মধ্যমগ্রামের মাঠে খেলে উনিশের মহারণে ভারতকে নাকানিচোবানি খাইয়েছেন অভিষেক
ভারতকে হারিয়ে অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।
নিজস্ব প্রতিবেদন: মধ্যমগ্রামের ছেলের বাইশ গজে বিশ্বজয়। অনুর্ধ্ব ঊনিশ ক্রিকেট বিশ্বকাপে চমক মধ্যমগ্রামের সাজিরহাটের ছেলের। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। অভিষেক দাস অরণ্য। যুব বিশ্বকাপ ফাইনালে ৩ উইকেট নিয়ে ভারতীয় ব্যাটিং অর্ডারের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছিলেন। সেই অভিষেক দাস অরণ্যের জন্ম ওপার বাংলায় হলেও তার বেড়ে ওঠা এপার বাংলায়।
মধ্যমগ্রামে সাজিরহাটে কাকার বাড়িতেই কেটেছে ছেলেবেলার অধিকাংশ সময়। বাড়ি সংলগ্ন এপিসি কলেজের মাঠেই একসময় দাপিয়ে খেলতেন অভিষেক। ক্রিকেট অন্তপ্রাণ ছেলের আকাশছোঁয়া স্বপ্নের পাশে আগাগোড়াই ছিলেন কাকা জয়দেব দাস।
বাবার আর্থিক অনটনের দিনেও ময়দান মার্কেট থেকে কাকার দেওয়া ক্রিকেট সরঞ্জামেই নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে পেরেছেন অভিষেক। সেই স্মৃতিই বারবার পড়ছিল অভিষেকের কাকার। তিনি বলেন, " ছোটবেলা থেকে ও শুধু একটা আব্দারই করত। আমাকে ব্যাট-বল কিনে দাও। ২ বছর ওর সাথে দেখা হয়নি। পরে আমাকে বলেছিল, বিশ্বকাপ জেতার পর তোমার সাথে দেখা করব। আজ আমি খুবই গর্বিত।" অভিষেকের পিসি গায়ত্রী দেবী বলেন, " ছোট থেকে শুধু একটাই ধ্যন ধারণা ছিল অরণ্যের। ক্রিকেট ছাড়া আর কিছু ভাবত না। এখানে আসলে খাওয়া-দাওয়া ফেলে সবসময় মাঠেই পড়ে থাকত।"
ফাইনালে ভারত হারায় কিছুটা খারাপ লাগলেও, অরণ্যের সাফল্যে আনন্দ দ্বিগুণ হয়ে যায় সাজিরহাটের দাস পরিবারের। ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের দিন সকাল থেকেই টিভির পর্দায় চোখ রেখেছিল অরণ্যের পরিবার। বাড়ির ছেলে ৩ উইকেট নেওয়ার পর আগাম উচ্ছ্বাসও শুরু হয়ে যায়।
অভিষেকের খুড়তুতো দিদি জানান, "আমি ভাইকে বলে রেখেছিলাম তুই যদি কখনও বাংলাদেশের হয়ে খেলিস তাহলে আমি বাংলাদেশকেই সাপোর্ট করব। ভাইয়ের এই সাফল্যে আজ আমি দারুন খুশি।"
অভিষেকের কাকা-পিসিরা এপার বাংলায় থাকলেও তার বাবা-মা আর দাদা অবশ্য ওপার বাংলাতেই থাকেন। আধুনিক প্রজন্মে ভিডিও কল অবশ্য সেই দূরত্ব অনেকটাই মুছে দিয়েছে। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ছেলেকে শুভেচ্ছা জানাতে শীঘ্রই যোশরের নরাইলে যাবেন অরণ্যের কাকা-পিসিরা। বাংলাদেশের প্রাক্তন অধিনায়ক মাসরাফে মোর্তাজাও নোরাইলের ছেলে। অভিষেকের সাফল্যের পিছনে মোর্তাজারও অনেক অবদান রয়েছে।
আরও পড়ুন- গলার কাঁটা মার্তি ক্রেস্পি, বিদেশি ফুটবলারকে নিয়ে সমস্যায় ইস্টবেঙ্গল