নকশাতে ত্রুটি, বন্ধ হয়ে গেল ভারতীয় রেলের প্রথম AC ডবল ডেকার ট্রেন

নকশাতে ত্রুটি। তাই জোর করে চালিয়েও শেষ রক্ষা হল না। অবশেষে বন্ধই করে দেওয়া হল ভারতীয় রেলের প্রথম AC ডবল ডেকার ট্রেন। জলে গেল কোটি কোটি টাকার প্রকল্প।

Updated By: Aug 30, 2015, 09:33 AM IST
নকশাতে ত্রুটি, বন্ধ হয়ে গেল ভারতীয় রেলের প্রথম AC ডবল ডেকার ট্রেন

ওয়েব ডেস্ক: নকশাতে ত্রুটি। তাই জোর করে চালিয়েও শেষ রক্ষা হল না। অবশেষে বন্ধই করে দেওয়া হল ভারতীয় রেলের প্রথম AC ডবল ডেকার ট্রেন। জলে গেল কোটি কোটি টাকার প্রকল্প।

২০১০ সাল। হাওড়া-ধানবাদ রুটে প্রথমবার টেস্টরান হয় ভারতের প্রথম AC ডবল ডেকার ট্রেনের। কিন্তু,গোড়াতেই ছিল গলদ।পঞ্জাবের কপুরথালায় অত্যাধুনিক কোচ ফ্যাক্টরিতে তৈরি AC ট্রেনের নকশাতেই ছিল গন্ডগোল। টেস্ট রানে ধরাও পড়েছিল মারাত্মক সেই ত্রুটি।

কী ছিল সেই মারাত্মক ত্রুটি? যার জেরে অকালমৃত্যু হল ভারতের প্রথম AC ডবল ডেকারের?

প্রথমেই নজর করা যাক, ডবল ডেকারের কোচের দিকে। ওভারহেডের তারের কারণে ট্রেনের উচ্চতা খুব বেশি বাড়ানো সম্ভব নয়। তাই  ট্রেনের নীচের কামরা  দুই চাকার মাঝের অংশ রাখা হয়েছিল। প্ল্যাটফর্মে ট্রেন ঢুকলে এই অংশটি  ঢুকে যাচ্ছিল প্ল্যাটফর্মের নীচে। ট্রেনটির নীচের অংশ মারাত্মকভাবে ঘষা লাগছিল প্ল্যাটফর্মের বেরিয়ে থাকা স্ল্যাবের সঙ্গে। তবে উপায়?

প্রথমে হাওড়া -বর্ধমান রুটের কর্ড ও মেন লাইনের প্রতিটি প্ল্যাটফর্মের কিছুটা অংশ ভেঙে ফেলে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা হয়। কিন্তু, সমস্যা বাধে  হরাইজেন্টাল লার্চিং নিয়ে। যত জোরে ট্রেন চলে,পাল্লা দিয়ে বাড়ে দুলুনি। রেলের পরিভাষায় যাকে বলে হরাইজেন্টাল লার্চিং। ডবল ডেকারের সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার। ফলে সর্বোচ্চ গতিতে ট্রেন চললে যে দুলুনি হয় তাতে ক্ষতি হয় প্ল্যাটফর্মের। প্রশ্নের মুখে পড়েযাত্রী নিরাপত্তা।

সমস্যার জায়গাগুলি ২০১০ সালেই রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানান রেল বোর্ডের কর্তারা। কিন্তু, ডবল ডেকার চালানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে রাজি হননি তত্কালীন রেলমন্ত্রী। কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি র পরামর্শমতো নকশায় গলদ ঢাকতে হাওড়া বর্ধমানের মধ্যে ১৭টি জায়াগায় কমানো হয়েছিল ডবল ডেকারের গতি।

ঠিক হয় হাওড়া-বর্ধমানের মধ্যে থার্ড লাইন দিয়ে চালানো হবে ডবল ডেকার। ফলে, সাধারণ এক্সপ্রেসের তুলনায় ধানবাদ পৌছতে অনেক বেশি সময় লাগে ডবল ডেকার। সকালে ডবল ডেকারটি হাওড়া থেকে ধানবাদ যাচ্ছিল, বিকেলে ধানবাদ থেকে হাওড়া ফিরছিল। অথচ যাত্রী চাহিদা ছিল ঠিক তার উল্টো।  ফলে কমতে শুরু করে যাত্রী সংখ্যা।  গত চার বছর ধরে কখনও তিরিশ শতাংশ, কখনও কুড়ি শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলছিল ট্রেনটি। বিপুল ক্ষতি স্বীকার করে এতদিন ধরে ট্রেনটি বয়ে নিয়ে চলছিল রেল। এবার ফুলস্টপ পড়ল। অকাল মৃত্যু হল ভারতের প্রথম এসি ডবল ডেকারের।

 

 

.