শুক্রবার দিল্লির পাতিয়ালা হাউসের বিশেষ সিবিআই আদালতে শুরু হল টুজি কাণ্ডের বিচার। প্রাক্তন টেলিকমমন্ত্রী আন্দিমুথু রাজা, কানিমোড়ির পাশাপাশি টেলিকম এবং কর্পোরেট দুনিয়ার বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী মানুষের বিচার হবে ওই মামলায়।
এই মামলায় সিবিআইয়ের পেশ করা একশো পঞ্চাশজন সাক্ষীর বক্তব্য মিলিয়ে দেখবে আদালত। সাক্ষীদের মধ্যে প্রথমে অনিল ধীরুভাই আম্বানি গোষ্ঠীর আধিকারিকদের ডাকা হতে পারে। ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসের বৃহত্তম (অর্থের অঙ্কের নিরিখে) এই দুর্নীতি মামলার বিচারের জন্য সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে ওই বিশেষ আদালত গঠিত হয়। গত ২২ অক্টোবর সিবিআই-এর তরফে পেশ করা চার্জশিট গ্রহণ করে স্পেকট্রাম দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪ জন ব্যক্তি ও ৩টি টেলিকম কোম্পানি-রিলায়েন্স টেলিকম, সোয়ান টেলিকম ও ইউনিটেক ওয়ারলেসের বিরুদ্ধে বিচারের জন্য চার্জ গঠন করেন বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারপতি ওপি সাইনি।
প্রাক্তন টেলিকমমন্ত্রী এ রাজা ও ডিএমকে সুপ্রিমো এম করুণানিধির সাংসদ-কন্যা কানিমোড়ির পাশাপাশি অভিযুক্ত তালিকায় রয়েছে প্রাক্তন টেলিকম সচিব সিদ্ধার্থ বেহুরা, এ রাজার প্রাক্তন ব্যক্তিগত সচিব আরকে চান্দোলিয়া, করুণানিধির পরিবারের মালিকানাধীন কলাইনার টিভির ম্যানেজিং ডিরেক্টর শরদ কুমার, অনিল আম্বানি গোষ্ঠী পরিচালিত রিলায়েন্স টেলিকমের তিন আধিকারিক- ম্যানেজিং ডিরেক্টর গৌতম দোশি, প্রেসিডেন্ট সুরেন্দ্র পিপারা ও সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হরি নায়ারের নাম। ইউনিটেক ওয়ারলেসের প্রধান সঞ্জয় চন্দ্র, সোয়ান টেলিকমের প্রধান শাহিদ উসমান বালওয়া ও তাঁর ভাই আসিফ বালওয়া, শাহিদের দুই ব্যবসায়িক সহযোগী-ডিবি রিয়েলিটি গ্রুপের বিনোদ গোয়েঙ্কা, কুশেগাঁও ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল্স-এর রাজীব আগরওয়াল এবং এ রাজার ঘনিষ্ঠ বলিউড প্রযোজক করিম মোরানির নামও রযেছে স্পেকট্রাম কাণ্ডের বিচারাধীনদের তালিকায়।
বিচারক ও পি সাইনি গঠিত ৩০০ পাতার চার্জে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ (প্রতারণা), ১২০-বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), ৪০৯ (অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ), ৪৭১ (জালিয়াতি)-সহ নানা ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। রিলায়্যান্স টেলিকমের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সোয়ান টেলিকমকে সামনে রেখে অনৈতিক ভাবে টু-জি লাইসেন্স পেয়েছে। বিচারক সাইনির বক্তব্য, রাজা এবং তাঁর দফতরের সচিব বেহুরা সরকারি পদে থাকাকালীন নিয়ম ভেঙে সোয়ান টেলিকম ও ইউনিটেক ওয়্যারলেসকে টু-জি স্পেকট্রাম বণ্টন করেছেন। ফলে ওই সব কোম্পানির বিপুল সুবিধা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন এ রাজা এবং সিদ্ধার্থ বেহুরা।
টুজি কাণ্ডের বিচার শুরু সিবিআই আদালতে