ইসরো কাণ্ডে অভিযুক্ত বিজ্ঞানীদের সাফাই শুনবে কেন্দ্র

প্রবল বিতর্কের মুখে সাত বছর আগের `এস স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি`র তদন্ত প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী জানিয়েছেন, প্রাক্তন ইসরো চেয়ারম্যান জি মাধবন নায়ার-সহ এস স্পেকট্রাম কাণ্ডের তদন্তে দোষী সাব্যস্ত চার মহাকাশ বিজ্ঞানীর আত্মপক্ষ সমর্থনের যুক্তি শুনবে কেন্দ্র।

Updated By: Jan 30, 2012, 04:42 PM IST

প্রবল বিতর্কের মুখে সাত বছর আগের `এস স্পেকট্রাম কেলেঙ্কারি`র তদন্ত প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী জানিয়েছেন, প্রাক্তন ইসরো চেয়ারম্যান জি মাধবন নায়ার-সহ এস স্পেকট্রাম কাণ্ডের তদন্তে দোষী সাব্যস্ত চার মহাকাশ বিজ্ঞানীর আত্মপক্ষ সমর্থনের যুক্তি শুনবে কেন্দ্র।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা `ইসরো`-র বাণিজ্যক শাখা `অন্তরীক্ষ`-এর বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে বিধি ভেঙে দেভাস নামে একটি বাণিজ্যিক সংস্থাকে মাত্র ১০০০ কোটি টাকায় ৭০ মেগা হার্ত্‍জ স্পেকট্রাম বণ্টনের অভিযোগ ওঠে। গত বছরের থ্রি-জি স্পেকট্রাম বিক্রির হিসেব অনুযায়ী (১৫ মেগাহার্ত্‍জ এর দাম ৬৭,৭১৯ কোটি) যার বাজারমূল্য হওয়া উচিত ছিল অন্তত ৩ লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা।

পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর প্রবল রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়ে দেভাস-এর সঙ্গে স্পেকট্রাম ডিল বাতিল করে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের অধীনস্থ সংস্থা ইসরো। সেই সঙ্গে পুরো ঘটনার জন্য ইসরো`র তত্‍কালীন চেয়ারম্যান জি মাধবন নায়ার, বিজ্ঞানসচিব কে ভাস্করনারায়ণ, অন্তরীক্ষ-এর প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর কে আর সিদ্ধার্থমূর্তি এবং ইসরো স্যাটেলাইট সেন্টার-এর প্রাক্তন ডিরেক্টর কে এন শঙ্করের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল ওঠে। অভিযোগ, মহাকাশ মন্ত্রকের প্রাক্তন সচিব তথা দেভাস কর্তা কে এম চন্দ্রশেখরের সঙ্গে ব্যক্তিগত সখ্যের কারণেই নিয়ম বহির্ভূত `এস স্পেকট্রাম` চুক্তি কার্যকর করার ক্ষেত্রে উদ্যোগী হয়েছিলেন মাধবন নায়ার।
`এস স্পেকট্রাম` চুক্তি সংক্রান্ত দুর্নীতির বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং গত বছরের মে মাসে প্রাক্তন সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশনার প্রত্যুষ সিংহের নেতৃত্বে একটি ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সেই কমিটির সুপারিশ মেনে মাধবন নায়ার-সহ অভিযুক্ত বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয় কেন্দ্র। অভিযুক্ত প্রাক্তন ইসরো কর্তারা কোনও অবস্থাতেই সরকারি কোনও পদে থাকতে পারবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সরকারের তরফে।

আর গোল বাধে এখানেই! তাঁর বিরুদ্ধে সরকারি পদপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ জি মাধবন নায়ার সরাসরি চক্রান্ত করার অভিযোগ আনেন ইসরো`র বর্তমান ডিরেক্টর কে রাধাকৃষ্ণনের বিরুদ্ধে। প্রথিতযশা মহাকাশ বিজ্ঞানী মাধবনের দাবি, কিছু ব্যক্তিগত কারণেই `এস স্পেকট্রাম` চুক্তি সংক্রান্ত দুর্নীতিতে তাঁকে দোষী প্রমাণিত করার জন্য তদন্ত কমিটিকে প্রভাবিত করেছেন রাধাকৃষ্ণন। মিশন চন্দ্রযান প্রকল্পের রূপকারের আক্ষেপ, উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই তাঁকে দোষী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অথচ এস ব্র্যান্ড স্পেকট্রাম-এর জন্য দেভাসের পাশাপাশি আরও তিনটি সংস্থার নাম সুপারিশ করেছিলেন তিনি।
কেন্দ্রীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের বিজ্ঞানী মহলের একাংশে যথেষ্ট উষ্মা তৈরি হয়। এমনকী প্রধানমন্ত্রীর বৈজ্ঞানীক উপদেষ্টা পরিষদের প্রধান সি এন আর রাও-ও যে পদ্ধতিতে চার বরিষ্ঠ বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে সরকারি পদ গ্রহণের ব্যাপারে উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, তার যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এই পরিস্থিতিতে নতুন করে মাধবন নায়ারদের সাফাই শোনার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তকে চাপের মুখে পশ্চাদপসরণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

.