WT20: জৈব বলয় নিয়ে 'ভাঙা রেকর্ড' বাজিয়ে Don Bradman-কে টানলেন Ravi Shastri!

বিদায়বেলায় শাস্ত্রীয় অজুহাত। ফের জৈব বলয়ের দিকে আঙুল। 

Updated By: Nov 9, 2021, 02:58 PM IST
WT20: জৈব বলয় নিয়ে 'ভাঙা রেকর্ড' বাজিয়ে Don Bradman-কে টানলেন Ravi Shastri!
বিদায়বেলায় একে অপরকে জড়িয়ে রয়েছেন রবি শাস্ত্রী ও বিরাট কোহলি। ছবি: টুইটার

নিজস্ব প্রতিবেদন: বিদায়বেলায়তেও অজুহাত দিলেন রবি শাস্ত্রী (Ravi Shastri)। এ বার অজুহাত দিতে গিয়ে তো স্যার ডন ব্র্যাডম্যানকেও (Sir Don Bradman) টেনে নিয়ে আনলেন  ভারতের সদ্য বিদায়ী হেড কোচ। চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের (WT20) লিগ পর্ব থেকে ইতিমধ্যেই বিদায় নিয়েছে তারকাখচিত টিম ইন্ডিয়া (Team India)। শেষ তিন ম্যাচে অপেক্ষাকৃত দুর্বল আফগানিস্তান, স্কটল্যান্ড ও নামিবিয়াকে হেলায় হারালেও শেষ রক্ষা হয়নি। কারণ পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডের কাছে বড় ব্যবধানে লজ্জাজনক হারের জন্য অনেক আগেই ভেন্টিলেশনে চলে গিয়েছিল বিরাট কোহলির (Virat Kohli) দল। আর সেই দুটি কঠিন ম্যাচ হারের পর থেকেই নিয়ম করে জৈব বলয়কে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্ট। এবং শেষ দিনেও 'ভাঙা রেকর্ড' বাজিয়ে সেই ধারা বজায় রাখল ভারত! 

নামিবিয়ার বিরুদ্ধে ৯ উইকেটে জয়ের পর সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছিলেন শাস্ত্রী। সেখানেও সেই এক ভাঙা রেকর্ড বাজালেন এই প্রাক্তন অলরাউন্ডার। অজুহাত দিয়ে শাস্ত্রী বলেন, "গত ছয় মাস আমাদের দল জৈব বলয়ের মধ্যে রয়েছে। একটার পর একটা সিরিজের জন্য মাসের পর মাস বলয়ে থাকতে হয়েছে। এটা কোনও অজুহাত নয়, এটাই বাস্তব। আমি মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত। কিন্তু আমাদের দলের প্রতিটা ক্রিকেটার মানসিক ও শারীরিক ভাবে বিধ্বস্ত। তাই আইপিএল ও  টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মাঝে লম্বা বিরতি পেলে খুব ভাল হত।" 

আরও পড়ুন: Virat Kohli: চাপে পড়েই ছাড়লেন টি-২০ অধিনায়কত্ব! বিদায়লগ্নে অকপট কোহলি

তবে শাস্ত্রীও অজুহাতের ফিরিস্তি এখানেই শেষ নয়। তিনি আরও যোগ করেন, "গত ছয় মাস আমাদের দল কঠিন জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে থেকেছে। এই দলের একাধিক ক্রিকেটার তিনটি ফরম্যাটেই খেলে। গত ২৪ মাসে, ওরা মাত্র ২৫ দিন বাড়িতে থাকতে পেরেছে। তাই আপনি কে তাতে কিস্যু যায় আসে না। আপনার নাম যদি ডন ব্র্যাডম্যানও হয়, আপনি যদি জৈব বলয়ে থাকেন, তাহলে আপনার গড়ও কমে আসতে বাধ্য। কারণ আপনিও মানুষ!" 

