সাধক সারদানন্দ ছদ্মনামে বারাণসীর কাছে গুহায় থাকতেন নেতাজী, দাবি প্রাক্তন আইবি আধিকারিকের

নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর মৃত্যু রহস্য নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। ১৯৪৫ সালে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়নি নেতাজীর। বহুদিন ধরেই এই দাবি করে আসছেন বহু গবেষক ও নেতাজী ভক্তরা। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ৬৪টি নেতাজী ফাইল প্রকাশ্যে আনার পর আরও জোরদার হয়েছে এই বিতর্ক। প্রায় প্রতিদিনই উঠে আসছে নতুন নতুন তথ্য। শুক্রবার হিন্দি দৈনিক 'হিন্দুস্তান'-এ প্রকাশিত এক খবরের পর নয়া মোড় নিল নেতাজী মৃত্যু রহস্য। এই রিপোর্ট অনুযায়ী জীবনের শেষদিনগুলি এই প্রবাদ প্রতিম স্বাধীনতা সংগ্রামী বারাণসী-গাজিপুরের কাথি গ্রামের গুহায় সাধক হয়ে কাটিয়ে ছিলেন। 

Updated By: Sep 25, 2015, 04:48 PM IST
 সাধক সারদানন্দ ছদ্মনামে বারাণসীর কাছে গুহায় থাকতেন নেতাজী, দাবি প্রাক্তন আইবি আধিকারিকের

ওয়েব ডেস্ক: নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর মৃত্যু রহস্য নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত। ১৯৪৫ সালে বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়নি নেতাজীর। বহুদিন ধরেই এই দাবি করে আসছেন বহু গবেষক ও নেতাজী ভক্তরা। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ৬৪টি নেতাজী ফাইল প্রকাশ্যে আনার পর আরও জোরদার হয়েছে এই বিতর্ক। প্রায় প্রতিদিনই উঠে আসছে নতুন নতুন তথ্য। শুক্রবার হিন্দি দৈনিক 'হিন্দুস্তান'-এ প্রকাশিত এক খবরের পর নয়া মোড় নিল নেতাজী মৃত্যু রহস্য। এই রিপোর্ট অনুযায়ী জীবনের শেষদিনগুলি এই প্রবাদ প্রতিম স্বাধীনতা সংগ্রামী বারাণসী-গাজিপুরের কাথি গ্রামের গুহায় সাধক হয়ে কাটিয়ে ছিলেন। 

এই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে সে সময়ে নেতাজী নিজেকে সাধক সারদানন্দ নামে পরিচিতি দিতেন। 

এই রিপোর্টে প্রাক্তন এক পিডব্লুডি কর্মী কৃষ্ণকান্তর কথা বলা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, কৃষ্ণকান্ত সেই সময় নেতাজীর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন, তাঁর প্রয়োজনীয় সমস্ত কিছুর ব্যবস্থার দায়িত্বও নিয়েছিলেন তিনি। এমনি কাথির বাইরে কখনও সখনও নেতাজী গেলেও দুজনের মধ্যে যোগাযোগে ছেদ পরেনি। 

ডায়রি লেখার অভ্যাস ছিল কৃষ্ণকান্তের। নিজের ডায়রেতে নেতাজীর সঙ্গে তাঁর প্রতি সাক্ষাতের পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা লিখে রেখেছেন তিনি। 

যে গুহাতে নেতাজী থাকতেন বলে দাবি করা হয়েছে, গঙ্গার তীব্র স্রোতে বর্তমানে সেগুলি প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত। 

কৃষ্ণকান্তের পুত্র, শ্যামাচরণ পাণ্ডে  ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর প্রাক্তন আধিকারিক। তাঁর বাবা ও নেতাজীর পরস্পরকে লেখা চিঠি ও অন্য সমস্ত তথ্যই কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের হাতে তুলে দিয়েছেন। 'ইন্ডিয়ান' ও ওয়ার্ল্ড মিডিয়ার দাবি, ১৯৪৫ সালের বিমান দুর্ঘটনায় যে নেতাজীর মৃত্যু হয়নি, এই তথ্যগুলি তার যথেষ্ট প্রমাণ বহন করে। 

পাণ্ডে চান তাঁর দেওয়া তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে নেতাজী মৃত্যু রহস্য সংক্রান্ত ধোঁয়াশার অবসান ঘটাক এনডিএ সরকার। 

প্রধানমন্ত্রীর দফতরে লেখা একটি চিঠিতে পাণ্ডে লিখেছেন ১৯৫১ সালের ২ ডিসেম্বর গঙ্গা ও গোমতি নদীর কাছে এক সাধকের সঙ্গে তাঁর বাবার দেখা হয়। গাজিপুরের পাউহারি বাবার আশ্রমের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি। গায়ে শাল জড়ানো ওই সাধক তাঁর বাংলা টানের হিন্দি উচ্চারণে তাঁর বাবা কৃষ্ণকান্তকে রাতে থাকার ব্যবস্থা করে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। 

কৃষ্ণকান্ত তাঁর জন্য কম্বলের ব্যবস্থা করেন। আর কয়েক দিন থেকে যেতে অনুরোধ করেন সেখানে। ওই সাধক জানান, তিনি থাকতে পারেন যদি তাঁকে কোনও নিরালা জায়গায় থাকতে দেওয়া হয়। 

পুনটুন সেতু থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে একটি গুহায় ওই সাধকের থাকার বন্দোবস্ত করেন কৃষ্ণকান্ত। 

১৯৫২ সালের ১৪ জানুয়ারি, মকরসংক্রান্তির দিন থেকে ওই গুহায় বসবাস শুরু করেন ওই সাধক। তাঁর জন্য কাঠের খাটের ব্যবস্থা করেছিলেন কৃষ্ণকান্ত। বাঁশ দিয়ে ঘিরে দিয়েছিলেন গুহা। 

বেশ কিছুদিন ওই গুহায় থেকেছেন ওই সাধক। নিয়মিত পড়তেন অমৃত বাজার পত্রিকা। 

কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সাধারণ মানুষের মধ্যে তাঁর কথা ছড়িয়ে পরে। স্থানীয় দুটি সংবাদপত্রে তাঁকে নিয়ে খবরও প্রকাশিত হয়। 

এরপরেই লোকচক্ষুর আড়ালে থাকতে বিন্দাচল পার্বত্য অঞ্চলের গোপন স্থানে চলে যান তিনি। 

পাণ্ডের দাবি ১৯৫২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি কাথি ত্যাগ করেন ওই সাধক। 

পাণ্ডের দাবি বিশেষ শর্তসাপেক্ষে কারোর সঙ্গে দেখা করতেন সাধক সারদানন্দ। তিনি সাফ জানিয়েছিলেন নেতাজী সম্পর্কে তাঁকে কোনও প্রশ্ন করা যাবে না। যদিও নেতাজীর সঙ্গে তাঁর অদ্ভুত মিল ছিল। 

নেতাজীর ধারণা ছিল তাঁর পরিচয় সবার সামনে চলে এলে চুক্তির নামে  যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তাঁকে ব্রিটিশদের হাতে তুলে দেবে জওহরলাল নেহেরুর সরকার। প্রধানমন্ত্রীর দফতরকে লেখা চিঠিতে এমনটাই দাবি করেছেন প্রাক্তন আইবি আধিকারিক। 

 

 

 

.