শাহের সফরের প্রাক্কালেই ফের নতুন করে হিংসা ছড়াল মণিপুরে, পুলিসকর্মী সহ নিহত ৫
মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং জানিয়েছেন, জঙ্গিরা নাগরিকদের বিরুদ্ধে এম-১৬, একে-৪৭ রাইফেল ও স্নিপার বন্দুক ব্যবহার করে। একাধিক গ্রামে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে জঙ্গিরা। প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে। এব্যাপারে সেনা ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: নতুন করে ফের হিংসা ছড়াল মণিপুরে। সোমবারই ৩ দিনের সফরে মণিপুর যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার আগেই নতুন করে ফের হিংসা ছড়াল উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে। হিংসার জেরে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ জন। যার মধ্যে একজন পুলিসকর্মীও আছেন।
মণিপুরে হিংসা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই সেই রাজ্যে সফরে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ৩ দিনের সফর। মণিপুরের গ্রাউন্ড জিরোতে উপস্থিত থেকে সেখানকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন শাহ। সমাধান সূত্র খুঁজে দেখবেন। মণিপুরের হিংসার প্রসঙ্গে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং জানিয়েছেন, তাদের কাছে রিপোর্ট এসেছে যে ৪০ জন জঙ্গিকে গুলি করে নিকেশ করা হয়েছে। তবে নতুন করে হিংসায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫ জন। যার মধ্যে একজন পুলিসকর্মীও আছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১২ জন। প্রসঙ্গত, মণিপুরে চলা হিংসায় এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৮০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
উল্লেখ্য, রবিবার নতুন করে মণিপুরের সেরাও ও সুগুনু এলাকায় হিংসা ছড়ায়। অভিযোগ, বিচ্ছিন্নতাকামী জঙ্গিরা আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র থেকে সেরাও ও সুগুনু এলাকায় একাধিক বাড়িকে লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করতে শুরু করে। তাতে আগুন ধরে যায় বাড়িগুলিতে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সফরের প্রাক্কালেই ফের নতুন করে মণিপুরে হিংসা ছড়ানোয় স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং জানিয়েছেন, জঙ্গিরা নাগরিকদের বিরুদ্ধে এম-১৬, একে-৪৭ রাইফেল ও স্নিপার বন্দুক ব্যবহার করে। একাধিক গ্রামে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছে জঙ্গিরা। প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে। এব্যাপারে সেনা ও অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর সাহায্য নেওয়া হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিং আরও অভিযোগ করেছেন যে, গত দুদিন ধরে ইম্ফল উপত্যকায় যে ধরনের হামলা জঙ্গিরা ঘটিয়েছে, তা দেখে মনে করা হচ্ছে যে গোটাটাই পূর্ব পরিকল্পিত। সাধারণ মানুষদের উপর এধরনের হামলা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এই পরিস্থিতি আজ মণিপুর যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ইতিমধ্যেই তিনি মেইতেই এবং কুকি উভয় সম্প্রদায়কেই শান্তি বজায় রাখতে ও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, এর আগেও অমিত শাহ মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এবং অন্যান্যদের সঙ্গে রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে একাধিক বৈঠক করেছেন। এরমধ্যে সেনা প্রধান মনোজ পাণ্ডেও শনিবার মণিপুরে গিয়ে সে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন।
প্রসঙ্গত, গত মাস থেকেই উত্তপ্ত উত্তর-পূর্বে রাজ্যটি। মণিপুরের মেইতেই সম্প্রদায় তাদেরকে তফশিলি উপজাতি ভুক্ত করার দাবি জানালে, তার প্রতিবাদ করে কুকি উপজাতির মানুষরা। কারণ মেইতেই সম্প্রদায়কে তফশিলি উপজাতিভুক্ত করলে, তারা সংরক্ষণের সুবিধা পাবে ও বনাঞ্চলে প্রবেশের অধিকার পেয়ে যাবে। ওদিকে কুকি গ্রামবাসীদের রিজার্ভ ফরেস্টের জমি থেকে উচ্ছেদ করা নিয়েই উত্তেজনার শুরু। যা থেকে একের পর এক হিংসার ঘটনা ঘটে আদিবাসী অধ্যুষিত উত্তর-পূর্বে রাজ্যটিতে।
হিংসা যাতে আরও বাড়তে না পারে, তার জন্য ইতিমধ্যেই বেশ কিছু এলাকায় কারফিউ জারি করেছে সে রাজ্যের সরকার। একইসঙ্গে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবার উপরেও। পাশাপাশি, নতুন করে হিংসা ছড়ানোর কারণে ইম্ফল পূর্ব ও পশ্চিম জেলায় প্রশাসন কারফিউ শিথিলের সময় ১১ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে মাত্র সাড়ে ৬ ঘণ্টা করেছে।
আরও পড়ুন, New Parliament House: নতুন সংসদকে কফিনের সঙ্গে তুলনা! আরজেডি-র ট্যুইটে তোলপাড় নেটপাড়া