কোহলি-শাস্ত্রী জুটির এটাই ছিল শেষ প্রতিযোগিতা। সবাই ধরেই নিয়েছিল যে এ বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হাতে তুলবে ভারতীয় দল। কিন্তু সেটা তো হলই না, বরং ২০০৭ সালের ৫০ ওভারের বিশ্বকাপের পর ফের একবার লিগ পর্ব লজ্জার বিদায় নিল ভারতীয় দল। তবে বিদায়ঘণ্টা বেজে গিয়েছে সেটা বুঝতে পেরেই রোহিত শর্মা, জসপ্রীত বুমরা থেকে শুরু করে সদ্য বিদায়ী দুই সহকারী কোচ বিক্রম রাঠৌর ও ভরত অরুণ পর্যন্ত সেই এক অজুহাত শুনিয়ে গিয়েছিলেন। 

শাস্ত্রী ফের দার্শনিক ভঙ্গিতে যোগ করেছেন, "আপনি যা চাইবেন সেটা সব সময় তো পাওয়া যায় না। এটা কঠিন সময়। সবার জীবনেই কঠিন সময় আসে। তবে সবকিছু জয় দিয়ে উপলব্ধি করা যায় না। অনেক সময় লড়াকু মানসিকতাকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। আপনি যা অর্জন করেছেন সেটা বিষয় নয়, আপনি কোন প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠেছেন সেটা দেখার বিষয় এবং এই দলটি সেটাই করে দেখিয়েছে। তাঁরা টিকে থাকার মানসিকতা দেখিয়েছে, কোনও অভিযোগ ছিল না তাঁদের মধ্যে। কিন্তু এখনই হোক বা পরে এই বাবল ফেটে যাবে। তাই আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে। খেলোয়াড়রা তো আর পেট্রলে চলে না!" 

আরও পড়ুন: Ravi Shastri: 'ভারত জেতার চেষ্টাই করেনি!' স্বীকারোক্তি বিরাটদের হেডস্য়ারের

২০২২ সালের ফের বসবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। সেই বিশ্বকাপে রাহুল দ্রাবিড় ও রোহিত শর্মা জুটি কতটা মেলে ধরতে পারে সেটা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে ক্রিকেট দুনিয়া। রবি শাস্ত্রীও বিদায়বেলায় দলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে গেলেন। তিনি শেষে যোগ করেন, "পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড ম্যাচের পর আমরা খুবই হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম। তবে ব্যক্তিগত ভাবে কিউইদের বিরুদ্ধে হারের পর আরও বেশি হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। কারণ আমার মনে হয় সেই ম্যাচে আমাদের আরও আক্রমণাত্মক হওয়া উচিত ছিল। এখানে অজুহাতের কোনও জায়গা নেই। তবে এটাও ঠিক যে মাত্র ১২ মাসের ব্যবধানে দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দেখা যায় না। তাই পরের বিশ্বকাপে দলের ভাল ফলের ব্যাপারে আমি আশাবাদী। সবাইকে শুভেচ্ছা রইল। 

২০১৭ সালের ১৩ জুলাই ভারতীয় দলের হেড কোচ হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন শাস্ত্রী। এর আগে ২০১৪ সাল থেকে দলের ডিরেক্টর ছিলেন তিনি। শাস্ত্রীর কোচিংয়ে দলের যে উন্নতি হয়েছে সেটা নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। বিশেষ করে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে কোহলির দলের সাফল্য চোখে পড়ার মতো। তাঁর কোচিংয়ে ৪৩টি টেস্টর মধ্যে এসেছে ২৫ জয়। ১৩টি ম্যাচ হেরেছে। ড্র হয়েছে ৫টি টেস্ট। ৭৬টি ম্যাচ একদিনের ম্যাচ খেলে ৫১টি জিতেছে ভারত। ২২টি ম্যাচ হেরেছে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ক্ষেত্রে আবার তাঁর কোচিংয়ে ৬৫টি ম্যাচ খেলে ৪৩টি ম্যাচ জিতেছে ভারত। ১৮টি ম্যাচ হেরেছেন কোহলিরা। তবে ধোনি জামানা থেকে শুরু করে কোহলির রাজত্বকাল পর্যন্ত এশিয়া কাপের ফাইনালে হার ছাড়াও, আইসিসি প্রতিযোগিতায় দলকে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে। মোক্ষম সময় ভুল দল নির্বাচনের জন্য চাপের মুখে চুপসে গিয়েছে দল। 

তাই শাস্ত্রী নিজের পিঠ বাঁচাতে অজুহাত দিলেও, ক্রিকেট পন্ডিতরা কিন্ত একে 'ভাঙা রেকর্ড' বলেই আখ্যা দিচ্ছেন! 

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)   

.