বাঙালি দম্পতির সন্তানদের ফেরাতে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ কারাট
নরওয়েতে বাঙালি দম্পতির সন্তান আটকে রাখার ঘটনায় এবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হলেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাট। ওই বাঙালি দম্পতির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়েই রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিলের সঙ্গে দেখা করেন কারাট। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে আটক দুই শিশুর দিদিমা শিখা চক্রবর্তী জানান, এই ঘটনা কিডন্যাপেরই সামিল।
নরওয়েতে বাঙালি দম্পতির সন্তান আটকে রাখার ঘটনায় এবার রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হলেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাট। ওই বাঙালি দম্পতির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়েই রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাটিলের সঙ্গে দেখা করেন কারাট। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে আটক দুই শিশুর দিদিমা শিখা চক্রবর্তী জানান, এই ঘটনা কিডন্যাপেরই সামিল। বাচ্চা দুটিকে মুক্তির বিষয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে কোনও রকম সহায়তা করছে না নরওয়ে সরকার। শিশুদুটিকে মুক্তির বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিষয়ে রাষ্ট্রপতি আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানান শিখাদেবী। এর আগে শিশুদুটির মুক্তির জন্য অনাবাসী ভারতীয় বিষয়ক মন্ত্রী ভায়লার রবির সঙ্গে দেখা করেছিলেন কারাট। মন্ত্রীর আশ্বাস দিলেও এখনও ২ সন্তানকে তাদের বা-মার কাছে ফিরেয়ে দেওয়া যায়নি বলেই রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে বলে জানান কারাট।
গত বছর মে মাসে নরওয়েতে কর্মরত বাঙালি দম্পতি অনুরূপ ও সাগরিকা ভট্টাচার্যের ৩ বছরের পুত্র অভিজ্ঞান ও ১ বছরের কন্যা ঐশ্বর্যকে কার্যত আটক করে নরওয়ে চাইল্ড কেয়ার এজেন্সি। আটক করার কারণ হিসেবে ওই এজেন্সি জানায়, নিজেদের সন্তানকে ঠিক ভাবে প্রতিপালন করছেন না তাদের বাবা-মা। এরপর শিশু দুটিকে মুক্তি দেওয়ার জন্য নরওয়ে সরকারকে চিঠি দেয় ভারত সরকার। ভারত সরকারের চিঠি পেয়ে নরওয়ে সরকার উদ্যোগী হলেও বাধা দেয় চাইল্ড কেয়ার এজেন্সি। ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে এবিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর নরওয়ে সরকারের তরফে শিশুদের ছাড়ার ব্যাপারে ৫টি শর্ত দেওয়া হয়। সেই শর্ত অনুযায়ী নিজের আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে চাইল্ডকেয়ার এজেন্সির দফতরে যান ভূবিজ্ঞানী অনুরূপ ভট্টাচার্য। সেখানে তাঁকে নিজের এবং দুই সন্তান-অভিজ্ঞান ও ঐশ্বর্য্যর পাসপোর্ট জমা দিতে বলা হয়।
আগামী ১১ মার্চ অনুরূপ ভট্টাচার্যর ভিসার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তাই চাইল্ডকেয়ার এজেন্সি অনুরূপবাবুকে তাঁর দুই সন্তানের ভিসার মেয়াদ বাড়াতে বলে। অনুরূপবাবুর অভিযোগ, তিনি ভারতে ফিরতে চাইলেও, এরপর এজেন্সিটি তাঁকে পাসপোর্ট জমা রাখার জন্য জোর করছে। এখানেই শেষ নয়, এজেন্সিটি হুমকি দিয়ে বলে, অনুরূপবাবু তাঁর সন্তানদের ভিসার মেয়াদ না বাড়ালে তাঁরা নিজেরাই সেই উদ্যোগ নেবে। সেক্ষেত্রে অভিজ্ঞান এবং ঐশ্বর্য্য সাবালক না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের দায়িত্বেই রাখবে। অনুরূপবাবুর আইনজীবীর দাবি, অভিজ্ঞান ও ঐশ্বর্য ভারতীয় নাগরিক। মানবিক কারণে তাদের ভারতে ফিরতে দেওয়া উচিত্। তবে সেই দাবিকেও নাকচ করে দিয়েছে নরওয়ের এই চাইল্ডকেয়ার এজেন্সি।নরওয়ের স্ট্যভেঞ্জারে অনুরূপ ভট্টাচার্যের বাড়িতে গিয়ে বাঙালি দম্পতির সঙ্গে দেখা করেন অসলোর ভারতীয় দূতাবাসের মুখ্য সচিব পি বালাচরণ। তিনি আশ্বাস দেন, শিশুদুটিকে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি এজেন্সিটির কাছে সওয়াল করবেন। অনুরূপবাবু ইতিমধ্যেই পি বালাচরণের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। দ্বারস্থ হয়েছেন ইউনিসেফেরও। প্রায় ৯ মাস কাটতে চলল। কোনও লাভ হয়নি। ভিনদেশে আটক সন্তানদের দ্রুত ফিরে পাওয়ার আশাতেই দিন গুনছেন অনরূপবাবু ও সাগরিকাদেবী।