বেবি পাউডার বাড়াচ্ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি! আমেরিকায় ফৌজদারি তদন্তের মুখে জনসন অ্যান্ড জনসন

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক বার গুণমান পরীক্ষার মুখে ডাহা ফেল করেছে জনসন অ্যান্ড জনসন-এর বেবি পাউডার-সহ একাধিক পণ্য। এই দু’টি উপাদানই ক্যানসারের মতো মারণ ব্যাধির ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে।

Updated By: Jul 16, 2019, 03:14 PM IST
বেবি পাউডার বাড়াচ্ছে ক্যান্সারের ঝুঁকি! আমেরিকায় ফৌজদারি তদন্তের মুখে জনসন অ্যান্ড জনসন
...

নিজস্ব প্রতিবেদন: জয়পুরের ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবোরেটরি-এর পর এ বার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও বড়সড় ধাক্কা খেল ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’-এর ট্যালকম পাউডার। সংস্থার বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্ত শুরু হয়েছে আমেরিকায়।

মাস খানেক আগেই জয়পুরের ড্রাগ টেস্টিং ল্যাবোরেটরি-এর পরীক্ষায় সামনে আসে একটি চাঞ্চল্যকর তথ্য। ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’-এর বেবি শ্যাম্পু আর ট্যালকম পাউডারে এমন একাধিক বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছিল যা থেকে হতে পারে ক্যানসারের মতো ভয়ঙ্কর রোগ। ওই পরীক্ষায় জানা যায়, ফরম্যালডিহাইড-সহ বেশ কয়েকটি মারাত্মক ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশে রয়েছে ‘জনসন অ্যান্ড জনসন’-এর বেবি শ্যাম্পু আর ট্যালকম পাউডারে সঙ্গে। এর পরই দেশ জুড়ে জনসন বেবি প্রোডাক্টের বিক্রি বন্ধ করার নির্দেশ দেয় ‘ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অব চাইল্ড রাইটস’ (NCPCR)। যদিও পরে দ্বিতীয় দফার পরীক্ষায় গুণমানের ক্ষেত্রে ছাড়পত্র পেয়ে যায় জনসন অ্যান্ড জনসন। জনসন অ্যান্ড জনসন-এর বেবি শ্যাম্পু পরীক্ষার পর সেটিকে ‘নিরাপদ’ বলে ছাড়পত্র দেয় রাজস্থান সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতর।

২০১৯-এর গোড়ার দিকে ক্যালিফোর্নিয়ায় সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেন এক মহিলা। মামলাকারীর অভিযোগ, জনসন অ্যান্ড জনসন সংস্থার বেবি পাউডার ব্যবহার করেই মেসোথ্যালমিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। মামলাকারীর অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হওয়ায় ওই মহিলাকে ভারতীয় মূদ্রায় প্রায় ১৯৯ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার সুপিরিয়ার কোর্ট। শুধু এই মামলাই নয়, ক্যালিফোর্নিয়াতে এ পর্যন্ত ১৩০০০-এরও বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন-এর বিরুদ্ধে। আমেরিকা ছাড়া বিশ্বের অন্যান্য দেশেও সংস্থার বিরুদ্ধে হাজার হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক বার গুণমান পরীক্ষার মুখে ডাঁহা ফেল করেছে জনসন অ্যান্ড জনসন-এর বেবি পাউডার-সহ একাধিক পণ্য। বার বার জনসনের বেবি পাউডারে অ্যাসবেস্টাসের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিকের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে।

আরও পড়ুন: গোটা দেশে নিষিদ্ধ হল জনসন অ্যান্ড জনসন বেবি শ্যাম্পু ব্যবহার

জনসন অ্যান্ড জনসন-এর বেবি পাউডার, শ্যাম্পুতে যে দু’টি রাসায়নিকের উপস্থিতি সবচেয়ে বেশি সে দু’টি হল ফরম্যালডিহাইড ও অ্যাসবেস্টাস। এর মধ্যে প্লাইউড, ফাইবার বোর্ড, নানা রকম আঠা তৈরিতে ব্যবহৃত ফরম্যালডিহাইড হল এক রকম বর্ণহীন, ঝাঁঝালো রাসায়নিক। আর অ্যাসবেস্টাস হল এক ধরনের খনিজ পদার্থ যার উচ্চ তাপ শোষণের ক্ষমতা রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দু’টি উপাদানই ক্যানসারের মতো মারণ ব্যাধির ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিতে পারে। যদিও জনসন অ্যান্ড জনসন কর্তৃপক্ষ তাদের পণ্য থেকে ক্যান্সারের ঝুঁকির আশঙ্কা উড়িয়ে এগুলিকে নিরাপদ বলেই দাবি করেছে। একই সঙ্গে সংস্থার বিভিন্ন পণ্যের গুণমান নিয়ে ওঠা অভিযোগের ভিত্তিতে যে মামলাগুলি চলছে, সেগুলিতেও যথাযথ সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন।

.