রাখির 'বিনিময়ে' ধর্ষণ! যুবতীর সঙ্গে ঘৃণ্য কাজ রাখিভাইয়ের
ফাঁকা বাড়িতে ওই যুবতীকে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত 'রাখি ভাই।' বাধা দিলে হুমকি দেয়। এরপর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বার বার ধর্ষণ করে ওই যুবতীকে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ভাতৃস্নেহে রাখি বেঁধে দিয়েছিলেন হাতে। সেই 'রাখি ভাই'য়ের বিরুদ্ধেই উঠল ধর্ষণের অভিযোগ। ঘৃণ্য এই ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের রাতিবাদে। অভিযোগ, ৩৮ বছরের ওই যুবতীকে ধর্ষণ করে তাঁর 'রাখি ভাই।' নির্যাতনের পর অভিযুক্ত আবার বিয়ে করবে বলেও প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু পরে সেই প্রতিশ্রুতি থেকে পিছু হঠে অভিযুক্ত।
ওই যুবতীর অভিযোগের ভিত্তিতেই ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে রাতিবাদ থানা। পুলিস জানিয়েছে, নির্যাতিতার প্রথম পক্ষের স্বামীর অসুস্থতায় মৃত্যু হয়। তারপর ফের বিয়ে করেন ওই যুবতী। কিন্তু বিয়ের ৭ মাস পর দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়ে যায় তাঁর। এরপরই কাজের জায়গায় অভিযুক্তের সঙ্গে আলাপ হয় ওই যুবতীর। অভিযুক্ত তাঁর প্রতিবেশীও বটে। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এরপরই রাখিবন্ধনের দিন অভিযুক্ত পড়শির হাতে রাখি বাঁধেন তিনি। কিন্তু এই আলাপ ঘনিষ্ঠতার সুযোগ নিয়েই একদিন ফাঁকা বাড়িতে ওই যুবতীকে ধর্ষণ করে অভিযুক্ত 'রাখি ভাই।' বাধা দিলে হুমকি দেয়। এরপর বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বার বার ধর্ষণ করে ওই যুবতীকে।
প্রসঙ্গত,সোমবার শীর্ষ আদালত তার এক রায়ে আজ বলেছে, ধর্ষণের প্রমাণ পেতে টু ফিঙ্গার টেস্ট(ভার্জিনিটি টেস্ট) করা যাবে না। যদি কেউ এই টেস্ট করে তাহলে তাকে অসদাচরণ বলে গণ্য করা হবে। কেন্দ্র ও রাজ্যকে এই টেস্ট বন্ধ করতে হবে। ঝাড়খণ্ডের একটি ধর্ষণ ও খুনের মামলায় এক ব্যক্তিকে মুক্তি দেয় সেখানকার হাইকোর্ট। সেই মামলায় হাইকোর্টের ওই রায়কে খারিজ করে দেন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি হিমা কোহলির বেঞ্চ।
সেই মামলাতেই ওই দুই বিচারপতি নির্দেশ দেন ধর্ষণের মামলায় নির্যাতিতার টু ফিঙ্গার টেস্ট পুরুষতান্ত্রিক সমাজের একটি প্রতিফলন। এতে কিছু প্রমাণ হয় না। এই টেস্ট একজন মহিলার সম্ভ্রম ও প্রাইভেসির পরিপন্থী। বেঞ্চের তরফে মন্তব্য করা হয়, আজও এই টেস্ট করা হচ্ছে। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এটা বলা যায় না যে যৌন জীবনে সক্রিয় কোনও মহিলাকে ধর্ষণ করা যায় না। ওই মন্তব্যই শুধু নয়, প্রতিটি রাজ্যের ডিজিপিকে নির্দেশ দেওয়া হয় যেন ধর্ষণের প্রমাণ পেতে কারও টু ফিঙ্গার টেস্ট যেন করা না হয়। প্রতিটি রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজের পাঠ্যসূচি থেকে ওই টু ফিঙ্গার টেস্ট সরিয়ে ফেলতে হবে।
আরও পড়ুন, স্বেচ্ছায় নাবালক যৌন সম্পর্ক নির্যাতন নয় POCSO আইনে রায় মেঘালয় হাইকোর্টের
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে এই টু ফিঙ্গার টেস্ট নিয়ে মামলা উঠেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই সময়েই সুপ্রিম কোর্টের তরফে বলা হয় ধর্ষণে শিকার কোনও মহিলার টু ফিঙ্গার টেস্ট করার অর্থ ওই নির্যাতিতার ব্যক্তিগত গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ করা। যৌন নির্যাতন সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য সরকারকে আরও উন্নত কোনও পরীক্ষার সাহায্য নিতে হবে। ধর্ষণের শিকার মহিলাদের উপরে এমন কোনও পরীক্ষা করা উচিত নয় যে যাতে তার মানসিক শান্তি ও মর্যাদার উপরে আঘাত করে।