ভারতের প্রথম মারুতি গাড়ি এখন শুধুই মোর্চে ধরা লোহা

Updated By: Apr 19, 2015, 11:29 PM IST
ভারতের প্রথম মারুতি গাড়ি এখন শুধুই মোর্চে ধরা লোহা

ওয়েব ডেস্ক: একদিন অধীর অপেক্ষায় তার আত্মপ্রকাশের দিন গুনছে তামাম ভারতবাসী। সবাইকে পিছনে ফেলে প্রথম  চাবি হাতে পেয়ে গর্বিত হয়েছিলেন তার মালিক। সে-ই আজ অনাদরে পড়ে  নয়াদিল্লির এক অখ্যাত বাড়ির তালাবন্ধ দরজার বাইরে। ভারতে তৈরি প্রথম মারুতি এইট হান্ড্রেড।

একসময় ভারতের রাস্তায় দেখা মিলত শুধুই অ্যাম্বাসাডরের। একাধিপত্যের সেই ছবি বদলের শুরু উনিশশো তিরাশি সালে। সেবছরই কারখানা থেকে বেরোয় ভারতের প্রথম জনগণের গাড়ি মারুতি এইট হান্ড্রেড। লাকি ড্রয়ের মাধ্যমে দেশের প্রথম মারুতি গাড়িটির মালিক হয়েছিলেন নয়াদিল্লির বাসিন্দা হরপাল সিং। তত্‍কালীন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং ইন্দিরা গান্ধী হরপালের হাতে তুলে দিয়েছিলেন সেই গাড়ির চাবি। হরপাল সিংয়ের তখন গর্বে মাটিতে পা পড়ে না। গাড়ির দৌলতে রাতারাতি স্টার বনে গিয়েছিলেন তিনি। স্ত্রী গুলশনবীরের সঙ্গে যখন রাস্তায় বেরোতেন হরপালের গাড়ির দিকে চেয়ে থাকতেন পথচারীরা। কেননা অ্যাম্বাসাডর দেখতে অভ্যস্ত ভারতবাসীর কাছে মারুতির নয়া মডেল তখন ছিল একঝলক নতুন হাওয়া। তারপর কেটে গেছে অনেকগুলো বছর। আজ ভারতের রাস্তায় ছুটে বেড়ায় নানা মডেলের ঝাঁ-চকচকে দেশি-বিদেশি গাড়ি। এক সময় ভারতীয় মধ্যবিত্তের নয়নের মণি মারুতি এইট হান্ড্রেড আজ সেকেলে। চাহিদা কমে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে এই মডেলের উত্পাদন। ইতিমধ্যে দুহাজার দশে প্রয়াত হয়েছেন হরপাল সিং। পরলোকে তার স্ত্রীও। আর নয়াদিল্লির অভিজাত গ্রিন পার্কে তাঁদের তালাবন্ধ বাড়ির বাইরে একাকী পড়ে আছে আদরের মারুতি এইট হান্ড্রেড। অনাদরে গায়ে জং, গতিহীন চাকা। স্টিয়ারিং হুইলে আজ আর কারোর হাত পড়ে না। হরপালের মেয়ে গোবিন্দর পাল কাউরের চোখে আজও ভাসে ভারতের প্রথম মারুতি গাড়ির মালিক হওয়ার সেই রঙিন দিনগুলোর কথা।

গোবিন্দর পাল কাউরও চান না এভাবে ধ্বংসের পথে এগিয়ে যাক তাঁদের প্রিয় মারুতি এইট হান্ড্রেড। তাঁরা চান মারুতি সংস্থা ফিরিয়ে নিক গাড়িটি। যোগ্য মর্যাদায় সংরক্ষণ করুক তাকে। একচিলতে সেই আশার আলোর অপেক্ষাতেই এখন দিন গুনছে দেশের প্রথম মারুতি এইট হান্ড্রেড।

 

.