কসাভ টাইমলাইন

ফাঁসি হয়েছে কসাভের, আজ সাতসকালে এই খবরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। ফাঁসির গোটা প্রক্রিয়াটাই মুড়ে ফেলা হয়েছিল চূড়ান্ত গোপনতায়। মুম্বই থেকে পুনের জেলে নিয়ে যাওয়া, ফাঁসির দিনক্ষণ, এসব খবর জানা ছিল পুলিস ও প্রশাসনের হাতে গোনা কয়েকজনের। সি-৭০৭৬। ফাঁসির নথিপত্র থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো প্রাণভিক্ষার আর্জি, সবেতেই এই নম্বরই ছিল কসাভের পরিচয়।   

Updated By: Nov 21, 2012, 09:05 PM IST

ফাঁসি হয়েছে কসাভের, আজ সাতসকালে এই খবরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা দেশে। ফাঁসির গোটা প্রক্রিয়াটাই মুড়ে ফেলা হয়েছিল চূড়ান্ত গোপনতায়। মুম্বই থেকে পুনের জেলে নিয়ে যাওয়া, ফাঁসির দিনক্ষণ, এসব খবর জানা ছিল পুলিস ও প্রশাসনের হাতে গোনা কয়েকজনের। সি-৭০৭৬। ফাঁসির নথিপত্র থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো প্রাণভিক্ষার আর্জি, সবেতেই এই নম্বরই ছিল কসাভের পরিচয়।   
বুধবার মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে এই খবর পৌঁছয় সকাল পৌনে আটটা নাগাদ। ঠিক মিনিট পনের আগেই সম্পন্ন হয়েছে এই অপারেশনের সর্বশেষ পর্যায়। আজমল কসাভের ফাঁসি। একাজের জন্য মহারাষ্ট্র পুলিসের বিশেষ আইজি পদমর্যাদার এক আধিকারিক এবং আরও ১৬ জন পুলিস কর্মীকে নিয়ে গঠিত হয়েছিল একটি দল। সবটাই চূড়ান্ত গোপনীয়তার মধ্যে।
ওই দলের কাজ শুরু হয় মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেল থেকে কসাভকে পুণের ইয়েরওয়াড়া জেলে স্থানান্তরের মধ্যে দিয়ে। ১৯ নভেম্বর এই কাজ করা হয়। আগের রাতেই বিশেষ ফ্লাইটে তাকে নিয়ে রওনা হয় পুলিস, যাতে ভোরের আলো ফোটার আগে পুণের জেল চৌহদ্দিতে তাকে ঢুকিয়ে দেওয়া যায়।  হয়ও ঠিক তাই। ফাঁসির গোটা প্রক্রিয়াকে গোপন রাখার দায়িত্ব ছিল পুলিসের ওই দলের কাঁধে।
কাঁধে ব্যাগপ্যাক, হাতে এ কে 47--সিএসটি টার্মিনাসের সিসিটিভি ক্যামেরার ওই ফুটেজ দেখেই প্রথম জনসমক্ষে এসেছিল কসাভের মুখ। আজমল কসাভ, ২৬/১১ মুম্বই হামলার একমাত্র জীবিত জঙ্গি,....    দিনটা ২৭ নভেম্বর, ২০০৮ গভীর রাত: সঙ্গী বাকি ন-জনের মৃত্যু হলেও ধরা পড়ে গিয়েছিল কসাভ।
  
 
২০০৯, ১৬ জানুয়ারি: কসাভকে নিয়ে যাওয়া হয় আর্থার রোড জেলে।
২০০৯ থেকে ২০১২: চার বছর মুম্বইয়ের এই জেলেই থেকেছে কসাভ। এরপর চলে চার্জ গঠন প্রক্রিয়া। এর মধ্যে একাধিকবার আইনজীবী বদল হয় কসাভের।
২০১০ সালের ৩ মে: মুম্বই হামলার একমাত্র জীবিত জঙ্গিকে দোষী সাব্যস্ত করে মুম্বইয়ের বিশেষ আদালত।
৬ মে তার মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। বম্বে হাইকোর্ট সেই আদেশই বহাল রাখে।
হাইকোর্টের রায় আসে প্রায় এক বছর পর।
২০১১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি: একমাসের মধ্যে বম্বে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় কসাভ।
২০১১ মার্চ থেকে ২০১২ অগাস্ট: দীর্ঘ শুনানি পর্বের পর অবশেষে ২৯ অগাস্ট রায় দিতে গিয়ে কসাভের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখে সর্বোচ্চ আদালত।  
 কসাভের প্রাণভিক্ষার আর্জি নিয়মমতো এরপর যায় রাষ্ট্রপতির কাছে।    
২০১২ সালের ৫ নভেম্বর:রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় কসাভের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করে দেন।
২০১২ সালের, ৮ নভেম্বর: মহারাষ্ট্র সরকারকে রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়।
এরপরই ঠিক হয়ে যায় কবে, কোথায়, কখন কার্যকর করা হবে কসাভের ফাঁসির আদেশ। 
২০১২ সালের, ২১ নভেম্বর: পুণের ইয়েরওয়াড়া জেলে সকাল সাড়ে সাতটায় ফাঁসি দেওয়া হবে ওই সন্ত্রাসবাদীকে। চূড়ান্ত গোপনীয়তার মধ্যে শেষপর্যন্ত নির্ধারিত দিনেই কার্যকর হল ফাঁসির আদেশ।
২৬/১১-এর চার বছর পূর্তির ঠিক চার দিন আগে ইতি পড়ল ওই হামলায় ধৃত একমাত্র জীবিত জঙ্গির জীবনে। গত চার বছরের বন্দি-জীবনে কসাভের পরিচিতি ছিল শুধুই একটি নম্বর। C-7096 ।
ফাঁসির নথিপত্র থেকে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো প্রাণভিক্ষার আর্জি, সবেতেই এই নম্বরই ছিল তার পরিচয়।  কাকতালীয় হলেও, ২০০৮ কসাভ যেদিন ভারতে পা রেখেছিল, সেই দিনটিও ছিল এক বুধবার। চার বছর পর আবারও এক বুধবারের সকালেই শেষ হল সেই কাহিনী। সম্পূর্ণ হল একটি বৃত্ত।    

.