারপর সরাসরি জঙ্গি সংগঠনে নিয়োগ করা হত সেইসব যুবকদের।
তদন্তে আরও উঠে এসেছে, এরা সবাই ছিল লোন উল্ফ। অর্থাত একক হামলাকারী। একবার কাউকে লোন উল্ফ বানানো হয়ে গেলে তারপর আসতে শুরু করত নির্দেশনামা। আইডি থেকে আরম্ভ করে বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরকের মালমশলা কোথায় পাওয়া যায়, কোথা থেকে কিনবে, কোথায় পাঠাবে তার সব নির্দেশ আসত ডার্ক ওয়েবের মাধ্য়মে। ডার্ক ওয়েবের সুবিধা হল, এটা এনক্রিপ্টেড প্ল্যাটফর্ম। ফলে এর মাধ্যমে আসা নির্দেশ আইডেন্টিফাই করা যায় না বা ট্রেস করা যায় না। সোর্স কোডের মাধ্যমে অডিও ক্লিপ পাঠিয়ে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হত।
ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে জঙ্গি সংগঠনের এভাবে লোন উল্ফ নিয়োগই দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে গোয়েন্দাদের। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনি হয়তো জানেনই না যে আপনার পাড়ার ছেলেটিই জঙ্গি! বা আপনার পাশের বাড়িতেই হয়তো জঙ্গি কার্যকলাপ চলছে। তাঁরা আরও বলছেন, বিদেশের ধাঁচে এরাজ্যে-এদেশেও এবার লোন উল্ফ কায়দায় হামলার ছক কষেছিল জঙ্গি সংগঠনগুলো। এটা সত্যিই ভয়াবহ দুশ্চিন্তার বিষয়। এই লোন উল্ফদের করাচি থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল। নির্দেশ আসামাত্রই এই লোন উল্ফরা স্থানীয় থিয়েটার, সিনেমা হল, রেস্তোরাঁ বা বাজারে হামলা চালাত। একেবারে বড় টার্গেট নয়, ছোট ছোট টার্গেট করে হামলার মাধ্যমে মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরিই এদের মুখ্য উদ্দেশ্য।
NIA সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের ডোমকল ও জলঙ্গি থেকে ধৃত ৬ আল-কায়দা জঙ্গিকে আজই আদালতে পেশ করা হবে। আদালতে পেশের পর ধৃতদের ট্রানজিট রিমান্ডে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হবে। ৪ দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন, 'ছেলে ধর্ম নিয়ে বেশি থাকত, তাই বলে আল-কায়দা জঙ্গি!', মানতে পারছে না বিস্ময়ে হতবাক মা