রসগোল্লা কার? যুক্তি তর্কে বাংলা বনাম ওড়িশা

রসগোল্লা কার? এই নিয়েই জোর কাজিয়া শুরু হয়েছে বাংলা আর ওড়িশার মধ্যে। যুক্তি পাল্টা যুক্তির লড়াই। দেড়শ পাতার বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট নিয়ে রসগোল্লার ভৌগলিক পরিচিতির জন্য জোর সওয়াল শুরু করেছে ওড়িশা।

Updated By: Jul 15, 2016, 05:25 PM IST
রসগোল্লা কার? যুক্তি তর্কে বাংলা বনাম ওড়িশা

ওয়েব ডেস্ক : রসগোল্লা কার? এই নিয়েই জোর কাজিয়া শুরু হয়েছে বাংলা আর ওড়িশার মধ্যে। যুক্তি পাল্টা যুক্তির লড়াই। দেড়শ পাতার বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট নিয়ে রসগোল্লার ভৌগলিক পরিচিতির জন্য জোর সওয়াল শুরু করেছে ওড়িশা।

রসগোল্লা... রসিক মাত্রেই জানেন, এর রস মাহাত্ম্য। তবে এবার জোর লড়াই এই রসগোল্লাকের নিয়েই। বাঙলায় চিরন্তন এই মিষ্টির জন্ম নয়। বরং তা ওড়িশায়! দীর্ঘদিন ধরেই এমন দাবি করছে চলেছে ওড়িশা সরকার। এবার রীতিমতো তথ্য প্রমাণ জোগাড় করে কোমর বেঁধে আসরে নেমেছে তাঁরা। কিন্তু কী সেই যুক্তি যা গলার জোর বাড়াচ্ছে ওড়িশার?

ওড়িশার রস-যুক্তি-

ওড়িশার এই দাবির উত্‍‍সে রয়েছে পুরীর মন্দিরের এক প্রাচীন প্রথা। রথযাত্রার শেষে মন্দিরে ফেরার পর বৌয়ের মানভঞ্জনে জগন্নাথ দেবের পাসওয়ার্ড ছিল এই রসগোল্লাই।

তাঁদের দাবি ভূবনেশ্বরের কাছে পাহালে জন্ম রসগোল্লার। পুরীধামের ক্ষীরমোহন নামে এক মিষ্টি থেকেই রসগোল্লার উত্‍পত্তি। গত বছরই এই দাবি নিয়ে সোচ্চার হয় ওড়িশা সরকার। তবে তেমন প্রমাণ ছিল না তাঁদের হাতে। রসগোল্লার উত্‍‍সের সন্ধানে বিশেষজ্ঞ অসিত মহান্তির নেতৃত্বে কমিটি গড়ে ওড়িশা সরকার। ১৫০ পাতার রিপোর্ট দিয়ে সেই কমিটি। কমিটির দাবি, ষোড়শ শতাব্দীতে রলরাম দাসের দান্ডি রামায়ণে রয়েছে রসগোল্লার উল্লেখ। ৬০০ বছর ধরে জগন্নাথ দেবের ভোগে রসগোল্লা দেওয়া হচ্ছে। চৈতন্যদেবের হাত ধরে পুরীতে রসগোল্লা গিয়েছিল এমনটা মানতে নারাজ কমিটি। আর এই রিপোর্ট নিয়েই রসগোল্লার ভৌগোলিক পরিচিতির জন্য কেন্দ্রের কাছে সওয়াল করতে চলেছে ওড়িশা।

তবে, এ লড়াইয়ে পিছিয়ে নেই বাংলাও। রসগোল্লা আর কলকাতা যেন সমার্থক। সেই ১৮৬৮তে বাগবাজারের নবীন দাস তৈরি করেন ধবধবে সাদা স্পঞ্জ রসগোল্লা। প্রায় দেড়শ বছর পর সেই গৌরব ওড়িশা ছিনিয়ে নিতে চাইলে বাঙালিই বা মানবে কেন?

বাঙালির রস-যুক্তি-

সপ্তদশ শতাব্দীর আগে এদেশে ছানার ব্যবহার ছিল না বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের। পর্তুগিজদের থেকেই সন্দেশ, রসগোল্লার উপযুক্ত ছানা তৈরির কায়েদা রপ্ত করে বাঙালি। বাংলার বাইরে দুধকে ছিন্ন করে তৈরি ছানা দেবভোগ্য বলে মনে করা হত না। শ্রী চৈতন্য চরিতামৃতে পুরীর মন্দিরের ভোগের তালিকাতেও এ মিষ্টির উল্লেখ ছিল না।

সব শেষে বাঙালির প্রশ্ন, পুরীর রসগোল্লা কি কলকাতার মতো সাদা ধবধবে? মুখে দিলেই মিলিয়ে যায়? এই ট্রেডমার্ক রসগোল্লাইকে নিয়েই পাল্টা ভৌগোলিক পরিচিতির দাবি বাংলার।

.