পঞ্জাব, উত্তরাখণ্ডে শেষ হল ভোটগ্রহণ
কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া পঞ্জাব এবং উত্তরাখণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ মোটের ওপর শান্তিপুর্ণভাবেই শেষ হল।
কয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া পঞ্জাব এবং উত্তরাখণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ মোটের ওপর শান্তিপুর্ণভাবেই শেষ হল। সকালের দিকে দুই রাজ্যেই ভোটারদের মধ্যে উত্সাহ ছিল কম। ফলে ভোটগ্রহণের হার ছিল সামান্য। তবে দুপুরের পর বিভিন্ন বুথে ভিড় করতে শুরু করেন ভোটাররা। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, পঞ্জাবে ভোট পড়েছে ৬৫ শতাংশ। বিকেল ৫টা পর্যন্ত উত্তরাখন্ডে ৬৫ শতাংশ ভোট পড়েছে।
কংগ্রেসের 'পরিবর্তনের ডাক' আর এনডিএ জোটের তরফে 'স্থিতিশীলতা বজায় রাখার আর্জি'! জাতীয় রাজনীতির থেকে বদলে যাওয়া এই প্রেক্ষাপটের মধ্যেই সোমবার সকাল ৮টা থেকে শুরু হল পঞ্জাব ও উত্তরাখণ্ড বিধানসভার নির্বাচন পর্ব।
জোটশরিক শিরোমণি অকালি দলকে সঙ্গী করে বিগত ৫ বছর পঞ্চনদের তীরের তখতে রয়েছে বিজেপি। উত্তরাখণ্ডে রয়েছে একক শক্তিতে। যদিও প্রাক নির্বাচনী সমীক্ষাগুলির পূর্বাভাস, পঞ্জাবে এবার ক্ষমতার পরিবর্তন প্রায় নিশ্চিত। অন্য দিকে উত্তরাখণ্ডেও ক্ষমতাসীন পদ্ম শিবিরের সঙ্গে 'কাঁটে কা টক্কর' দিচ্ছে কংগ্রেস।
১১৭ আসন বিশিষ্ট পঞ্জাব বিধানসভায় প্রবেশাধিকার পাওয়ার দৌড়ে রয়েছেন ১০৭৮ জন প্রার্থী। ২৯,৮৪১টি পোলিং বুথে মোট ভোটদাতার সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৭৬ লাখ। বব্বর খালসা-সহ কয়েকটি জঙ্গিগোষ্ঠীর নাশকতার আশঙ্কায় রাজ্য পুলিসের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনীর ২০০টি কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে। রয়েছে, কড়া গোয়েন্দা নজরদারির ব্যবস্থা। এবারের বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস একক শক্তিতে সবক'টি আসনে লড়ছে। জোট বেঁধে শিরোমণি অকালি দল ৯৪ এবং বিজেপি ২৩টি আসনে প্রার্থী দিয়েছে।
তবে এবারের পঞ্জাব বিধানসভা ভোটে আকর্ষণের নয়া কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে নবগঠিত 'সাঞ্ঝা মোর্চা'। ভোটের মুখে মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ সিং বাদলের সঙ্গে মতপার্থক্যের জেরে শিরোমণি অকালি দল ছেড়ে পিপলস পার্টি অফ পঞ্জাব গঠন করেছেন তাঁরই ভাইপো মনপ্রীত বাদল। বাদল মন্ত্রিসভায় অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা মনপ্রীত এবার সিপিআইএম, সিপিআই এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সুরজিত্ সিং বার্নালার শিরোমণি অকালি দল (লঙ্গোয়াল)-এর সঙ্গে সমঝোতা করে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। ভোটারদের সহানুভূতি পাওয়ার লক্ষ্যে মরিয়া প্রকাশ সিং বাদল ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, এটাই তাঁর শেষ নির্বাচন। কিন্তু অকালি দল সুপ্রিমোর এই কৌশল ভোটের ময়দানে তেমন কাজে আসবে না বলেই রাজনৈতিক পর্যবক্ষকদের ধারণা।
৭০ আসনের উত্তরাখণ্ড বিধানসভা ভোটে ক্ষমতাসীন বিজেপি'র সবচেয়ে বড় সমস্যা অন্তর্দ্বন্দ্ব। ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে রাজ্যের ৫টি কেন্দ্রের সব ক'টিতেই জয়ী হয় কংগ্রেস। এর পরই প্রশাসনিক ব্যর্থতার অভিযোগে ভুবনচন্দ্র খান্ডুরিকে সরিয়ে রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্কের হাতে দেরদুন সচিবালয়ের ভার তুলে দেয় ১১ অশোক রোডের নীতি নির্ধারকরা। কিন্তু রমেশের বিরুদ্ধে বেশ কয়েক'টি দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ফের খান্ডুরিকে মুখ্যমন্ত্রী পদে ফিরিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছেন নীতিন গডকড়ি। মিডিয়ার খবর, ক্ষুব্ধ রমেশ তলেতলে কংগ্রেসের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। হপ্তাখানেক আগে দেরাদুনের একটি হোটেলে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরিশ রাওয়াতের সঙ্গে রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্কের গোপন বৈঠকের খবর ফাঁস হওয়ায় রাজনৈতিক ভাবে কিছুটা বিপাকে পড়েছে বিজেপি। এই পরিস্থিতির মধ্যেই আজ রাজ্যেই ৯,৮০৬টি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করবেন প্রায় ৬৩ লক্ষ ভোটদাতা। নির্ধারিত হবে ৭৮৮ জন প্রার্থীর ভাগ্য।