তিন দফায় কয়েক ঘণ্টার সংঘর্ষ, জেনে নিন ১৫ জুন সন্ধে থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কী হয়েছিল গালওয়ানে

রাত নটা নাগাদ একটি পাথর এসে লাগে কর্ণেল বাবুর মাথায়। তিনি গালওয়ান নদীতে পড়ে যান

Updated By: Jun 21, 2020, 09:27 PM IST
তিন দফায় কয়েক ঘণ্টার সংঘর্ষ, জেনে নিন ১৫ জুন সন্ধে থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কী হয়েছিল গালওয়ানে

নিজস্ব প্রতিবেদন: গত ১৫ জুন রাতে চিন সেনাদের হামলায় শহিদ হন ২০ ভারতীয় জওয়ান।  মাত্র ৯ দিন আগেই দুদেশের কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। দু'পক্ষ কোনও রকম সংঘাতে জড়াবে না এই আবহের মধ্যেই ঘটে গেল এমন অঘটন! প্রকাশ্যে এল সেদিনকার সংঘর্ষের ঘটনা। 

আরও পড়ুন-প্রশ্ন করলেই দেশদ্রোহী নয়, মোদীকে সতর্ক করলেন কমল হাসান

প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে তিন দফায় সংঘর্ষ হয়েছিল সেদিন।  ভারতের একশো সেনার মোকাবিলায় চিন জড়ো করেছিলেন কমপক্ষে তিনশো সেনা। তারা আবার বসেছিল সুবিধেজনক অবস্থানে।  আর চিনের তরফে যারা লড়াই শুরু করেছিল তারা ছিল 'নতুন'। এদের সঙ্গে আগে কথা হয়নি ভারতীয় সেনার। এনিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছে সংবাদসংস্থা এএনআই।

জেনে নিন গোটা ঘটনা

# সমস্যার সূত্রপাত গালওয়ানে একটি চিনের নজরদারি তাঁবুকে ঘিরে।

# দুপক্ষের মধ্যে আলোচনায় ঠিক হয় ওই নজরদারি পোস্ট সরিয়ে নেবে চিন।

# চিন ওই পোস্ট সরাচ্ছে কিনা তা দেখার দায়িত্বে ছিল ১৬ নম্বর বিহার ইনফ্যান্টারি ব্যাটালিয়ান। তার প্রধান ছিলেন সন্তোষ বাবু।

# ৬ জুন দুপক্ষের মধ্যে কথা মতো ওই পোস্ট সরিয়ে নেয় চিন। কিন্তু ১৪ জুন তা ফের খাড়া করে।

# ১৫ জুন বিকেল ৫টা নাগাদ ওই জায়গায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কর্ণেল সন্তোষ বাবু।

# সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ কর্ণেল বাবু ২ মেজর সহ ৩৫ জন জওয়ানকে নিয়ে ওই এলাকায় যান। গিয়ে দেখেন ১৪ নম্বর পেট্রোলিং পয়েন্টে একটি তাঁবু খাড়া করে ১০-১২ জওয়ান তা পাহারা দিচ্ছে। ভারতীয় জওয়ানদের চোখে পড়ে পাহারাদাররা সাধারণ চিনা সৈন্যের মতো নয়। তারা একেবারেই নতুন।

# কর্ণেল বাবু তাদের সঙ্গে কথাবার্তা শুরু করেন। তিনি জানতে চান, ওই পোস্ট ফের খাড়া করা হয়েছে কেন! ওই কথা শুনেই খেপে গিয়ে কর্ণেলকে ধাক্কা দেয় এক চিনা সেনা।

# কর্ণেলকে ধাক্কা দেওয়াও থাকতে পারেননি তাঁর সঙ্গে থাকা অন্যান্য জওয়ানরা। তারা চিনা সেনাদের সঙ্গে ঘুঁসোঘুঁসি শুরু করে দেন। তিরিশ মিনিট ধরে চলে ওই মারামারি। তাঁরা ওই তাঁবু ভেঙে দেন।

# এরপর সন্তোষ বাবু, আহত জওয়ানদের ক্যাম্পে ফেরত পাঠান ও অন্যান্যদের আসতে বলেন।

# কর্ণেল লক্ষ্য করেন গালওয়ান নদীর দুধারে বসে রয়েছে কয়েকশো চিনা সেনা।

আরও পড়ুন-এবার বাংলায় মদের হোম ডেলিভারি দেওয়ার কথা ভাবছে Amazon!

# ইতিমধ্যে ভারতের ক্যাম্প থেকে আসতে শুরু করেছে জওয়ানরা। এর মধ্যে রাত নটা নাগাদ একটি পাথর এসে লাগে কর্ণেল বাবুর মাথায়। তিনি গালওয়ান নদীতে পড়ে যান।  শুরু হয় দুপক্ষের সংঘর্ষ। চলে ৪৫ মিনিট ধরে।

# বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে লড়াই শুরু হয়ে য়ায় দুপক্ষের। চিনের তরফে ছিল কমপক্ষে ৩০০ সেনা। এলাকায় আহত সেনারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে।

# এর মধ্যেই কর্ণেল বাবু ও অন্যান্য সেনার দেহ উদ্ধার করে জওয়ানরা।

#  এই সময় আকাশে ড্রোনের শব্দ শোনা যায়। আশঙ্কা করা হচ্ছিল ড্রোনের নাইট ভিশন ক্যামেরা দিয়ে ক্ষয়ক্ষতির জরিপ করছে চিনা সেনা।

# তার পরেই শুরু হয়ে যায় দুপক্ষের তৃতীয়বার লড়াই।

# আনুমানিক রাত এগারোটা থেকে শুরু হয় লড়াই। চলে মধ্য রাত পর্যন্ত। চিনের বহু সেনা মারাত্মক আহত হয়। অনেকে নদীতে ঝাঁপ দেয়। দুপক্ষের বহু জওয়ান আহত হয়ে পড়ে থাকে সংকীর্ণ গালওয়ান উপত্যকায়।

# টানা পাঁচ ঘণ্টার লড়াইয়ের পর থামে দুপক্ষ।

# পরদিন চিনা সেনাদের দেহ তাদের কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

.